পুষ্টি, বিপাক ও পরিপাক

Submitted by arpita pramanik on Mon, 04/25/2011 - 14:47

পুষ্টি, বিপাক ও পরিপাক (Nutrition, Digestion and Metabolism)

খাদ্যের পরিপাক পদ্ধতিঃ

আমরা প্রত্যহ ভাত, চিঁড়ে, মুড়ি, রুটি ইত্যাদি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য গ্রহন করি। এই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য পৌষ্টিক নালীর বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্ন উৎসেচকের দ্বারা কি ভাবে পাচিত হয় তা ছকের সাহায্যে দেখানো হল।

মুখবিবরঃ   খাদ্য প্রথমে মুখবিবরে লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত টায়ালিনের মাধ্যমে শ্বেতসার মলটোজে ও মলটেজের মাধ্যমে মলটোজ গ্লুকোজে পরিনত হয়। এর পর খাদ্য গ্রাসনালীতে আসে।

গ্রাসনালীর পরিপাকঃ   গ্রাসনালীতে খাদ্যের কোনো পরিপাক হয় না। এর পর খাদ্য পাকস্থলীতে প্রবেশ করে।

পাকস্থলীর পরিপাকঃ   পাকস্থলীতে অক্সিনটিক গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত HCl খাদ্যকে আম্লিক করে। এর পর খাদ্য ডিওডেনামে আসে।

ডিওডেনামের পরিপাকঃ   খাদ্য বস্তু ডিওডেনামে প্রবেশ করে অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত অ্যামাইলেজ শ্বেতসারকে মলটোজে ও মলটোজকে মলটেজ ও গ্লুকোজে পরিনত করে। এর পর খাদ্য ইলিয়ামে আসে।

ইলিয়ামে পরিপাকঃ   খাদ্য ইলিয়ামে প্রবেশ করে আন্ত্রিক গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত সুক্রেজ এর মাধ্যমে সুক্রোজ গ্লুকোজ+ফুকটোজ=ল্যাকটোজে পরিনত হয়। আন্ত্রিক গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত ল্যাকটেজের মাধ্যমে ল্যাকটোজ গ্লুকোজ ও গ্যালাকটোজে পরিনত হয়।

বৃহদন্তের পরিপাকঃ  শেষে অপাচ্য খাদ্য কণা বৃহদন্তে জমা হতে থাকে।

গ্লুকোজ ইলিয়ামের অন্তগ্রাত্রে অবস্থিত ভিলাই কর্তিক শোষিত হয়।

অবশেষে অপাচ্য খাদ্যাংশ বৃহদন্তে সাময়িকভাবে জমা থাকে।

 

পাঁচটি অধাতব মৌল উপাদানের নাম ও তাদের উৎস

অধাতব মৌলের নাম

উৎস

পুষ্টিতে ভূমিকা

 

 

 

কার্বন (C)

১৷ প্রধান উৎস বায়ুমণ্ডলের [tex]C{O_2}[/tex] । ৷

২৷ স্থলজ উদ্ভিদ প্রধানত পত্ররন্ধ্রের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল থেকে [tex]C{O_2}[/tex] গ্যাস শোষণ করে।

৩৷ জলজ উদ্ভিদ সমগ্র দেহতল দিয়ে জলে দ্রবীভূত [tex]C{O_2}[/tex] গ্রহণ করে।

কার্বন উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদনের জন্য এবং প্রোটোপ্লাজম গঠনের জন্য প্রয়োজন।

 

 

 

হাইড্রোজেন (H)

১৷ জল হাইড্রোজেনের প্রধান উৎস।

২৷ স্থলজ উদ্ভিদ মাটির কৈষিক জল মূলরোম দ্বারা শোষণ করে।

৩৷ জলজ উদ্ভিদ জলে দ্রবীভূত হাইড্রোজেন সমগ্র দেহতল দ্বারা শোষণ করে।

উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদনের জন্য এবং প্রোটোপ্লাজম গঠনের জন্য এই উপাদানের প্রয়োজন।

 

 

 

অক্সিজেন (O)

১৷ অক্সিজেনের প্রধান উৎস হল বায়ুমণ্ডল।

২৷ স্থলজ উদ্ভিদ বায়ু থেকে আণবিক অক্সিজেন গ্রহণ করে।

৩৷ জলজ উদ্ভিদ জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন গ্রহণ করে।

শ্বসন ক্রিয়ায় খাদ্যবস্তু জারণের জন্য এবং সালোকসংশ্লেষের সময় অঙ্গার আত্তীকরণের জন্য এই উপাদানের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া কোষের বিভিন্ন জৈব উপাদান গঠনের জন্যও এই উপাদানের প্রয়োজন হয়।

 

 

 

সালফার (S)

১৷ স্থলজ উদ্ভিদ মৃত্তিকা স্থিত সালফেট লবন মূলের সাহায্যে শোষণ করে।

২৷ জলজ উদ্ভিদ জলে দ্রবীভূত সালফেট লবন সমগ্র দেহতলের সাহায্য গ্রহণ করে।

উদ্ভিদের মূল অংশের বৃদ্ধিতে এবং দেহে শর্করা জাতীয় খাদ্য চলাচলে সহায়তা করে। সালফারের অভাবে কাণ্ড দুর্বল হয়।

 

 

ফসফরাস (P)

১৷ স্থলজ উদ্ভিদ মৃত্তিকা স্থিত ফসফেট লবন মূলের সাহায্যে গ্রহণ করে।

২৷ জলজ উদ্ভিদ জলে দ্রবীভূত ফসফেট লবন সমগ্র দেহতলের সাহায্য গ্রহণ করে।

শ্বসনে, কোষ বিভাজনে এবং নিউক্লিয়াস গঠনে এই উপাদান সহায়তা করে। ফসফরাসের অভাবে উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পাতা নীলাভ সবুজ বর্ণের হয়।

*****

Related Items

সালোকসংশ্লেষ (Photosynthesis)

যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিলযুক্ত কোষে আলোর উপস্থিতিতে পরিবেশ থেকে শোষিত জল ও গৃহিত কার্বন ডাই-অক্সাইডের আলোক রাসায়নিক ও জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সরল শর্করা (গ্লুকোজ) সংশ্লেষিত হয় ও উৎপন্ন খাদ্যে সৌরশক্তি স্থিতিশক্তি রূপে আবদ্ধ হয় এবং উপজাত বস্তু ..

মানুষের গমন পদ্ধতি

গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, মানুষের গমনে সহায়ক অস্থি সমূহ , মেরুদণ্ড, শ্রোণীচক্র, পায়ের অস্থি , ফ্লেক্সর পেশী, এক্সটেনসর পেশী, অ্যাডাকটর পেশী , মানুষের গমনে সহায়ক অস্থি সন্ধি সমূহ , মানুষের গমনে সহায়ক পেশী , দ্বিপদ গমন ক্রিয়া । ...

প্রাণীদের গমন

প্রাণীদের গমন , প্রাণীদের গমন অঙ্গ সম্পর্কে সাধারণ ধারণা - গমনের সময় প্রাণীরা কোনো না কোনো অঙ্গ বা অঙ্গাণু ব্যবহার করে। গমনে সাহায্যকারী অঙ্গকে গমন অঙ্গ বলে। মানুষের হাত ও পা , তিমির প্যাডেল , ব্যাঙের পা , পাখির ডানা , হাঁসের লিপ্ত পদ , শামুকের মাংসল পদ ...

মাছের গমন (Locomotion of Fish)

গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - মাছের সাতটি পাখনা আছে। একটি পৃষ্ঠপাখনা, একটি পায়ুপাখনা, একটি পুচ্ছপাখনা এবং একজোড়া করে বক্ষ ও শ্রোণী পাখনা। বক্ষপাখনার সাহায্যে মাছ জলের গভীরে যেতে পারে এবং শ্রোণীপাখনার সাহায্যে ...

মানব দেহে খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা

খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা জীব দেহের স্বাভাবিক পুষ্টির জন্য খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা আছে। জীব দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য খনিজ লবনের প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা অর্জনের জন্য খনিজ লবনের গ্রহনের প্রয়োজন আছ, সাতটি খনিজ লবনের নাম ও তাদের উৎস ।