ভারত ছাড়ো আন্দোলনের গুরুত্ব (Importance of Quit India Movement) :
১৯৪২ সালের ৯ই আগষ্টের ভোর থেকেই ‘ভারত-ছাড়ো’ আন্দোলন শুরু হয়,
(১) প্রথম পর্যায়ে এই আন্দোলন কলকাতা, বোম্বাই, দিল্লী, নাগপুর, আমেদাবাদ, বরোদা, ঢাকা প্রভৃতি শহরে ছড়িয়ে পড়ে ।
(২) মিছিল, মিটিং, পিকেটিং ও হরতাল পালনের মধ্য দিয়ে ছাত্র, যুবক, মধ্যবিত্ত ও শ্রমিক শ্রেণি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে ।
(৩) অল্প সময়ের মধ্যেই ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে বিস্তার করলে জনতা সরকারি টেলিগ্রাফ, রেলপথ প্রভৃতি যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর প্রবল আক্রমণ শুরু করে । থানা, অফিস, আদালতের ওপর ক্রুদ্ধ জনতা চড়াও হয় ।
(৪) গ্রামাঞ্চলে এই আন্দোলন বেশি গভীরে প্রবেশ করেছিল । উত্তর প্রদেশ, বিহারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, মহারাষ্ট্রের সাতারা ও বাংলার মেদিনীপুর জেলায় আন্দোলন সর্বাত্মক আকার ধারণ করে । উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় একটি জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় । বিহারের কৃষক-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশ কনস্টেবলরাও চাকরি ছেড়ে আন্দোলনে যোগ দেয় ।
(৫) ভারত ছাড়ো আন্দোলন ব্যর্থ হলেও ভারতবাসী এই আন্দোলনের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জনের দৃঢ় সংকল্পের কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে সক্ষম হয় ।
(৬) ব্রিটিশ সরকার নেতৃত্ব বিহীন ভারতবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সংগ্রামে স্তম্ভিত হয়েছিল এবং উপলদ্ধি করেছিল ভারতবর্ষে তাদের সাম্রাজ্য শাসনের অবসানের আর বেশি দেরি নেই ।
(৭) প্রকৃতপক্ষে ১৯৪২ -এর ভারত ছাড়ো আন্দোলন ছিল ভারতবাসীর স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ পর্যায় । স্বাধীনতা সংগ্রাম যে জয়যুক্ত হবে সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ ছিল না ।
*****
- 13963 views