স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলনের কর্মসূচি

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 06/14/2013 - 12:52

বয়কট আন্দোলনের কর্মসূচি (Programme of Swadeshi Movement) :

(১) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গ করলে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শীঘ্রই প্রতিবাদের পর্যায় অতিক্রম করে ব্রিটিশ বিরোধী গণআন্দোলনে পরিণত হয় । এই গণআন্দোলনের প্রথম ও মুখ্য কর্মসূচি ছিল ‘বয়কট’ । কৃষ্ণকুমার মিত্র সম্পাদিত ‘সঞ্জীবনী’ পত্রিকার ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই জুলাই সম্পাদকীয় প্রবন্ধে ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম সামগ্রিক বয়কট আন্দোলনের আহ্বান জানানো হয় ।

(২) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই জুলাই খুলনার বাগেরহাটে এক বিশাল জনসভায় ইংরেজদের বিরুদ্ধে ‘বয়কট’ এর প্রস্তাব নেওয়া হয় । এই প্রস্তাবে বলা হয়, যতদিন পর্যন্ত বঙ্গভঙ্গ রদ না করা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত ব্রিটিশ পণ্যসামগ্রী বর্জন করা হবে এবং আগামী ছয় মাস পর্যন্ত সবরকমের জাতীয় আনন্দ-উৎসবের অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে ।

(৩) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২১শে জুলাই দিনাজপুরের মহারাজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় গৃহীত প্রস্তাবগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জেলাবোর্ড, পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের সব সদস্যরা পদত্যাগ করবেন এবং আগামী এক বছর ধরে জাতীয় শোক পালন করা হবে ।

(৪) ক্রমে ক্রমে বাংলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে জনসভা আয়োজিত হয় এবং বিলাতি পণ্যসম্ভারের বিরুদ্ধে বয়কট প্রস্তাব গৃহীত হয় ।

(৫) ‘বয়কট’ আন্দোলনে বাংলার ছাত্র সমাজ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে । ১৯০৫ সালের ১৭ই ও ১৮ই জুলাই রিপন কলেজ বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে এক ছাত্র সমাবেশে ‘বয়কট' কে আদর্শ পবিত্র শপথ হিসাবে গ্রহণ করা হয় । ৩১শে জুলাই কলকাতার সবকটি কলেজের এক বিরাট ছাত্র সমাবেশে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং ছাত্রদের একটি কেন্দ্রীয় সংগ্রাম সমিতি গঠন করা হয় । ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ই আগস্ট শিক্ষকদের পরিচালনায় প্রায় ৫০০০ জন ছাত্র প্রথমে কলেজ স্কোয়ারে সমবেত হয় ও পরে শোভাযাত্রা করে টাউন হলে জমায়েত হয় । সেদিন কলকাতার দোকান-বাজার ও যানবাহন প্রায় বন্ধ ছিল ।

*****

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।