মহারাষ্ট্রের বিপ্লবী আন্দোলনে আর্যবান্ধব সমাজ ও অভিনব ভারতের ভূমিকা আলোচনা কর ।

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 01/10/2022 - 22:43

প্রশ্ন:-  মহারাষ্ট্রের বিপ্লবী আন্দোলনে আর্যবান্ধব সমাজ ও অভিনব ভারতের ভূমিকা আলোচনা কর ।

আর্যবান্ধব সমাজের ভূমিকা : বিংশ শতকের প্রথম ভাগে মহারাষ্ট্রে বিপ্লবী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একাধিক বিপ্লবী সংগঠন গড়ে ওঠে যাদের মধ্যে আর্যবান্ধব সমাজ অন্যতম । এই সংস্থার লক্ষ ছিল সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ব্রিটিশ শক্তিকে উৎখাত করা । ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে আর্যবান্ধব সমাজ সরকারের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাদের প্ররোচিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় । কিছুদিনের মধ্যেই মহারাষ্ট্রের লোকমান্য তিলক এবং পাঞ্জাবের লালা লাজপত রায় ও ভাই পরমানন্দ আর্যবান্ধব সমাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন । বাংলার বিপ্লবীরাও আর্যবান্ধব সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন ।

অভিনব ভারতের ভূমিকা : মহারাষ্ট্রের অন্যতম বিশিষ্ট বিপ্লবী ছিলেন গণেশ সাভারকর এবং তাঁর ভাই বিনায়ক দামোদর সাভারকর । ১৯০৪ সালে গণেশ সাভারকর অভিনব ভারত নামে একটি বিপ্লবী সংস্থা গঠন করেন । মহারাষ্ট্র তথা পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এই সমিতির শাখা প্রতিষ্ঠিত হয় । আচার্য কৃপালনি এবং বি.জে. খের এই সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ।

(১) এই সংস্থা শরীরচর্চা, লাঠি ও তরবারি খেলা, পাহাড়ে ওঠা, ঘোড়ায় চড়া প্রভৃতি দুঃসাহসিক কাজকর্মের শিক্ষা দিত ।

(২) বোম্বাই ও পুণার প্রতিটি কলেজে এই সংস্থার গোপন শাখা স্থাপিত হয় । বিভিন্ন কলেজের ছাত্রদের মধ্যে বৈপ্লবিক আদর্শ ও চিন্তাধারা ছড়িয়ে দেওয়া ছিল এই সমিতির প্রধান কাজ ।

(৩) অস্ত্র সংগ্রহ ছিল সংঘের অন্যতম প্রধান কর্মসূচি । ইতিমধ্যে বিপ্লবী কার্যকলাপের জন্য গণেশ সাভারকর পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ।

(৪) পরবর্তীকালে এই সমিতির সদস্যরা নাসিকের ম্যাজিস্ট্রেট জ্যাকসনকে হত্যা করে । এই উপলক্ষ্যে নাসিক ষড়যন্ত্র মামলায়’ বিপ্লবীদের অভিযুক্ত করা হয় ।

*****

Comments

Related Items

ইন্দোচিন ও ব্রহ্মদেশ

ভিয়েতনাম, কাম্বোডিয়া, লাওস, আন্নাম ও টংকিনকে নিয়ে গঠিত ইন্দোচিনে ফরাসিদের উপনিবেশ গড়ে উঠেছিল । ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে হো-চি-মিন -এর নেতৃত্বে এখানে সাম্যবাদী আন্দোলন শুরু হয় । এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ইন্দোচিন কমিউনিস্ট পার্টি । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান ইন্দোচিন ...

এশিয়া ও আফ্রিকায় জাতীয় মুক্তি আন্দোলন

ভারতের পূর্বদিকে, চিনের দক্ষিণে এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের উত্তরে যে ভুখন্ড তাই সাধারণত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নামে পরিচিত । ইউরোপীয় দেশগুলি প্রাকৃতিক সম্পদের লোভে এবং বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে এই দ্বীপগুলিতে এসে উপনীত হয় এবং নিজ নিজ উপনিবেশ গড়ে তোলে । ...

ঠান্ডা লড়াই এর সূচনা

অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক প্রভাব বিস্তারের প্রশ্নে উদ্ভুত প্রতিযোগিতা থেকে সশস্ত্র সংঘর্ষের পরিবর্তে দুটি বিবদমান রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রগোষ্ঠীর মধ্যে যে কূটনৈতিক তত্পরতা, মানসিক টানাপোড়েন ও স্নায়ুর লড়াই চলে তাকেই ঠান্ডা যুদ্ধ বলে । ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত ..

সানফ্রান্সিসকো সম্মেলন ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের উৎপত্তি

১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ এবং ২৬শে জুন সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের রূপরেখাকে চূড়ান্ত রূপ দিতে আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো শহরে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন বসে । এই সম্মেলনে বিশ্বের ৫১টি দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ সম্মিলিতভাবে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের গঠন ও কার্যাবলী সংক্রান্ত একটি দলিলে ...

ডাম্বারটন ওক কনফারেন্স

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ওয়াশিংটন সম্মেলনের পর বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়াসকে আরও ত্বরান্বিত করতে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর মস্কো সম্মেলনে আবার আমেরিকা, ইংল্যান্ড, রাশিয়া এবং চিন আরও একটি ঘোষণাপত্র জারি করে । এতে বলা হয় যে তারা যথা শীঘ্র সম্ভব ...