Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 01/14/2022 - 20:56

প্রশ্ন:-  অলিন্দ যুদ্ধ -র সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও ।

ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের মেডিকেলের ছাত্র বিপ্লবী বিনয়কৃষ্ণ বসু ১৯৩০ সালে বাংলা পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল লোম্যানকে গুলি করে হত্যা করে গ্রেপ্তারি এড়াবার জন্য ছদ্মবেশে কলকাতায় পালিয়ে আসেন । কলকাতায় এসে তিনি যুগান্তর দলের দুই বিপ্লবী বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্তের সঙ্গে মিলিত হন ।

(ক) ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৮ই ডিসেম্বর যুগান্তর দলের সদস্য বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত ছদ্মবেশে কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং-এ প্রবেশ করেন । তাঁরা দোতালায় উঠে গিয়ে কারা বিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল সিম্পসনকে হত্যা করেন ও আর একজন ইংরেজ কর্মচারী আহত হন ।

(খ) এরপর তিন জন একটি ছোট্ট ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করে বন্দেমাতারম ধ্বনি দিতে দিতে পূর্বদিকের বারান্দায় ছুটে যান । এই সময় রাইটার্স বিল্ডিং -এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের খন্ড যুদ্ধ শুরু হয় ।

(গ) ইতিমধ্যে লালবাজারের পুলিশ কমিশনার চালর্স টেগার্ট বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে তাঁদের ঘিরে ফেলেন । এরপর রাইটার্স বিল্ডিংস -এর অলিন্দে তিন তরুণের সঙ্গে ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনীর গুলির লড়াই শুরু হয়, যা ইতিহাসে ‘অলিন্দ যুদ্ধ’ নামে খ্যাত ।

(ঘ) শেষ পর্যন্ত বিপ্লবীদের সমস্ত গুলি ফুরিয়ে গেলে পালানো অসম্ভব বিবেচনা করে তিন জনই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন । বাদল গুপ্তের সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু হয়, কয়েকদিন পর হাসপাতালে বিনয় বসু মারা যান এবং দীনেশ গুপ্ত আরোগ্য লাভ করলেও পরে মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত হন ।

*****

Comments

Related Items

সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ)

সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (Sanyasi-Fakir Rebellion):- ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন ও শোষনের বিরুদ্ধে অবিভক্ত বাংলার ঢাকায় ১৭৬৩ থেকে ১৮০০  খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত 'গিরি' ও 'দাশনামী' সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসী ও 'মাদারী' সম্প্রদায়ভুক্ত ফকিরদের নেতৃত্বে যে কৃষকবিদ্রোহ

পাগলপন্থী বিদ্রোহ (প্রথম পর্ব ১৮২৫ - ২৭ খ্রিস্টাব্দে)

পাগলপন্থী বিদ্রোহ (Pagal Panthi Revolt) : ঊনিশ শতকে বাংলায় যেসব কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল সেগুলির মধ্যে 'পাগলপন্থী' বিদ্রোহ বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল । ঔপনিবেশিক শাসনকালে অবিভক্ত বাংলায় ময়মনসিং জেলার শেরপুর পরগনার পাহাড়ি এলাকায় গারো ও

মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে)

মুন্ডা বিদ্রোহ (Munda Rebellion):- বর্তমান ঝাড়খন্ড রাজ্যের রাঁচিসহ ছোটোনাগপুর অঞ্চলে এবং তৎসংলগ্ন মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা ও বাংলার একাংশে মুন্ডা উপজাতিরা বসবাস করত । ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে রাঁচিতে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায় বিরসা মুন্ডার নেতৃ

সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দ)

সাঁওতাল বিদ্রোহ (Santhal rebellion) : ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে যে সমস্ত আদিবাসী বিদ্রোহগুলি ঘটেছিল সেগুলির মধ্যে 'সাঁওতাল বিদ্রোহ' বা 'সাঁওতাল হুল' সবথেকে ভয়াবহ ও জঙ্গি ছিল । সাঁওতালি ভাষায় বিদ্রোহকে হুল বলা হয় । সাঁওতালগণ

কোল বিদ্রোহ (১৮৩১ -৩২ খ্রিস্টাব্দ)

কোল বিদ্রোহ (Kol Rebellion) : উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যেসব আদিবাসী বিদ্রোহ ঘটে, তাদের মধ্যে কোল বিদ্রোহ ছিল অন্যতম । বিহারের ছোটনাগপুর, সিংভূম, মানভূম প্রভৃতি অঞ্চলে ব্রিটিশ শাসনকালে কোল উপজাতি গোষ্ঠী বসবাস করত । কোল উপজাতি গোষ্