ক্ষুদিরাম বসু ও লালা হরদয়ালকে মনে রাখা হয় কেন ?

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 01/10/2022 - 22:34

প্রশ্ন :-  ক্ষুদিরাম বসু ও লালা হরদয়ালকে মনে রাখা হয় কেন ?

ক্ষুধিরাম বসুকে মনে রাখার কারণ :

(১) বিংশ শতকের প্রথম ভাগের বিপ্লবী আন্দোলনে যুগান্তর দলের সক্রিয় সদস্য ক্ষুদিরাম বসুর অবদান চিরস্মরণীয় ।

(২) এই সময় বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দমন মূলক কার্যকলাপের জন্য যুগান্তর দল কলকাতার চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয় ।

(৩) যুগান্তর দলের দুই তরুণ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীকে কিংসফোর্ডকে হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়, কিন্তু নিরাপত্তার কারণে কিংসফোর্ড এই সময় বিহারের মজঃফরপুরে বদলি হয়ে যান । সেখানেই তাঁকে বোমা মেরে হত্যা করতে গিয়ে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি ব্যর্থ হন, ক্ষুদিরাম পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান এবং বিচারে তাঁর ফাঁসি হয় ।

(৪) অগ্নিযুগের প্রথম শহিদ ক্ষুদিরামের নির্ভীক দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ বাংলার যুবসমাজকে বিপ্লবী মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করেছিল । সেই জন্যই তাঁকে মনে রাখা হয় ।

লালা হরদয়ালকে মনে রাখার কারণ :

(১) সাহারানপুর এবং রুরকি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত লালা হরদয়াল ছিলেন পাঞ্জাবের বিপ্লবী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ।

(২) ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর নেতৃত্বে পাঞ্জাবে বিপ্লবী কার্যকলাপ ব্যাপক আকার ধারণ করে । সেই সময় তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে ‘বয়কট’ ও 'প্রত্যক্ষ সংগ্রামের' ডাক দেন ।

(৩) ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারত ছেড়ে বিদেশে চলে যান এবং ১৯১৩ সালে আমেরিকায় প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে গদর পার্টির প্রতিষ্ঠা করেন । ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করে যে কোনোও উপায়ে ভারতের স্বাধীনতা অর্জন করাই ছিল এই দলের লক্ষ্য । লালা হরদয়ালের দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের আদর্শ জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল । এইজন্য তাকে মনে রাখা হয় ।

*****

Comments

Related Items

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন (Women and the Anti-partition Movement):-

সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনকালে লর্ড কার্জন প্রশাসনিক অজুহাত দেখিয়ে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২০শে জুলাই সরকারিভাবে বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে বাংলা তথা ভারতে এ

বিশ শতকের ভারতে নারী আন্দোলনের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

বিশ শতকের ভারতে নারী আন্দোলনের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (Women's Movements in the Twentieth Century):-

বিশ শতকের ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনগুলির মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চারটি জাতীয় আন্দোলন হল—(i) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্ব

মানবেন্দ্রনাথ রায় ও ভারতের বামপন্থী আন্দোলন

মানবেন্দ্রনাথ রায় ও ভারতের বামপন্থী আন্দোলন(M.N.Roy and the Left Movement in India):-

মানবেন্দ্রনাথ রায়ের আসল নাম হল নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য । বিপ্লবী কাজ করতে গিয়ে তিনি অসংখ্য ছদ্মনাম গ্রহণ করেন, যেমন— মি. মার্টিন, হরি সিং, ডা. মাহমুদ, মি.

বিশ শতকের ভারতে উপনিবেশ-বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থী রাজনীতির অংশগ্রহণ

বিশ শতকের ভারতে উপনিবেশ-বিরোধী আন্দোলনে বামপন্থী রাজনীতির অংশগ্রহণ (Participation of the Left in the Anti-Colonial Movement in India):-

রুশ বিপ্লবের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানবেন্দ্রনাথ রায়, অবনী মুখার্জি, মহম্মদ আলি সহ ২৪ জন প্রবাসী ভারতীয়

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলন

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক আন্দোলন (Quit India Movement and the Working Class):-

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৯ই আগস্ট মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেয় । এই আন্দো