মজঃফরপুর মামলা (Muzzafarpur Case)

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 04/23/2012 - 10:42

মজঃফরপুর মামলা (Muzzafarpur Case)

আলিপুর আদালত প্রাঙ্গনে বন্দেমাতরম ধ্বনি উচ্চারণ করার অপরাধে কলকাতার প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ড সুশীল সেন নামক ১৬ বছরের এক কিশোরকে প্রকাশ্য স্থানে বেত মারার আদেশ দেন । এই শাস্তির বদলা নিতে ও এই সময় বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দমনমূলক কার্যকলাপের জন্য যুগান্তর দল কলকাতার চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট অত্যাচারী কিংসফোর্ডকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় । বিংশ শতকের প্রথম ভাগের বিপ্লবী আন্দোলনে ক্ষুদিরাম বসু যুগান্তর দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন । ইতিমধ্যে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নিরাপত্তার কারণে কিংসফোর্ডকে বিহারের মজঃফরপুরে বদলি করা হয় । সেখানে তাঁকে হত্যার দায়িত্ব পড়ে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর ওপর । ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী যুগান্তর গোষ্ঠীর নির্দেশে অত্যাচারী কিংসফোর্ডকে হত্যা করার জন্য মজঃফরপুরে প্ল্যান্টার্স নামে এক নাইট ক্লাবের কাছে আশ্রয় নেন । ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে এপ্রিল ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী রাতের অন্ধকারে কিংসফোর্ডের গাড়ি ভেবে ভুল করে ঘোড়ার গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করে নিরপরাধ কেনেডি সাহেবের নিরীহ স্ত্রী মিসেস কেনেডি ও তাঁর কন্যাকে হত্যা করেন । অত্যাচারী কিংসফোর্ডকে হত্যার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় । এই ঘটনার পর প্রফুল্ল চাকী ধরা পড়ার ভয়ে আত্মহত্যা করেন । ক্ষুদিরাম বসু হত্যাকান্ডের স্থল থেকে ২৫ মাইল দূরে ওয়েইনি স্টেশনে ধরা পড়েন । কয়েক মাস বিচারের পর মজঃফরপুর জেলেই ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ই আগস্ট ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৪ নং ধারা অনুসারে ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি হয় । অগ্নিযুগের প্রথম শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর নির্ভীক দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ বাংলার যুবসমাজকে বিপ্লবী মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করেছিল । এই নির্ভীক দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের জন্য ক্ষুদিরাম বসুর অবদান আজও চিরস্মরণীয় ।

*****

Related Items

ভারতসভা (Indian Association)

ভারতসভা (Indian Association) :-

ঊনিশ শতকে ভারতে যেসব রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে সেগুলির মধ্যে 'ভারতসভা' বা 'Indian Association' বিশেষ উল্লেখযোগ্য । ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জুলাই কলকাতার অ্যালবার্ট হলে (বর্তমানে কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসে) সুরেন্দ্রন

জমিদার সভা (Landholders' Society)

জমিদার সভা (Landholders' Society) :-

উনিশ শতকের প্রথমভাগে ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে । এই সময়ে গড়ে উঠা রাজনৈতিক সংগঠনগুলির মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল 'জমিদার সভা' । ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্ণওয়ালিশ প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত থেকে উদ্ভূত জমিদার

বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা

বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা (Bangabhasa Prakashika Sabha) :-

ঊনিশ শতকের মধ্যভাগে ভারতে যেসব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে সেগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত 'বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা' । ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে রেগুলেশন অ্যাক্ট প্রবর্তন করে ব্র

সভা সমিতির যুগ : বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ

সভা সমিতির যুগ : বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ :- (Age of Associations)

ঊনিশ শতকের প্রথম থেকে ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে একের পর এক আদিবাসী ও কৃষক আন্দোলন এবং মহাবিদ্রোহ সংঘটিত হতে থাকে । ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রসার ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবি

মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্র (১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ)

মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্র (১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ) (Queen's Proclamation) : ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জুন রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পলাশির যুদ্ধে পরাজিত করলে বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের সূচনা হয় । এই যুদ্ধের