স্থানাঙ্ক জ্যামিতি : দূরত্ব নির্ণয়

Submitted by arpita pramanik on Thu, 06/27/2019 - 11:37

স্থানাঙ্ক জ্যামিতি : দূরত্ব নির্ণয় (Co-ordinate Geometry : Distance formula)

সূচনা (Introduction)

আমরা graph কাগজে যেমন বিভিন্ন বিন্দুকে স্থাপন করতে পারি তেমনি ওই বিন্দু গুলির সাহায্যে বিভিন্ন জ্যামিতিক চিত্র , সরলরেখা অঙ্কন করা যায় । দেখা যাচ্ছে বিন্দু গুলির স্থানাঙ্ক জানা থাকলে সেগুলি যোগ করে বিভিন্ন সমতলিক জ্যামিতিক চিত্র পাওয়া যায় । আবার বিভিন্ন বীজগাণিতিক দুই চল বিশিষ্ট রৈখিক সমীকরণের জ্যামিতিক আকার সম্মন্ধে ঠিক মতো ধারণা করা যায় । 

এইভাবে বীজগণিতের সাহায্যে বিভিন্ন জ্যামিতিক আকারের ধারণা গড়ে ওঠাকে স্থানাঙ্ক জ্যামিতি (Co-ordinate Geometry) বলা হয় । 

অর্থাৎ স্থানাঙ্ক জ্যামিতিতে বীজগণিতের সাহায্যে জ্যামিতির ধারণা করতে পারি 

তাই স্থানাঙ্ক জ্যামিতি ব্যাপকতরভাবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ব্যবহার করা হয় । 

 

মূলবিন্দু (0,0) থেকে অক্ষরেখার উপরে অবস্থিত যেকোনো বিন্দুর স্থানাঙ্ক নির্ণয় 

স্থানাঙ্ক

এখানে দুটি লম্ব অক্ষ হল XOX' ও YOY' এবং O(0,0) হল মূলবিন্দু  .

এখানে A(5,0) ও B(0,8) দুটি বিন্দু । আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি A ও B বিন্দু দুটি মূলবিন্দু থেকে যথাক্রমে 5 একক ও 8 একক দূরত্বে অবস্থিত । সুতরাং x অক্ষের উপরে অবস্থিত যেকোনো বিন্দুর স্থানাঙ্ক তার ভুজের ধনাত্মক মান । অনুরূপে y অক্ষের উপরে অবস্থিত যেকোনো বিন্দুর স্থানাঙ্ক হবে কোটির ধনাত্মক মান । 

 

 

 

 

 

লম্ব অক্ষের উপর অবস্থিত যেকোনো দুটি বিন্দুর দূরত্ব নির্ণয় 

স্থানাঙ্ক মনে করি A(x,0) ও B(0,y) দুটি বিন্দু যথাক্রমে x অক্ষ ও y অক্ষের উপরে অবস্থিত । 

মূলবিন্দু থেকে A বিন্দুর দূরত্ব হল x একক অর্থাৎ OA = x একক 

অনুরূপে মূলবিন্দু থেকে B বিন্দুর দূরত্ব হল y একক অর্থাৎ OB = y একক 

এখন পিথাগোরাসের উপপাদ্য ব্যবহার করে পাই 

(AB)2=(OA)2+(OB)2AB=(OA)2+(OB)2=x2+y2

 

উদাহরণ : রোহিত x অক্ষের উপরে একটি বিন্দু M(6,0) এবং y অক্ষের উপরে একটি বিন্দু N(0,8) নিয়েছে । এখন MN এর দৈর্ঘ্য নির্ণয় করে দেখি । 

স্থানাঙ্ক M বিন্দুর স্থানাঙ্ক (6,0) এবং N বিন্দুর স্থানাঙ্ক (0,8)

অতএব OM = 6 একক এবং ON = 8 একক 

অতএব 

MN=62+82=36+64=100=10

অতএব MN = 10 একক । 

 

মূলবিন্দু থেকে যেকোনো বিন্দুর দূরত্ব নির্ণয় 

স্থানাঙ্ক মনে করি P(x,y) যেকোনো বিন্দু। মূলবিন্দু O(0,0) থেকে এর দূরত্ব নির্ণয় করতে হবে । 

P(x,y) বিন্দু থেকে x অক্ষের উপর PM লম্ব টানা হল। অতএব M এর স্থানাঙ্ক হবে (x,0) .

এখন OM = x একক এবং PM = y একক । 

পিথাগোরাসের উপপাদ্য প্রয়োগ করে পাই 

OP2=OM2+PM2OP=OM2+PM2=x2+y2

মূলবিন্দু থেকে  P(x,y) বিন্দুর দূরত্ব হল x2+y2 একক । 

 

উদাহরণ : মূলবিন্দু থেকে (3,4) বিন্দুর দূরত্ব নির্ণয় করো 

স্থানাঙ্ক মূলবিন্দু থেকে (3,4) বিন্দুর দূরত্ব 

=32+42 একক 

=9+16 একক 

=25 একক 

= 5 একক 

 

 

যেকোনো দুটি বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্ণয় 

স্থানাঙ্ক মনে করি A ও B দুটি বিন্দুর স্থানাঙ্ক হল যথাক্রমে (x1,y1) এবং (x2,y2) .

আমাদের A ও B বিন্দু দুটির মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্ণয় করতে হবে । 

A ও B বিন্দু থেকে x অক্ষের উপরে দুটি লম্ব যথাক্রমে AM ও BN অঙ্কন করা হল ।

A বিন্দু থেকে BN এর উপর AP লম্ব অঙ্কন করলাম । 

 A ও B দুটি বিন্দুর স্থানাঙ্ক হল যথাক্রমে (x1,y1) এবং (x2,y2) .

অতএব OM=x1 এবং ON=x2

AM=y1 এবং BN=y2

AP = MN = ON - OM = x2x1

এবং BP = BN - PN = BN - AM = y2y1

অতএব সমকোণী ত্রিভুজ ABP তে পিথাগোরাগের উপপাদ্য প্রয়োগ করে পাই 

AB=AP2+BP2=(x2x1)2+(y2y1)2

অতএব A(x1,y1) ও B(x2,y2) বিন্দুদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্ব হল 

(x2x1)2+(y2y1)2 একক .

 

উদাহরণ : (2,4) ও (5,7) বিন্দুর দূরত্ব নির্ণয় করো 

এখানে x1=2 , y1=4 , x2=5 এবং y2=7

অতএব নির্ণেয় দূরত্ব 

=(52)2+(74)2 একক 

=32+32 একক 

=9+9 একক 

=18 একক 

=92 একক 

*****

Comments

Related Items

সামন্তরিকের প্রথম উপপাদ্য

কোনো চতুর্ভুজের একজোড়া বিপরীত বাহু সমান এবং সমান্তরাল হলে অপর জোড়া বিপরীত বাহুও সমান এবং সমান্তরাল হবে অর্থাৎ চতুর্ভুজটি একটি সামান্তরিক হবে।

উৎপাদকে বিশ্লেষণ (Factorisation)

মনে করি x রাশির যদি সর্বোচ্চ ঘাত 2 হয় সেই রাশিকে দ্বিঘাত রাশি বলে। যেমন Equation1 এই রাশির সর্বোচ্চ ঘাত 2 . এর তিনটি পদের সোহাগ যথাক্রমে 1 , 3 , 2. এবার এই মধ্যে সোহাগ 3 কে বিশ্লেষণ করে কিরূপে রাশিটিকে উৎপাদকে বিশ্লেষণ

সরল সুদ কষার উদাহরণ ও সমাধান

সমস্যাটিতে তিনটি বিষয় আছে বলে এখানে বহুরাশিক পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে । যথা (i) আসল ও মোট সুদের মধ্যে এবং (ii) সময় ও মোট সুদের মধ্যে । (i) সময় অপরিবর্তিত আছে ধরে নিলে, আসলের সঙ্গে মোট সুদের সরল সম্পর্ক । এখানে আসল বেড়েছে তাই সুদ বাড়বে অর্থাৎ ভগ্নাংশটি

লাভ-ক্ষতি সংক্রান্ত অঙ্কের সমাধান

লাভ-ক্ষতি সংক্রান্ত অংকের সমাধান (Solution of Profit and Loss ), বিভিন্ন পরীক্ষায় আগত প্রশ্নপত্র আলোচনা করা হলো

লাভ-ক্ষতি (Profit and Loss)

ক্রয়মূল্য ( Cost Price ): যে মূল্যের বিনিময়ে কোনো জিনিস ক্রয় বা কেনা হয় তাকে ওই জিনিসের ক্রয়মূল্য বলে। উৎপাদন মূল্য : কোনো জিনিস তৈরি করতে যে টাকা খরচ হয় তাকে ওই জিনিসের উৎপাদন মূল্য বলে।