কংগ্রেসে সমাজতন্ত্রী দলের উদ্ভব কীভাবে হয় ? সুভাষচন্দ্র বসু জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন কেন ?

Submitted by administrator on Fri, 01/14/2022 - 08:18

প্রশ্ন:- কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলের উদ্ভব কীভাবে হয় ? সুভাষচন্দ্র বসু জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন কেন ?

কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলের উদ্ভবের কারণগুলির মধ্যে নিম্নলিখিত কারণগুলি উল্লেখ করা যেতে পারে— 

বিংশ শতকের তিরিশের দশকে জাতীয় কংগ্রেসে

(ক) রুশ বিপ্লবের প্রভাব এবং সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার প্রাধান্য,

(খ) শ্রমিক, কৃষক ও সাধারণ মানুষের দুঃখদুর্দশায় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের উদাসীনতা,

(গ) কমিউনিস্ট আন্দোলনের প্রভাব,

(ঘ) সমাজতন্ত্রের আদর্শে বিশ্বাসী সুভাষচন্দ্র বসু ও জহরলাল নেহেরুর প্রভাব প্রভৃতি কারণে কংগ্রেসের মধ্যে একটি বাম মনোভাবাপন্ন গোষ্ঠির আত্মপ্রকাশ ঘটে । এই সময় ১৯৩৯ সালের মে মাসে মহাত্মা গান্ধির মতাদর্শের বিরোধী ও সমাজতন্ত্রের আদর্শে বিশ্বাসী কংগ্রেসের কিছু যুবক সদস্যদের উদ্যোগে কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলের উদ্ভব হয় । কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলের কয়েকজন নেতা হলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ, আচার্য নরেন্দ্রদেব, রামমনোহর লোহিয়া, অচ্যুত পটবর্ধন, ইউসুফ মেহেরালি প্রভৃতি ।

১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের হরিপুরা অধিবেশনে গান্ধিজির সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বসুর মতপার্থক্য হয় । পরের বছর ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে জানুয়ারি মধ্যপ্রদেশের ত্রিপুরিতে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের অধিবেশনে কংগ্রেসের নবীন সম্প্রদায়ের অনুরোধে সুভাষচন্দ্র বসু দ্বিতীয়বার কংগ্রেস সভাপতির পদপ্রার্থী হন । এবার তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন গান্ধিজির মনোনীত এবং সমর্থিত পট্টভি সীতারামাইয়া । নির্বাচনে বিপুল ভোটাধিক্যে পট্টভি সীতারামাইয়াকে হারিয়ে সুভাষচন্দ্র বসু দ্বিতীয়বার কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন । ক্ষুব্ধ গান্ধিজি সদলবলে অধিবেশন ত্যাগ করেন । এরপর সুভাষচন্দ্র বসু গান্ধিজির ইচ্ছার বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল কংগ্রেস সভাপতি থাকা সমীচীন নয় বলে মনে করেন । তাই কংগ্রেসের স্বার্থে তিনি কংগ্রেসের সভাপতির পদ ত্যাগ করে কংগ্রেসের মধ্যেই তাঁর অনুগামীদের নিয়ে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ৩রা মে একটি দল গঠন করেন । এই নতুন দলের নাম দেন ফরোয়ার্ড ব্লক

*****

Comments

Related Items

জমিদার সভা (Landholders' Society)

জমিদার সভা (Landholders' Society) :-

উনিশ শতকের প্রথমভাগে ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে । এই সময়ে গড়ে উঠা রাজনৈতিক সংগঠনগুলির মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল 'জমিদার সভা' । ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্ণওয়ালিশ প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থেকে উদ্ভূত জমিদার

বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা

বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা (Bangabhasa Prakashika Sabha) :-

ঊনিশ শতকের মধ্যভাগে ভারতে যেসব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে সেগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত 'বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা' । ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে রেগুলেশন অ্যাক্ট প্রবর্তন করে ব্র

সভা সমিতির যুগ : বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ

সভা সমিতির যুগ : বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ :- (Age of Associations)

ঊনিশ শতকের প্রথম থেকে ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে একের পর এক আদিবাসী ও কৃষক আন্দোলন এবং মহাবিদ্রোহ সংঘটিত হতে থাকে । ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রসার ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবি

মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্র (১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ)

মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্র (১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ) (Queen's Proclamation) : ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জুন রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পলাশির যুদ্ধে পরাজিত করলে বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের সূচনা হয় । এই যুদ্ধের

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি (Characteristics of the Revolt of 1857) : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে মার্চ ব্যারাকপুর সেনা ছাউনিতে সিপাহি মঙ্গল পাণ্ডে প্রথম ব্রিটিশশক্তির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে এবং ক্রমে দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা ব্যক্তির