পুষ্টি সম্পর্কিত কয়েকটি পার্থক্য

Submitted by arpita pramanik on Mon, 05/06/2013 - 11:06

পুষ্টি সম্পর্কিত কয়েকটি পার্থক্য

(1) স্বভোজী ও পরভোজী (Autotrophic and Heterotrophic)

বৈশিষ্ট্য

স্বভোজী

পরভোজী

১৷ স্বনির্ভরতা

১৷ স্বভোজী জীবেরা পুষ্টি বিষয়ে সনিরভর।

১৷ পরভোজী জীবেরা পুষ্টির বিষয়ে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে পরনির্ভর।

২৷ খাদ্য উপাদান সংগ্রহ

২৷ এরা পুষ্টির জন্য পরিবেশ থেকে তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় সরল অজৈব উপাদান সংগ্রহ করে।

২৷ এরা পুষ্টির জন্য কঠিন ও জটিল খাদ্যও গ্রহণ করতে পারে।

৩৷ নিজদেহে খাদ্য সংশ্লেষ

৩৷ পরিবেশ থেকে অজৈব উপাদান সংগ্রহ করে এরা নিজেদের দেহে খাদ্য সংশ্লেষ করে।

৩৷ এরা নিজেদের দেহে খাদ্য সংশ্লেষ করতে পারে না, তাই এদের পুষ্টির জন্য অন্য কোনো স্বভোজী জীব কিংবা মৃত জৈব বস্তুর অপর নির্ভর করতে হয়।

৪৷ ক্লোরোফিলের উপস্থিতি এবং সালোকসংশ্লেষ

৪৷ এরা সাধারণত ক্লোরোফিলের সাহায্যে ও সূর্যালোকের উপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য সংশ্লেষ করে।

৪৷ এদের দেহে ক্লোরোফিল না থাকায় এরা সালোকসংশ্লেষ করতে পারে না। তাই পুষ্টির জন্য সরাসরি সূর্যালোকের উপর নির্ভর করে না।

(2) মৃতজীবী, পরজীবী  ও মিথোজীবী (Saprophytes , Parasites and Symbiotic)

বৈশিষ্ট্য

মৃতজীবী

পরজীবী

মিথোজীবী

১৷ স্বনির্ভর

১৷ এরা পুষ্টির জন্য মৃত ও পচনশীল জৈব ও অজৈব পদার্থের ওপর নির্ভরশীল।

১৷ এরা পুষ্টির জন্য সজীব পোষকের ওপর নির্ভরশীল।

এই পুষ্টির জন্য সহাবস্থানকারী দুটি জীব পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল।

২৷ খাদ্য গ্রহণ

২৷ এরা মৃত অজৈব ও জৈব পদার্থ থেকে জটিল বা অর্ধ জটিল খাদ্যরস শোষণ করে।

২৷ এরা সজীব পোষক দেহ থেকে সরল খাদ্য শোষণ করে।

২৷ এক্ষেত্রে দুটি জীব পরস্পরের মাধ্যমে সরল খাদ্য শোষণ করে।

৩৷ ক্ষতিসাধন

৩৷ মৃতজিবীরা পোষকের কোনো ক্ষতি করে না, কারণ এক্ষেত্রে পোষক মৃত।

৩৷ এরা পোষকের ক্ষতি করে এবং নিজেরা উপকৃত হয়।

৩৷ এক্ষেত্রে উভয় জীবই উপকৃত হয়, সাধারণত কেউ কার ক্ষতি করে না।

৪৷ পুষ্টি প্রক্রিয়া

৪৷ এদের পুষ্টি প্রক্রিয়াকে মৃতজীবীয় পুষ্টি বলে।

৪৷ এদের পুষ্টি প্রক্রিয়াকে পরজীবীয় পুষ্টি বলে।

৪৷ এদের পুষ্টি প্রক্রিয়াকে মিথোজীবীয় পুষ্টি বলে।

(3) উপচিতি বিপাক ও অপচিতি বিপাক (Anabolism and Catabolism)

বৈশিষ্ট্য

উপচিতি বিপাক

অপচিতি বিপাক

১৷ প্রক্রিয়া

১৷ এটি গঠনমূলক প্রক্রিয়া

১৷ এটি ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়া

২৷ জটিল / সরল যৌগের সৃষ্টি

২৷ এই প্রক্রিয়ায় সরল যৌগ থেকে জটিল যৌগের সংশ্লেষ ঘটে

২৷ এই প্রক্রিয়ায় জটিল যৌগ ভেঙে অপেক্ষাকৃত সরল যৌগে পরিণত হয়

৩৷ শুষ্ক ওজনের হ্রাস/ বৃদ্ধি

৩৷ এই রকম বিপাকে জীবদেহের শুষ্ক ওজন বাড়ে

৩৷ এই রকম বিপাকে জীবদেহের শুষ্ক ওজন কমে

৪৷ উদাহরণ

৪৷ সালোকসংশ্লেষ

৪৷ শ্বসন

(4) বিপাক ও পরিপাক (Metabolism and Digestion)

বৈশিষ্ট্য

পরিপাক

বিপাক

১৷ প্রক্রিয়া

১৷ হলোজোয়িক পুষ্টির এই পর্যায়ে জটিল খাদ্যবস্তু প্রধানত উৎসেচকের সাহায্যে ভেঙে সরল, তরল শোষণ যোগ্য খাদ্য রসে পরিণত হয়।

১৷ সজীব কোষের প্রোটোপ্লাজমে গঠনমূলক বা ভাঙনমূলক জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি সংগঠিত হয়।

২৷ সংঘটনস্থল

২৷ এই প্রক্রিয়া কোষের ভিতরে বা বাইরে ঘটতে পারে।

২৷ এই প্রক্রিয়া কেবলমাত্র সজীব কোষের ভিতরেই ঘটে।  

৩৷ শক্তি নির্গম

৩৷ পরিপাকের সময় শক্তি নির্গত হয় না।

৩৷ বিপাকের সময় শক্তি নির্গত হতে পারে।

*****

Related Items

সালোকসংশ্লেষ (Photosynthesis)

যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিলযুক্ত কোষে আলোর উপস্থিতিতে পরিবেশ থেকে শোষিত জল ও গৃহিত কার্বন ডাই-অক্সাইডের আলোক রাসায়নিক ও জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সরল শর্করা (গ্লুকোজ) সংশ্লেষিত হয় ও উৎপন্ন খাদ্যে সৌরশক্তি স্থিতিশক্তি রূপে আবদ্ধ হয় এবং উপজাত বস্তু ..

মানুষের গমন পদ্ধতি

গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, মানুষের গমনে সহায়ক অস্থি সমূহ , মেরুদণ্ড, শ্রোণীচক্র, পায়ের অস্থি , ফ্লেক্সর পেশী, এক্সটেনসর পেশী, অ্যাডাকটর পেশী , মানুষের গমনে সহায়ক অস্থি সন্ধি সমূহ , মানুষের গমনে সহায়ক পেশী , দ্বিপদ গমন ক্রিয়া । ...

প্রাণীদের গমন

প্রাণীদের গমন , প্রাণীদের গমন অঙ্গ সম্পর্কে সাধারণ ধারণা - গমনের সময় প্রাণীরা কোনো না কোনো অঙ্গ বা অঙ্গাণু ব্যবহার করে। গমনে সাহায্যকারী অঙ্গকে গমন অঙ্গ বলে। মানুষের হাত ও পা , তিমির প্যাডেল , ব্যাঙের পা , পাখির ডানা , হাঁসের লিপ্ত পদ , শামুকের মাংসল পদ ...

মাছের গমন (Locomotion of Fish)

গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - মাছের সাতটি পাখনা আছে। একটি পৃষ্ঠপাখনা, একটি পায়ুপাখনা, একটি পুচ্ছপাখনা এবং একজোড়া করে বক্ষ ও শ্রোণী পাখনা। বক্ষপাখনার সাহায্যে মাছ জলের গভীরে যেতে পারে এবং শ্রোণীপাখনার সাহায্যে ...

মানব দেহে খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা

খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা জীব দেহের স্বাভাবিক পুষ্টির জন্য খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা আছে। জীব দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য খনিজ লবনের প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা অর্জনের জন্য খনিজ লবনের গ্রহনের প্রয়োজন আছ, সাতটি খনিজ লবনের নাম ও তাদের উৎস ।