বাস্তব চলের অপেক্ষক ( Function of Real Variable )

Submitted by arpita pramanik on Wed, 02/16/2011 - 23:44

বাস্তব চলের অপেক্ষক ( Function of Real Variable )

সূচনা ( Introduction )

   বাস্তব সংখ্যা অধ্যায়ে আমরা বাস্তব সংখ্যা এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। আবার আমরা সম্বন্ধ চিত্রণ সম্পর্কে জেনেছি। এই অধ্যায়ে বাস্তব চলের অপেক্ষক সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করব। এছাড়াও অপেক্ষকের শ্রেণীবিভাগ ও তাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য এবং কয়েকটি লৈখিক উপস্থাপনা সম্পর্কে আলোচনা করব। 

 

বাস্তব চলের অপেক্ষক ( Function of Real Variable )

    ধরি R হল একটি বাস্তব সংখ্যার সেট , এবং X ও Y হল তার দুটি উপসেট। এখানে X ও Y সেট দুটি শূন্য নয়। কোনো নির্দিষ্ট নিয়মে f যদি X সেটের প্রত্যেক পদ x কে  Y সেটের একটি নির্দিষ্ট পদ y কে সংযুক্ত করে , তবে নির্দিষ্ট f নিয়ম দ্বারা R সেটে একটি বাস্তব অপেক্ষক সংজ্ঞাত হয়। এটিকে f:XY প্রতীক দ্বারা প্রকাশ করা হয়।  

    নির্দিষ্ট f নিয়ম অনুসারে X সেটের পদ x এর জন্য Y সেটের পদকে f(x) প্রতীক দ্বারা প্রকাশ করা হয়। সুতরাং X সেটের পদ x এর জন্য f নিয়ম অনুযায়ী Y সেটের পদ y হলে , y = f(x)  . স্পষ্টতই  x এর বাস্তব মানের জন্য y বা f(x) এর নির্দিষ্ট বাস্তব মান পাওয়া যায়। x এর যেসব বাস্তব মানের জন্য y বা f(x) এর নির্দিষ্ট বাস্তব মান পাওয়া যায় তাদের সংকলন বা সেটকে  f(x) অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্র বা অঞ্চল ( domain of definition ) বলে। সুতরাং ,

f(x) অপেক্ষকের ক্ষেত্র = Df={x:xR,f(x)R}

আবার , সব xDf এর জন্য y বা f(x) এর যেসব মান পাওয়া যায় তাদের সংকলন বা সেটকে  f(x) অপেক্ষকের পাল্লা বা প্রসার ( range ) বলে। সুতরাং ,

 f(x) অপেক্ষকের পাল্লা = Rf={f(x):xDf} .

y = f(x) বাস্তব অপেক্ষকের x চল বা তার সংজ্ঞার ক্ষেত্রে অন্তর্গত মানসমূহ গ্রহণ করে এবং এটিকে স্বাধীন চল ( independent variable ) বলে। অন্যভাবে y চল অপেক্ষকের পাল্লার অন্তর্গত মানসমূহকে গ্রহণ করে এবং এটিকে অধীন চল ( dependent variable ) বলে। 

 

উদাহরণ 1. মনে করি x এবং y দুটি বাস্তব চলরাশি এবং y = 4x - 5 গাণিতিক সমীকরণে আবদ্ধ। অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্র ও পাল্লা দেখাও ?

সমাধান :-  এখানে  y = f(x) =  4x - 5 . এখানে x এর এক একটি বাস্তব মানের জন্যে y এর একটি নির্দিষ্ট বাস্তব মান পাওয়া যাবে। 

যখন x = 1 তখন y=4×15=45=1 . এক্ষেত্রে x স্বাধীন চল এবং y অধীন চল। স্পষ্টতই অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্র <x< এবং এর পাল্লা <y< .

