নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ? এই সময়ের দুটি ব্যঙ্গাত্মক বাংলা নাটকের নাম কর । নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 01/09/2022 - 11:18

প্রশ্ন:- নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ? এই সময়ের দুটি ব্যঙ্গাত্মক বাংলা নাটকের নাম কর । নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

ঊনবিংশ শতাব্দির দ্বিতীয়ার্ধে জাতীয়তাবাদী নাটকের মাধ্যমে সমকালীন ব্রিটিশ সরকারের অত্যাচার, জনগণের সীমাহীন দুর্দশার জ্বলন্ত চিত্র তুলে ধরা হয় । এর ফলস্বরূপ সরকার ব্রিটিশ-বিরোধী নাটকের অভিনয় যাতে না হয় সে জন্য সচেষ্ট হন এবং লর্ড নর্থব্রুকের শাসনকালে ‘নাট্যভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন’ বলবৎ করা হয় । এই আইনে উদ্দেশ্য ছিল—

(১) নাটকের মধ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে যে দেশাত্মবোধ ও জাতীয়তাবোধের বিস্তার ঘটছিল তা বন্ধ করা ।

(২) ব্রিটিশ সরকারের জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি রক্ষা করা ।

(৩) যে কোনো রাজনীতি বিষয়ক নাটক ও অভিনয় নিয়ন্ত্রিত করা ।

এই সময়ের দুটি ব্যঙ্গাত্মক নাটক হল ‘গজদানন্দ ও যুবরাজ’ এবং ‘হনুমান চরিত্র’।

নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী চরম অশন্তোষ ও তীব্র আন্দোলন শুরু হয় । বিভিন্ন সংস্থা, যেমন; ‘সাধারণ’, ‘বেঙ্গলী’ প্রভৃতি সংবাদ পত্র, বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বিশেষত ‘ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’, ভারত সভা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় ।

*****

Comments

Related Items

উনিশ শতকের বাংলার 'নবজাগরণ' ধারণার ব্যবহার বিষয়ক বিতর্ক

পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে উনিশ শতকে বাংলার সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায় কেউ কেউ তাকে 'নবজাগরণ' বলে অভিহিত করেছেন । প্রকৃত অর্থে এই অগ্রগতিকে নবজাগরণ বলা যায় কি না তা নিয়ে ঐতিহাসিক ও পন্ডিতমহলে বিতর্কের শেষ নেই । ঐতিহাসিক যদুনাথ

বাংলার নবজাগরণ -এর চরিত্র ও পর্যালোচনা

ঊনিশ শতকে বাংলায় আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্পকলা, রাজনীতি, ধর্ম, সমাজ প্রভৃতি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায় । এই অগ্রগতি সাধারণভাবে 'ঊনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণ' নামে পরিচিত । রেনেসাঁস (Renaissance) কথাটির আক্

লালন ফকির

ঊনিশ শতকে বাংলায় সর্বধর্মসমন্বয়ের ক্ষেত্রে যাঁরা গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছিলেন লালন ফকির বা লালন সাঁই হলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম আধ্যাত্মিক বাউলসাধক । তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ও বাংলাদেশের বাউলগানের শ্রেষ্ঠতম রচয়িতা ছিলেন । তিনি সাধারণ মানুষের কাছে লালন ফকির ...

স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কারের অভিমুখ : নব্য বেদান্ত — বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

ভারতের প্রাচীন অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের ব্যাখ্যাকর্তা ছিলেন আদি জগৎগুরু 'শঙ্করাচার্য' । 'বেদান্ত' শব্দের অর্থ হল বেদের অন্ত বা শেষ, আর বেদের অন্ত হল উপনিষদসমূহ । ব্রহ্ম হল বেদান্ত দর্শনের মূল আলোচ্য বিষয় । উপনিষদ, ভগবতগীতা এবং ব্রহ্ম সূত্র ও তার ভাষ্য বি

শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের 'সর্বধর্ম সমন্বয়' এর আদর্শ

ঊনিশ শতকে বাংলায় যখন হিন্দুধর্ম নানা কুসংস্কার ও গোঁড়ামির বেড়াজালে আবদ্ধ এবং ধর্মীয় আন্দোলন যখন নানা মত ও পথের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে, তখন শ্রী শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ তুলে ধরে হিন্দুসমাজকে এক নতুন পথের সন্ধান দেন । বিভিন্ন মত ও পথের সংঘর্ষে হ