আজাদ হিন্দ ফৌজের লক্ষ্য কতদূর পরিপূর্ণ হয় ? আজদ হিন্দ ফৌজের বিচার ভারতীয় জনগণের ওপর কী প্রভাব বিস্তার করে ?

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 01/15/2022 - 20:30

প্রশ্ন:- আজাদ হিন্দ ফৌজের লক্ষ্য কতদূর পরিপূর্ণ হয় ? আজদ হিন্দ ফৌজের বিচার ভারতীয় জনগণের ওপর কী প্রভাব বিস্তার করে ?

আজাদ হিন্দ বাহিনী তার ঘোষিত লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হলেও ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে আজাদ হিন্দ বাহিনীর অভিযানের ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী ।

(১) আজাদ হিন্দ বাহিনীর সংগ্রামের তাৎক্ষণিক ফল হিসাবে ভারতীয় নৌ-সেনারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে;

(২) ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের নৌ-সেনাদের বিদ্রোহের পর, আজাদ হিন্দ সরকারের প্রধান হিসাবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুই ভারতবর্ষের স্বাধীনতার দাবিকে একটি আন্তর্জাতিক প্রশ্নে পরিণত করেন ।

(৩) আজাদ হিন্দ বাহিনীর বন্দি সেনাদের বিচারকে কেন্দ্র করে ১৯৪৫ সালের শেষের দিকে সারা ভারতে যে তুমুল উত্তেজনা ও ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের সৃষ্টি হয়, তা সরকার পক্ষকে ক্রমশ ভীতি ও সন্ত্রস্ত করে তোলে ।

তাই ঐতিহাসিক দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায়, নেতাজির আজাদ হিন্দ বাহিনী প্রকৃত পক্ষে ব্যর্থ হয় নি । ব্রিটিশ শক্তির ওপর চূড়ান্ত আঘাত হেনে তারা ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পথকে সুগম করে তুলেছিল ।

১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে দিল্লীর লালকেল্লার প্রকাশ্য সামরিক আদালতে আজাদ হিন্দ ফৌজের বিচার ভারতীয় জনগণের ওপর ভয়ংকর প্রভাব বিস্তার করে । আজাদ হিন্দ ফৌজের বন্দি আধিকারিকদের বিচারে যে সিদ্ধান্ত হয় তার প্রতিবাদে—

(১) দেশব্যাপী গণবিক্ষোভ ও ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় ।

(২) ভারতের নানা স্থানে বিশেষত কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী শিল্পাঞ্চলে ব্যাপক ধর্মঘট ডাকা হয় ।

(৩) আজাদ হিন্দ বাহিনীর বন্দি সেনাদের বিচারকে কেন্দ্র করে সারা ভারতে যে প্রবল গণবিক্ষোভ ও গণ-উন্মাদনা দেখা দিয়েছিল তার ফলে ব্রিটিশ শাসকদের মধ্যে প্রবল ভীতির সঞ্চার হয় । এই প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ফিলিপ ম্যাস্‌ন বলেছেন, ‘এই ঐতিহাসিক বিচার ভারতে ব্রিটিশ শাসনের মৃত্যু ঘন্টা বাজিয়ে দেয় ।'

*****

Comments

Related Items

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা:-

মাধ্যমিকের নমুনা প্রশ্ন :-

১.  'বামাবোধিনী' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন—          [মাধ্যমিক- ২০১৭]

ভাষার ভিত্তিতে ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের উদ্যোগ ও বিতর্ক

ভাষার ভিত্তিতে ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের উদ্যোগ ও বিতর্ক (Initiatives Undertaken and Controversies Related to Linguistic Reorganization of States):-

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে । স্বাধীনতা লাভের পর ন

আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় দেশভাগ

আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথায় দেশভাগ :-

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুযায়ী ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে এবং ভারত ও পাকিস্তান নাম দুটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয় । মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চ

১৯৪৭-পরবর্তী উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ ও বিতর্ক

১৯৪৭-পরবর্তী উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ ও বিতর্ক (Initiative Undertaken and Controversies Related to the Refugee Problem in Post-1947 India) :-

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুসারে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব

কাশ্মীর রাজ্যের ভারত অন্তর্ভুক্তি

কাশ্মীর রাজ্যের ভারত অন্তর্ভুক্তি (Annexation of Kashmir):-

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের 'ভারতের স্বাধীনতা আইন' অনুসারে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট অবিভক্ত ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে এবং ভারত ও পাকিস্তান নামে দু