 

উদাহরণ 2. কোনো কারখানায় x তম বছরে উৎপাদন y ( হাজার টন এককে ) নিম্নরূপ :

x      1975      1976      1977      1978      1979      1980

y      200         220         260        306        350        384

অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্র ও পাল্লা দেখাও ?

সমাধান :- স্পষ্টতই x এবং y দুটি বাস্তব চলরাশি , x এর প্রতিটি মানের জন্য y এর একটি নির্দিষ্ট মান পাওয়া যায়। সুতরাং x এবং y এর মধ্যে কোনো গাণিতিক সম্পর্ক না থাকলেও y কে x এর একটি অপেক্ষক বলা হয়। অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্র হয় ( 1975 , 1976 , 1977 , 1978 , 1979 , 1980 ) এবং পাল্লার ক্ষেত্র হয় ( 200 , 220 , 260 , 306 , 350 , 384 ) .

 

মনে রাখতে হবে x = a বাস্তব মানে y = f(x) অপেক্ষক সংজ্ঞাত হলে f(a) প্রতীক দ্বারা y বা f(x) এর মান প্রকাশিত হয়। a যেকোনো বাস্তব সংখ্যা হলে x = a বিন্দুতে y = f(x) অপেক্ষক  সংজ্ঞাত (defined ) বলা হবে , যদি f(a) এর মান বাস্তব ও সসীম হয়। পক্ষান্তরে f(a) এর মান অনির্ণেয় কিংবা অবাস্তব হলে x = a বিন্দুতে  f(x) অপেক্ষক  অসংজ্ঞাত ( undefined ) বলা হয় । 

উদাহরণস্বরূপ f(x)=x2x হলে , x = 0 বিন্দুতে f(x) এর মান অনির্ণেয়। কারণ x = 0 বিন্দুতে f(x) এর মান হবে f(0)=020 .সুতরাং x = 0 বিন্দুতে  f(x)=x2x অপেক্ষকটি অসংজ্ঞাত। কিন্তু x এর মান যখন 2 তখন f(x) এর মান f(2)=222=42=2 . সুতরাং x = 2 বিন্দুতে f(x) অপেক্ষক  সংজ্ঞাত। 

 

একমান বিশিষ্ট ও বহুমান বিশিষ্ট অপেক্ষক ( Single valued and Many valued functions )

        পূর্বেই আলোচনা করা হয়েছে যে দুটি বাস্তব চলরাশি x এবং y এমনভাবে আবদ্ধ থাকে যে x এর প্রতিটি মানের জন্য y এর একটি নির্দিষ্ট মান পাওয়া যায় , তবে y কে x এর একটি অপেক্ষক বলা হয়। এরকম ক্ষেত্রে অনেক সময় y কে x এর একমান বিশিষ্ট অপেক্ষক ( Single valued function ) বলে। 

       উদাহরণস্বরূপ  y = 3x -4 হলে ,x এর মান যখন 0, তখন y এর মান হয় -4 , x এর মান যখন 1, তখন y এর মান হয় -1 , আবার x এর মান যখন 2, তখন y এর মান হয় 2 . দেখা যাচ্ছে যে  x এর প্রতিটি বাস্তব মানের জন্য y এর একটি নিদিষ্ট বাস্তব মান পাওয়া যাবে। সুতরাং y কে x এর একমান বিশিষ্ট অপেক্ষক বলা হয়। 

      কিন্তু x এবং y দুটি চলরাশি যদি এমন ভাবে আবদ্ধ থাকে যে , x এর প্রতিটি মানের জন্য y এর একাধিক নির্দিষ্ট মান পাওয়া যায় , সেক্ষেত্রে y কে x এর বহুমান বিশিষ্ট অপেক্ষক  ( Many valued functions ) বলা হয়। 

      উদাহরণস্বরূপ y2=4x হলে , x এর প্রতিটি ধনাত্মক বাস্তব মানের জন্য y এর দুটি বাস্তব মান পাওয়া যায়। যখন x = 1 তখন y2=4y=±2 , আবার যখন x = 2 তখন y2=4×2y2=8y=±8 . আবার যদি y=sin1x হয় , অপেক্ষকের সংজ্ঞার অঞ্চল হয় 1x1 . এখন 1x1 অন্তর্গত x এর প্রতিটি বাস্তব মানের জন্য y এর অসংখ্য বাস্তব মান পাওয়া যায় ( যথা x = 0 হলে y=sin10 = nπ যেখানে n যেকোনো পূর্ণসংখ্যা ) .

 

অপেক্ষকের শ্রেণীবিভাগ ( Classification of Functions )

 

(১) বীজগাণিতিক অপেক্ষক ( Algebraic Functions )

     একটি বাস্তব চলের যোগ , বিয়োগ , গুণ , ভাগ , অবঘতন ( evolution ) , উদঘাতন ( involution ) ইত্যাদি প্রক্রিয়াযুক্ত সসীম সংখ্যক পদবিশিষ্ট রাশিমালাকে বীজগাণিতিক অপেক্ষক ( Algebraic Functions ) বলা হয়। কোনো একটি বীজগাণিতিক অপেক্ষক মূলদ অপেক্ষক অথবা অমূলদ অপেক্ষক হতে পারে। 

(i)বহুপদ অপেক্ষক ( Polynomial Functions )

     n একটি ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা এবং a0,a1,a2,.......,an এর প্রত্যেকে ধ্রূবক হলে ,

a0xn+a1xn1+a2xn2+..........+an1x+an 

এই রাশিমালাকে বাস্তব চল x এর n তম ঘাতবিশিষ্ট বহুপদ অপেক্ষক বা মূলদ অখন্ড অপেক্ষক বলা হয় এবং এটি P(x) প্রতীক দ্বারা প্রকাশ করা হয়। সুতরাং ,

P(x) = a0xn+a1xn1+a2xn2+..........+an1x+an 

উদাহরণস্বরূপ , 3x4+2x2+x;4x3+5x2+6x+7 ইত্যাদি রাশিমালা হল বহুপদ অপেক্ষক ( যথাক্রমে 4 , 3 ঘাত বিশিষ্ট ) .

(ii) মূলদ অপেক্ষক ( Rational Functions )

    দুটি বহুপদ অপেক্ষকের অনুপাত বা ভাগফলকে মূলদ অপেক্ষক ( Rational Functions ) বলা হয় এবং তা R(x) প্রতীক দ্বারা প্রকাশ করা হয়। P(x) এবং Q(x) দুটি বহুপদ অপেক্ষক হলে , R(x)=P(x)Q(x) যেখানে x বাস্তব চলরাশি এবং Q(x)0 .     

   উদাহরণস্বরূপ , 3x4+6x11x2+2;4x3+9x21(x±1);ax+bpx+q(xqp)  এরা প্রত্যেকে মূলদ অপেক্ষক। 

(iii) অমূলদ অপেক্ষক ( Irrational Functions )

    মূলদ অপেক্ষক নয় এমন বীজগাণিতিক অপেক্ষককে অমূলদ অপেক্ষক ( Irrational Functions ) বলে। 

উদাহরণস্বরূপ , 3x;2x5+3;3x24x+51+2x ইত্যাদি অমূলদ অপেক্ষক। 

 

 (২) অবিজগাণিতিক অপেক্ষক ( Non -algebraic or transcendental Functions )

   যেসব অপেক্ষক বীজগাণিতিক নয় তাদের অবিজগাণিতিক অপেক্ষক ( Non -algebraic or transcendental Functions ) বলা হয়। অবিজগাণিতিক অপেক্ষক নিম্নলিখিত বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। 

(i) ত্রিকোণমিতিক অপেক্ষক ( Trigonometrical Functions )

     sinx,cosx,tanx,cosecx,secx,cotx এই ছয়টি অপেক্ষককে ত্রিকোণমিতিক অপেক্ষক ( Trigonometrical Functions ) বলা হয়। 

