ভারতের উপকূলের সমভূমি অঞ্চল

Submitted by avimanyu pramanik on Wed, 11/12/2014 - 23:55

ভারতের উপকূলের সমভূমি অঞ্চল :

ত্রিভুজাকৃতি দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলের পূর্ব প্রান্তে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের উপকূল বরাবর সংকীর্ণ সমভূমিকে ভারতীয় উপকূলবর্তী সমভূমি অঞ্চল বলা হয় । ভারতীয় উপকূলবর্তী সমভূমি অঞ্চলটি দুই ভাগে বিভক্ত — (ক) পশ্চিম উপকূলের সমভূমি এবং (খ) পূর্ব উপকূলের সমভূমি ।

(ক) পশ্চিম উপকূলের সমভূমি :  পশ্চিমে আরব সাগরের উপকূলবর্তী সংকীর্ণ ও বন্ধুর সমভূমিটি উত্তর দিকে গুজরাটের সমভূমি অঞ্চলে খানিকটা চওড়া হয়ে গেছে । কচ্ছ উপদ্বীপ এবং কচ্ছের রণ অঞ্চলকে নিয়ে গঠিত গুজরাট উপকূলের সমভূমি একটি প্রশস্ত সমতলভূমি । কোনোও এক সময় কচ্ছের রণ অঞ্চলটি আরব সাগরের একটি প্রসারিত অগভীর অংশ ছিল । কিন্তু বর্তমানে গ্রীষ্মকালে এই সমভূমি অঞ্চলটি সম্পূর্ণ শুষ্ক, উদ্ভিদহীন ও সাদা লবণে ঢাকা বালুকাময় প্রান্তরে রূপান্তরিত হয় । কচ্ছ উপসাগর ও খাম্বাত উপসাগর নামে আরব সাগরের দুটি প্রসারিত অংশ গুজরাট সমভূমির মধ্যে কিছুদূর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে । কচ্ছ অঞ্চলের কিছুটা দক্ষিণে অবস্থিত কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ অঞ্চলটি সৌরাষ্ট্র নামেও পরিচিত । গিরণর সৌরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পাহাড় । এর উচ্চতা ১১১৭ মিটার । ভারতের পশ্চিম উপকূলের সমভূমি মহারাষ্ট্রে কোঙ্কন উপকূল, কর্ণাটকে কানাড়া উপকূল এবং কেরালায় মালাবার উপকূল নামে পরিচিত । উত্তরে বিভিন্ন নদীর মোহনা এবং দক্ষিণে কেরালা উপকূলে ছোট বড় হ্রদ এবং উপহ্রদ (লেগুন) বা ‘কয়ালের’ উপস্থিতি হল পশ্চিম উপকূলের অন্যতম ভুপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য । প্রায় ৬৩ কিমি লম্বা ‘ভেমবানাদ কয়াল’ এই অঞ্চলের বৃহত্তম উপহ্রদ ।

♣ পশ্চিম উপকূলের সমভূমি :

(১) এটি ভারতের পশ্চিম দিকে আরব সাগরের উপকূল বরাবর অবস্থিত । 

(২) পশ্চিম উপকূলের ভুমিভাগ সংকীর্ণ, উঁচু, নীচু ও বন্ধুর । 

(৩) এখানে বিভিন্ন নদীর মোহনা ও উপহ্রদ দেখা যায় । 

(৪) এই সমভূমি মহারাষ্ট্রে কোঙ্কন উপকূল, কর্ণাটকে কানাড়া উপকূল এবং কেরালায় মালাবার উপকূল নামে পরিচিত । 

(খ) পূর্ব উপকূলের সমভূমি : ভারতের পূর্ব প্রান্তে বঙ্গোপসাগর উপকূলের সমভূমি পশ্চিম উপকূলের সমভূমির তুলনায় বেশি চওড়া ও সমতল । সমগ্র পূর্ব উপকূলের সমভূমিটি গোদাবরী বদ্বীপের উত্তরে উত্তর সরকার উপকূল এবং গোদাবরী বদ্বীপের দক্ষিণে করমণ্ডল উপকূল নামে পরিচিত । পূর্ব উপকূলের সমভূমিতে অনেকগুলি হ্রদ আছে এর মধ্যে উড়িষ্যা উপকূলের চিল্কা কোলেরু এবং অন্ধ্র উপকূলের পুলিকট উল্লেখযোগ্য হ্রদ ।

♣ পূর্ব উপকূলের সমভূমি :

(১) এটি ভারতের পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর অবস্থিত ।

(২) পূর্ব উপকূলের ভুমিভাগ প্রশস্ত ও সমতল ।

(৩) এখানে বিভিন্ন নদীর বদ্বীপ দেখা যায়, যা খুব উর্বর ।

(৪) এই সমভূমি গোদাবরী অববাহিকার উত্তর দিকে উত্তর সরকার উপকূল এবং দক্ষিণ দিকে করমণ্ডল উপকূল নামে পরিচিত ।

*****

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত