মুসলিম লিগ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? স্যার সৈয়দ আহম্মদ খাঁ মুসলমানদের কংগ্রেসে যোগ না দিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন কেন ? মুসলিম লিগ কেন ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ পালন করে ?

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 01/16/2022 - 18:25

প্রশ্ন:-  মুসলিম লিগ কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ? স্যার সৈয়দ আহম্মদ খাঁ মুসলমানদের কংগ্রেসে যোগ না দিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন কেন ? মুসলিম লিগ কেন ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ পালন করে ?

১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে ডিসেম্বর মুসলিম লিগ প্রতিষ্ঠিত হয় ।

স্যার সৈয়দ আহম্মদ খাঁ মুসলিমদের কংগ্রেসে যোগ না দিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন কারণ —

(ক) স্যার সৈয়দ আহম্মদ খাঁ -র পূর্ব পুরুষরা মোগল যুগে পারস্য বা তুরাণ থেকে আসেন, এরা ছিলেন ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে ‘আশরফ’ বা ‘অভিজাত শ্রেণি’ । স্যার সৈয়দ আহম্মদ নিজের অভিজাত রক্তের জন্য গর্বিত ছিলেন । তিনি মনে করতেন, ভারতের শাসনব্যবস্থায় অভিজাত বংশীয় মুসলমানদের উচ্চপদ লাভের জন্মগত অধিকার আছে এবং একমাত্র তারাই ভারতের শাসকশ্রেণি হওয়ার যোগ্য ।

(খ) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস যখন গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ প্রচার করে, স্যার সৈয়দ আহম্মদ আশঙ্কা করেন যে, কংগ্রেসি আন্দোলনের ফলে মুসলিম অভিজাতরা ভারতের শাসনব্যবস্থায় তাঁদের প্রাপ্য অধিকার হারাবেন । এই কারণেই তিনি কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকেই কংগ্রেসের বিরোধীতার পথ বেছে নিয়েছিলেন এবং মুসলিমদের কংগ্রেসে যোগ না দিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন ।

মুসলিম লিগ 'প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস' পালন করার কারণ :

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ই আগস্ট বড়লাট লর্ড ওয়াভেল জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি জওহরলাল নেহেরুকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস তাতে সন্মতি জানায় । এই ঘটনায় ক্রুদ্ধ ও উত্তেজিত হয়ে মুসলিম লিগ ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম’ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলে মুসলিম লিগের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ রূপে পালিত হয় । ওই দিন কলকাতায় ভয়াবহ দাঙ্গা হাঙ্গামা বাধে এবং সেখান থেকে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের আগুন ভারতের অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়ে ।

******

Comments

Related Items

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে ছাত্র আন্দোলন

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলন পর্বে ছাত্র আন্দোলন (Participation of Students in the anti-Partition Movement of Bengal):-

বাংলার মানুষদের ব্রিটিশ বিরোধিতাকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসক লর্ড কার্জন প্রশাসনিক অজুহাত দেখিয়ে ১৯০৫ খ্র

বিশ শতকের ভারতে ছাত্র আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

বিশ শতকের ভারতে ছাত্র আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (Students' Movements in Twentieth Century):-

বিশ শতকের ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনগুলির মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চারটি জাতীয় আন্দোলন হল—(i) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশি আন্দ

আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী

আজাদ হিন্দ ফৌজের নারীবাহিনী (Women's Wing of the Ajad Hind Fauj):-

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে রাসবিহারী বসু জাপানে গিয়ে সেখানে তিনি বিপ্লবীদের সংগঠিত করার চেষ্টায় ছিলেন । ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের

কল্পনা দত্ত (Kalpana Datta)

কল্পনা দত্ত (Kalpana Datta):-

বিশ শতকে ব্রিটিশ-বিরোধী বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে ওঠে । সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজ প্রথমদিকে পরোক্ষভাবে অংশ নিতে শুরু করলেও ব

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar)

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar):-

বিশ শতকে ব্রিটিশ-বিরোধী বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে ওঠে । সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজ প্রথমদিকে পরোক্ষভাবে অংশ নি