(ii) সূচকীয় অপেক্ষক ( Exponential Functions )

      x যেকোনো বাস্তব চলরাশি হলে , ex(2<e<3) এবং ax(a<0,a1) উভয়কে সূচকীয় অপেক্ষক ( Exponential Functions ) বলা হয়। 

(iii) লগারিদমিক অপেক্ষক ( Logarithmic Functions )

  x  যেকোনো বাস্তব চলরাশি হলে , 

logex(2<e<3,x>0);logax(a>0,a1,x>0) এবং loga(1+x)(a>0,a1,x>1) 

অপেক্ষকগুলির প্রত্যেকটিকে লগারিদমিক অপেক্ষক ( Logarithmic Functions ) বলে। 

(iv) বিপরীত বৃত্তীয় অপেক্ষক ( Inverse circular Functions )

   sin1x(1x1);cos1x(1x1);tan1x;cot1x;sec1x(x1,x1);cosec1x(x1,x1)

এই ছয়টি অপেক্ষককে বিপরীত বৃত্তীয় অপেক্ষক ( Inverse circular Functions ) বলা হয়। 

 

(৩) প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ অপেক্ষক (Explicit and Implicit Functions )

   কোনো অপেক্ষক যদি স্বাধীন চলের রাশি হিসাবে স্পষ্টভাবে দেওয়া থাকে , তবে তাকে প্রত্যক্ষ অপেক্ষক ( Explicit Functions ) বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায় y = f(x) আকারে প্রকাশিত অপেক্ষককে প্রত্যক্ষ অপেক্ষক বলা হয়।

উদাহরণস্বরূপ , y=f(x)=x32x+5;y=f(x)=x2+ex

অপেক্ষক দুটি প্রতীকে প্রত্যক্ষ অপেক্ষক। 

   অন্যভাবে অপেক্ষকটি যদি স্বাধীন চলের রাশি হিসাবে পরিষ্কার ভাবে প্রকাশ করা না থাকে , তবে তাকে বলে পরোক্ষ অপেক্ষক ( Implicit Functions )। অন্য কথায় বলা যায় x এবং y দুটি বাস্তব চলের মধ্যে f(x , y) = 0 আকারের গাণিতিক সম্পর্ক থাকলে y কে x এর একটি পরোক্ষ অপেক্ষক বলা হয়। 

উদাহরণস্বরূপ , ax2+2hxy+by2=0;exy+sin(x+y)=0 

অপেক্ষক দুটির প্রত্যেকটি পরোক্ষ অপেক্ষক। 

 

অপেক্ষকের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ( Some Feature of Functions )

(১) সীমাবদ্ধ অপেক্ষক ( Bounded Functions )

     মনে করি y = f(x) অপেক্ষকটি axb ক্ষেত্রে সংজ্ঞাত এবং m ও M দুটি বাস্তব সংখ্যা যা এই অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে এমন ভাবে অন্তর্গত যে , x এর সব বাস্তব মানের জন্য mf(x)M প্রযোজ্য হবে। তবে f(x) কে সীমাবদ্ধ অপেক্ষক ( Bounded Functions ) বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ x এর সব বাস্তব মানের জন্য 1sinx1 .সুতরাং y=sinx একটি সীমাবদ্ধ অপেক্ষক।  

(২) একদিষ্ট অপেক্ষক ( Monotonic Functions )

  মনে করি y = f(x) অপেক্ষকটি axb ক্ষেত্রে সংজ্ঞাত এবং x1 এবং x2 সংজ্ঞার ক্ষেত্রে অন্তর্গত দুটি বাস্তব সংখ্যা , যেখানে x1<x2 . তাহলে  axb ক্ষেত্রে  f(x) অপেক্ষককে 

