উদ্ভিদ দেহে ন্যাস্টিক চলন (Nastic movement in plants)
উদ্ভিদের স্থায়ী অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের তীব্রতা বা ব্যাপ্তি অনুসারে হয়, তখন তাকে ন্যাস্টিক চলন বা ব্যাপ্তি চলন বলে । যেমন পদ্মফুল তীব্র আলোতে ফোটে এবং কম আলোতে বুজে যায়, এছাড়া লজ্জাবতী লতা স্পর্শ করলে সঙ্গে সঙ্গে পত্রক গুলি বুজে যায় ।
ন্যাস্টিক চলনের প্রকারভেদ (Types of Nastic movement)
১৷ ফটোন্যাস্টি (Photonasty)
আলোর তীব্রতার প্রভাবে যে ন্যাস্টিক চলন হয়, তাকে ফটোন্যাস্টি চলন বলে । পদ্মফুল, সূর্যমুখী ফুল প্রভৃতি তীব্র আলোকে ফোটে আবার কম আলোকে মুদে যায় । তেঁতুল গাছের পত্রকগুলি কম আলোতে মুদে যায় । এগুলি এক রকম ফটোন্যাস্টি চলন ।
২৷ থার্মোন্যাস্টি (Thermonasty)
উষ্ণতার তীব্র প্রভাবে উদ্ভিদ অঙ্গের চলনকে থার্মোন্যাস্টি চলন বলে । টিউলিপ ফুল বেশি উষ্ণতায় ফোটে এবং কম উষ্ণতায় মুদে যায় ।
৩৷ নিকটিন্যাস্টি (Nyctinasty)
উদ্ভিদ অঙ্গের ন্যাস্টিক চলন যখন আলো ও উষ্ণতা, এই দুই এর প্রভাবে ঘটে, তখন তাকে নিকটিন্যাস্টি চলন বলে । কোনও কোনও শিম্বী গোত্রীয় উদ্ভিদের পত্রফলক প্রখর রোদ এবং বেশি উষ্ণতায় খুলে যায় এবং রাত্রে কম উষ্ণতায় বন্ধ হয়ে যায় ।
৪৷ কেমোন্যাস্টি (Chemo nasty)
কোনো রাসায়নিক পদার্থের তীব্রতায় সংঘটিত ন্যাস্টিক চলনকে কেমোন্যাস্টি বলে । সূর্যশিশির উদ্ভিদের পাতার রোম প্রোটিনের সংস্পর্শে আসা মাত্র পতঙ্গের দিকে বেঁকে যায় এবং পতঙ্গকে আবদ্ধ করে ।
৫৷ সিসমোন্যাস্টি (Seismo nasty)
স্পর্শ, ঘর্ষণ বা আঘাতের তীব্রতার ফলে যে ন্যাস্টিক চলন হয়, তাকে সিসমোন্যাস্টি চলন বলে । লজ্জাবতী লতার পাতার পাতা স্পর্শ করামাত্র পাতার পত্রকগুলি মুদে যায় বা নুয়ে পড়ে ।
*****
- 14908 views