জীবদেহে খাদ্যের গুরুত্ব

Submitted by arpita pramanik on Mon, 05/06/2013 - 10:29

জীবদেহে খাদ্যের গুরুত্ব (Importance of Food in Human Body)

খাদ্যের সংজ্ঞা ( Definition of food )  যে সমস্ত আহার্য সামগ্রী গ্রহণের মাধ্যমে জীবদেহের পুষ্টি, বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ ঘটে এবং প্রয়োজনীয় তাপশক্তি যোগান পাওয়া যায়, তাদের খাদ্য বলে।

(যেমনঃ শর্করা, প্রোটিনা ও ফ্যাট ) ।

খাদ্যর প্রকারভেদ ( Classification of food )

১৷ দেহ পরিপোষক খাদ্য ( Proximate principles of food ) - যে সব খাদ্য গ্রহণে জীবদেহে শক্তি উৎপন্ন হয় এবং সেই শক্তির সাহায্যে জীবদেহে শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাদের দেহ পরিপোষক খাদ্য বলে। যেমন - কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিন।

২৷ দেহ সংরক্ষক খাদ্য (Protective principles of food ) - যে সব খাদ্য দেহকে রোগ সংক্রমানের হাত থেকে রক্ষা করে তাদের দেহ সংরক্ষক খাদ্য বলে। যেমন - ভিটামিন, খনিজলবন ও জল।

 

একটি মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য (Regular Diet of a human)

সংজ্ঞা – দৈনন্দিন খাদ্য বা পথ্য বলতে বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক পরিশ্রম, সুস্থতা প্রভৃতি অবস্থা বিচার করে সঠিক পরিমাণে নির্বাচিত খাদ্যসামগ্রীকে বোঝায়, যার মধ্যে খাদ্যের ছয়টি অত্যাবশ্যকীয় উপাদানই সুষমভাবে বণ্টন করা থাকে।

দৈনন্দিন খাদ্য ও পথ্যের প্রধান কাজ (Functions of Regular diet)

১৷ দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন করা।

২৷ দেহকে সুস্থ ও সরল রাখা।

৩৷ দেহে উত্তাপ সঞ্চয় করা।

৪৷ দেহের পেশী গঠনে সাহায্য করা।

৫৷ রোগ উপশমে সাহায্য করা।

৬৷ দেহের ওজন বাড়ানো বা কমানো।

৭৷ দেহে কোনো খাদ্য উপাদানের ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করা প্রভৃতি।

 

সুষম খাদ্য ( Balanced Diet )

যে খাদ্যে খাদ্য উপাদানের ছয়টি উপাদানই গুনাগুন অনুসারে উপযুক্ত পরিমানে থাকে এবং যে খাদ্য গ্রহণ করলে দেহের স্বাভাবিক কর্মশীলতার জন্য উপযুক্ত পরিমাণে ক্যালরি পাওয়া যায়, তাকে সুষম খাদ্য বা ব্যাল্যন্সড ডায়েট বলে।

 

বিপাক (Metabolism)

জীবের প্রাণ ধারণের জন্য প্রত্যেকটি সজীব কোষের প্রোটোপ্লাজমে অনবরত যেসব গঠনমূলক ভাঙনমূলক রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে চলেছে, সমষ্টিগতভাবে তাদের বিপাক বলা হয়।

বিপাকের প্রকারভেদ (Clssification of Metabolism)

১৷ উপচিতি বিপাক ( Anabolism )

২৷ অপচিতি বিপাক ( Catabolism )

১৷ উপচিতি বিপাক ( Anabolism )

যে গঠনমূলক বিপাক ক্রিয়ায় জীব কোষের মধ্যে এক বা একাধিক পদার্থ সংশ্লেষিত হওয়ায় জীবদেহের শুষ্ক ওজন বৃদ্ধি পায়, তাকে উপচিতি বিপাক বলে। উদাহরণ – পুষ্টি, সালোকসংশ্লেষ প্রভৃতি

২৷ অপচিতি বিপাক (Catabolism)

যে সমস্ত ভাঙনমূলক বিপাক ক্রিয়ায় জীব কোষীয় পদার্থ হওয়ায় জীবদেহের শুষ্ক ওজন হ্রাস পায়, তাকে অপচিতি বিপাক বলে। উদাহরণ – শ্বসন, রেচন প্রভৃতি।

সংজ্ঞা – একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তির হাল্কা খাদ্যগ্রহণের 12-18 ঘণ্টা পর, সম্পূর্ণ দৈহিক ও মানসিক বিশামরত অবস্থায়, দেহের প্রয়োজনীয় শারীরবৃত্তীয় কাজ গুলি পরিচালনের জন্য প্রতি ঘণ্টায় প্রতি বর্গমিটার দেহতল থেকে যে নুন্যতম তাপশক্তি নির্গত হয় তাকে বেসাল মেটাবলিক রেট বা B.M.R বলা হয় ।

*****

Related Items

সালোকসংশ্লেষ (Photosynthesis)

যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিলযুক্ত কোষে আলোর উপস্থিতিতে পরিবেশ থেকে শোষিত জল ও গৃহিত কার্বন ডাই-অক্সাইডের আলোক রাসায়নিক ও জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সরল শর্করা (গ্লুকোজ) সংশ্লেষিত হয় ও উৎপন্ন খাদ্যে সৌরশক্তি স্থিতিশক্তি রূপে আবদ্ধ হয় এবং উপজাত বস্তু ..

মানুষের গমন পদ্ধতি

গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, মানুষের গমনে সহায়ক অস্থি সমূহ , মেরুদণ্ড, শ্রোণীচক্র, পায়ের অস্থি , ফ্লেক্সর পেশী, এক্সটেনসর পেশী, অ্যাডাকটর পেশী , মানুষের গমনে সহায়ক অস্থি সন্ধি সমূহ , মানুষের গমনে সহায়ক পেশী , দ্বিপদ গমন ক্রিয়া । ...

প্রাণীদের গমন

প্রাণীদের গমন , প্রাণীদের গমন অঙ্গ সম্পর্কে সাধারণ ধারণা - গমনের সময় প্রাণীরা কোনো না কোনো অঙ্গ বা অঙ্গাণু ব্যবহার করে। গমনে সাহায্যকারী অঙ্গকে গমন অঙ্গ বলে। মানুষের হাত ও পা , তিমির প্যাডেল , ব্যাঙের পা , পাখির ডানা , হাঁসের লিপ্ত পদ , শামুকের মাংসল পদ ...

মাছের গমন (Locomotion of Fish)

গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - মাছের সাতটি পাখনা আছে। একটি পৃষ্ঠপাখনা, একটি পায়ুপাখনা, একটি পুচ্ছপাখনা এবং একজোড়া করে বক্ষ ও শ্রোণী পাখনা। বক্ষপাখনার সাহায্যে মাছ জলের গভীরে যেতে পারে এবং শ্রোণীপাখনার সাহায্যে ...

মানব দেহে খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা

খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা জীব দেহের স্বাভাবিক পুষ্টির জন্য খনিজ লবনের প্রয়োজনীয়তা আছে। জীব দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য খনিজ লবনের প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা অর্জনের জন্য খনিজ লবনের গ্রহনের প্রয়োজন আছ, সাতটি খনিজ লবনের নাম ও তাদের উৎস ।