(i) একদিষ্ট আরোহী ( monotonic increasing ) বলা হবে , যদি f(x1)f(x2) হয়। 

(ii) একদিষ্ট অবরোহী ( monotonic decreasing ) বলা হবে , যদি f(x1)f(x2) হয়। 

(iii) যথার্থ একদিষ্ট আরোহী ( strictly monotonic increasing ) বলা হবে , যদি f(x1)<f(x2) হয়। 

(iv) যথার্থ একদিষ্ট অবরোহী ( strictly monotonic decreasing )  বলা হবে , যদি f(x1)>f(x2) হয়। 

  কোনো অপেক্ষকের উপরে কোনো শর্ত সিদ্ধ হলে তাকে একদিষ্ট অপেক্ষক ( Monotonic Functions ) বলে। উদাহরণস্বরূপ , y=cosx অপেক্ষকটি 0xπ2 ক্ষেত্রে যথার্থ একদিষ্ট অবরোহী এবং 3π2x2π ক্ষেত্রে যথার্থ একদিষ্ট আরোহী। 

(৩) যুগ্ম এবং অযুগ্ম অপেক্ষক ( Even and odd Functions )

  একটি অপেক্ষক f(x) কে যুগ্ম অপেক্ষক ( Even Functions ) বলা হবে যদি ,  f(x)=f(x) হয়। 

আবার f(x) অপেক্ষককে অযুগ্ম অপেক্ষক ( Odd Functions ) বলা হবে যদি , f(x)=f(x) হয়। 

উদাহরণস্বরূপ , f(x)=x2cosx হলে 

f(x)=(x)2cos(x)=x2cosx=f(x) .

সুতরাং ,  f(x)=x2cosx একটি যুগ্ম অপেক্ষক। 

আবার g(x)=x+sinx হলে,

g(x)=(x)+sin(x)=xsinx=(x+sinx)=g(x) 

সুতরাং ,  g(x)=x+sinx একটি অযুগ্ম অপেক্ষক। 

(৪) পর্যায়বৃত্ত অপেক্ষক ( Periodic Functions )

    m একটি ক্ষুদ্রতম ধ্রূবক সংখ্যা এবং f(x + m) = f(x) হলে f(x) কে একটি পর্যায়বৃত্ত অপেক্ষক ( Periodic Functions ) বলে এবং m কে পর্যায়বৃত্ত অপেক্ষকের পর্যায় (Period ) বলা হয়।

উদাহরণস্বরূপ , f(x)=sinx 

এখানে f(x+2π)=sin(x+2π)=sinx=f(x) 

সুতরাং ,  f(x)=sinx অপেক্ষকটি একটি পর্যায়বৃত্ত অপেক্ষক এবং এর পর্যায় হল 2π .

আবার g(x)=tanx 

এখানে g(x+π)=tan(x+π)=tanx=g(x)

সুতরাং , g(x)=tanx  অপেক্ষকটি একটি পর্যায়বৃত্ত অপেক্ষক এবং এর পর্যায় হল π .

 

অপেক্ষকের প্যারামেট্রিক আকার ( Parametric form of a Functions )

      কোনো অপেক্ষকের স্বাধীন এবং অধীন উভয় চল যদি তৃতীয় একটি চলের অপেক্ষক হিসাবে প্রকাশিত হয় , তবে অপেক্ষকের ওই রকম প্রকাশকে তার প্যারামেট্রিক আকার ( Parametric form ) বলে। মনে করি , স্বাধীন চল x ও অধীন চল y তৃতীয় একটি চল t এর অপেক্ষক। অর্থাৎ x=ϕ(t) এবং y=ψ(t) . এই দুটি সম্মন্ধ y = f(x) এর প্যারামেট্রিক আকার। t কে প্যারামিটার ( Parameter ) বলা হয়। সম্মন্ধ দুটি থেকে t কে অপনয়ন করলে y = f(x) অপেক্ষক পাওয়া যাবে।  

 

অপেক্ষকের অপেক্ষক ( Function of a Function )

    মনে করি axb ক্ষেত্রে u = f(x) এবং cud ক্ষেত্রে y = g(u) অপেক্ষক দুটি সংজ্ঞাত।  সুতরাং আমরা বলতে পারি  axb ক্ষেত্রের  মধ্যে অন্তর্গত x এর  প্রতিটি মানের জন্য u এর নির্দিষ্ট মান পাওয়া যাবে। অনুরূপে cud ক্ষেত্রের মধ্যে অন্তর্গত u এর প্রতিটি মানের জন্য y এর নির্দিষ্ট মান পাওয়া যাবে। সুতরাং এমন কিছু ক্ষেত্র পাওয়া যায় যেখানে x এর মানের জন্য y এর নির্দিষ্ট মান পাওয়া যায় অর্থাৎ  y , x এর একটি অপেক্ষক হবে। এরকম হলে y কে অপেক্ষকের অপেক্ষক বা অপেক্ষকের সংযোজন ( Function of a Function or Composition of a Function ) বলে। এটি নিম্নলিখিত ভাবে প্রকাশ করা হয় 

y=g{f(x)}y=gf

উদাহরণস্বরূপ , f(x)=x2 এবং g(x)=2x+1 হলে ,

 g{f(x)}=2f(x)+1=2x2+1

আবার f{g(x)}={g(x)}2=(2x+1)2=4x2+4x+1

 

সংক্ষিপ্তকরণ ( Summarisation )

  1. কোনোটিই শূন্য নয় এমন দুটি বাস্তব সংখ্যার সেট X ও Y হলে , কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম f , যা X সেটের প্রত্যেক পদ x কে Y সেটের একটি নির্দিষ্ট পদ y বা f(x) কে সংযুক্ত করে , সেই নিয়মকে বাস্তব অপেক্ষক বলে। x এর যেসব বাস্তব মানের জন্য y বা f(x) এর নির্দিষ্ট মান পাওয়া যায় তাদের সেটকে অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্র বলে এবং সংজ্ঞার ক্ষেত্রে অন্তর্গত x এর মানসমূহের জন্য y বা f(x) এর যেসব মান পাওয়া যায় তাদের সেটকে পাল্লা বা প্রসার বলে। 
  2. যখন x = a , তখন f(a) প্রতীক দ্বারা f(x) এর মান প্রকাশ করা হয়। 
  3. y = f(x) অপেক্ষক x = a বিন্দুতে অসংজ্ঞাত হবে যদি , x = a  এর জন্য f(a) এর মান অবাস্তব অথবা অনির্ণেয় হয়। 
  4. f(x) = f (-x) হলে f(x) অপেক্ষককে যুগ্ম অপেক্ষক বলা হয় এবং f(x) = - f(x) হলে f(x) অপেক্ষককে অযুগ্ম অপেক্ষক বলা হয় .

 

উদাহরণ 3. ϕ(x)=2mx+1 হলে , দেখাও যে , ϕ(a)ϕ(b)ϕ(c)=4ϕ(a+b+c)

সমাধান :- ϕ(x)=2mx+1 

সুতরাং , ϕ(a)=2ma+1;ϕ(b)=2mb+1;ϕ(c)=2mc+1

ϕ(a)ϕ(b)ϕ(c)=2ma+12mb+12mc+1=2ma+1+mb+1+mc+1=222m(a+b+c)+1=4ϕ(a+b+c)

 

উদাহরণ 4. y=f(x)=lx+mnxl হলে , প্রমাণ করো যে , f(y)=x    [H.S. '90,'96]

সমাধান :- f(x)=lx+mnxl

অতএব f(y)=ly+mnyl এবং y=lx+mnxl

f(y)=llx+mnxl+mnlx+mnxll=l2x+ml+mnxmlnxlnlx+mnnlx+l2nxl=l2x+mnxl2+mn=x(l2+mn)(l2+mn)=x

 

উদাহরণ 5. f(x) = cos12x এর সংজ্ঞার ক্ষেত্র নির্ণয় করো।                                        [Jt.Ent. '98]

সমাধান :- স্পষ্টতই f(x) অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্র হবে 

12x112x12 

 

উদাহরণ 6. y = f(x)=x1+x2 অপেক্ষকের পাল্লার ক্ষেত্র নির্ণয় করো।             [H.S. '94,'96]

সমাধান :- 

y=x1+x2x2yx+y=0x=1±14y22y

যেহেতু x বাস্তব ও সসীম তাই y0 হবে এবং 14y20 হবে। 

 14y2014y204y21y214y±1212y12

আবার দেখা যাচ্ছে যখন x = 0 , তখন y = 0 .

অতএব প্রদত্ত অপেক্ষকের পাল্লা হবে {y:yR,12y12}

 

উদাহরণ 7. দেখাও যে f(x)=loge(1x1+x) একটি অযুগ্ম অপেক্ষক। এই অপেক্ষকটির সংজ্ঞার ক্ষেত্র নির্ণয় করো। দেখাও যে , 

f(x1)+f(x2)=f(x1+x21+x1x2);x1,x2(1,1)                                                                    [H.S. '92]

সমাধান :- 

f(x)=loge(1x1+x)f(x)=loge[1(x)1+(x)]=loge(1+x1x)=loge(1+x)loge(1x)=[loge(1x)loge(1+x)]=loge(1x1+x)=f(x)

অতএব f(x) একটি অযুগ্ম অপেক্ষক। 

f(x) অপেক্ষক সংজ্ঞাত হয় যখন 

1x1+x>0(1x)(1+x)(1+x)2>01x2<0x2<1x<±11<x<1

অতএব নির্ণেয় অপেক্ষকের সংজ্ঞার ক্ষেত্র হবে {x:xR,1<x<1}

f(x1)=loge(1x11+x1);f(x2)=loge(1x21+x2)f(x1)+f(x2)=loge(1x11+x1)+loge(1x21+x2)=loge[(1x11+x1)×(1x21+x2)]=loge(1x1x2+x1x21+x1+x2+x1x2)=loge[1x1x2+x1x21+x1x21+x1+x2+x1x21+x1x2]=loge[1x1+x21+x1x21+x1+x21+x1x2]=f(x1+x21+x1x2)

 

 

 

Related Items

করণীর কার্যপ্রণালী (Operations with Surds)

করণীর যোগফল ও বিয়োগফল(Addition and subtraction of Surds): করণীর যোগফল বা বিয়োগফল নির্ণয় করতে হলে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে ।

বিভিন্ন প্রকার করণী (Different types of Surds)

সমমূলীয় ও অসমমূলীয় করণী (Equiradical and unequiradical surds): একাধিক করণী ক্রম সমান হলে তাদের সমমূলীয় করণী বলে ।

দ্বিঘাত করণীর কয়েকটি ধর্ম (Properties of Quadratic Surds)

1. দুটি অসদৃশ দ্বিঘাত করণীর গুণফল মূলদ রাশি হতে পারে না, 2. একটি সরল দ্বিঘাত করণী কখনও একটি মূলদ রাশি ও একটি দ্বিঘাত করণীর যোগফল বা অন্তরফল সমান হতে পারে না ।, 3. একটি সরল দ্বিঘাত করণী কখনও দুটি অসদৃশ সরল দ্বিঘাত করণীর যোগফল বা অন্তরফলের সমান হতে পারে না ।

করণীর সংক্ষিপ্তকরণ (Summary of Surds)

করণীর সংক্ষিপ্তকরণ (Summary of Surds) 1. একটি ধনাত্মক রাশি কোনো মূল সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব না হলে সেই মূলকে করণী বলে । 2. কোনো করণীর মূল সূচক সংখ্যা n হলে তাকে nতম ক্রমের করণী বলে ।

সূচক সংক্রান্ত সমীকরণ ও অভেদ

সূচক সংক্রান্ত সমীকরণ ও অভেদ গুলির আলোচনা [Equations and Identities Involving Indices]