এশিয়ার পূর্ব বাহিনী নদীগুলি

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 12/16/2014 - 13:02

এশিয়ার পূর্ববাহিনী নদীগুলির গতিপথ : মধ্য এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চল পূর্বদিকে বেশি বিস্তৃত হওয়ায় মধ্য এশিয়া থেকে উৎপন্ন হয়ে যেসব নদী পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়েছে, সেখানকার পর্বতের বাধার ফলে তারা অনেক সময় বহুদূর পর্যন্ত এঁকে বেঁকে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে সমভূমিতে পড়ে অল্প দূরত্ব পার হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম দিকে বিভিন্ন সাগর, উপসাগর বা প্রণালিতে পড়েছে । এইসব নদীগুলির মধ্যে ইয়াংসি কিয়াং, হোয়াং হো, আমুর এবং সিকিয়াং প্রভৃতি নদী বিশেষ উল্লেখযোগ্য ।

(১) ইয়াংসি কিয়াং : ইয়াংসি কিয়াং এশিয়ার দীর্ঘতম নদী এবং পৃথিবীর তৃতীয় দীর্ঘতম নদী । এই নদীর দৈর্ঘ্য ৫,৪৪০ কিলোমিটার । ইয়াংসি কিয়াং নদীটি কুয়েনলুন পর্বতের দক্ষিণ দিক থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রথমে অনেক দূর পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব দিকে প্রবাহিত হওয়ার পর পার্বত্য অঞ্চলে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত চিন সাগরে পড়েছে । এই নদীর তীরে স্বর্ণরেণু পাওয়া যায় বলে এই নদীর নাম স্বর্ণরেণুর নদী (ইয়াংসি শব্দের অর্থ স্বর্ণরেণু এবং কিয়াং শব্দের অর্থ নদী) । এর অনেক উপনদী আছে, যেমন— হ্যান, কিয়াং, টুংকিয়াং, য়ুয়েন-কিয়াং প্রভৃতি । চিনের বহু শহর, নগর, শিল্প ও বাণিজ্যকেন্দ্র এই নদীর তীরে অবস্থিত ।

(২) হোয়াং হো : হোয়াং হো নদীটি কুয়েনলুন পর্বতের দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে বহুদূর প্রবাহিত হয়ে পোহাই (চিহিলি) উপসাগরে পতিত হয়েছে । এর প্রধান উপনদী ওয়েই হো এবং ফেন হো । হোয়াং হো নদীর দৈর্ঘ্য ৪,০০০ কিলোমিটার ।

(৩) আমুর : আমুর নদীটি ইয়াব্লোনয় পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব সীমা দিয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে গিয়ে সাখালিন দ্বীপের পশ্চিম দিকের সংকীর্ণ প্রণালিতে পড়েছে । এর প্রধান উপনদী হল সিল্কা ও সুঙ্গারি । আমুর নদীর দৈর্ঘ্য ৪,৩২০ কিলোমিটার ।

(৪) সিকিয়াং : সিকিয়াং নদীটি চিনের দক্ষিণ-পূর্বে ইউনান মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গিয়ে চিন সাগরে পড়েছে । সিকিয়াং নদীর দৈর্ঘ্য ১,৭৬০ কিলোমিটার ।

(৫) গোদাবরী : গোদাবরী নদীটি ভারতের পশ্চিমঘাট পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে । এর দৈর্ঘ্য ১,৪৬৫ কিলোমিটার । গোদাবরী নদীর মোহানায় পলি সঞ্চিত হয়ে বিস্তীর্ণ বদ্বীপ সৃষ্টি করেছে ।

(৬) কৃষ্ণা : কৃষ্ণা নদী পশ্চিমঘাট পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে এবং পলি সঞ্চয় করে মোহানায় একটি বদ্বীপ সৃষ্টি করেছে । এর দৈর্ঘ্য ১,২৯০ কিলোমিটার ।

(৭) কাবেরী : কাবেরী নদী দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকের ব্রহ্মগিরি পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে । এর দৈর্ঘ্য ৮৫০ কিলোমিটার ।

*****

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত