স্বাধীনতা দিবস উদযাপন, ২৬শে জানুয়ারী ১৯৩০

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 04/23/2012 - 19:32

স্বাধীনতা দিবস উদযাপন, ২৬শে জানুয়ারী, ১৯৩০ (Celebration of Independence Day, 26th January 1930) :

১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে ডিসেম্বরে লাহোরে অনুষ্ঠিত জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনের পর ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২রা জানুয়ারি লাহোরে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহক কমিটির বৈঠক বসে । জাতির সামনে স্বাধীনতার আদর্শ তুলে ধরার উদ্দেশ্যে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্দেশ মতো ও জওহরলাল নেহরুর সিদ্ধান্ত অনুসারে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি দেশ জুড়ে স্বাধীনতা দিবসরূপে উদযাপিত হবে বলে স্থির হয় । সিদ্ধান্ত মতো ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি গ্রাম থেকে শহরের প্রতিটি অঞ্চলে বিপুল উৎসাহে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালিত হয় । ওই দিন গান্ধিজি রচিত এবং কংগ্রেস কার্যনির্বাহক কমিটি কর্তৃক গৃহীত একটি শপথ বাক্য দেশের সর্বত্র পল্লি ও শহরাঞ্চলে পাঠ করা হয় । লক্ষ লক্ষ দেশবাসী দিনটিতে স্বাধীনতার শপথ গ্রহণ করেন । এই শপথ বাক্যে ঘোষণা করা হয়, "ভারতবাসীর পরিশ্রমের ফলভোগ এবং সুযোগ-সুবিধা দ্বারা জীবন বিকাশের জন্য স্বাধীনতা অর্জন করা তাহাদের জন্মগত অধিকার । যদি কোনো সরকার তাহাদের জনগনকে তাহাদের অধিকার হইতে বঞ্চিত করে এবং তাহাদের ওপর অত্যাচার করে তবে ওই সরকারের পরিবর্তন বা উচ্ছেদ করিবার অধিকার ওই জনসাধারণের আছে । সুতরাং পূর্ণ স্বরাজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আমরা আইন অমান্য আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হইব" । সেদিনের সেই অভূতপূর্ব উৎসাহ উদ্দীপনার পর থেকে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তি পর্যন্ত প্রতিবছর ২৬শে জানুয়ারি দিনটি ভারতের স্বাধীনতা দিবস রূপে পালিত হয় । জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের ইতিহাসে ওই দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে স্বাধীন ভারতের শাসনতন্ত্র ওই দিনেই গৃহীত হয়েছে । ভারতবাসীর কাছে তাই এই দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম ।

*****

Related Items

বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলন (Wahabi Movement in Bengal)

ওয়াহাবি আন্দোলন (Wahabi Movement) : ‘ওয়াহাবি’ শব্দের অর্থ হল ‘নবজাগরণ’ । আরব দেশে আব্দুল ওয়াহাব নামে এক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের সংস্কারের জন্য এই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন । ভারতবর্ষে ওয়াহাবি আন্দলনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন উত্তরপ্রদেশের রায়বেরি

সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০ খ্রিষ্টাব্দ)

সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ (Sanyasi-Fakir Rebellion):- ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন ও শোষনের বিরুদ্ধে অবিভক্ত বাংলার ঢাকায় ১৭৬৩ থেকে ১৮০০  খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত 'গিরি' ও 'দাশনামী' সম্প্রদায়ভুক্ত সন্ন্যাসী ও 'মাদারী' সম্প্রদায়ভুক্ত ফকিরদের নেতৃত্বে যে কৃষকবিদ্রোহ

পাগলপন্থী বিদ্রোহ (প্রথম পর্ব ১৮২৫ - ২৭ খ্রিস্টাব্দে)

পাগলপন্থী বিদ্রোহ (Pagal Panthi Revolt) : ঊনিশ শতকে বাংলায় যেসব কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল সেগুলির মধ্যে 'পাগলপন্থী' বিদ্রোহ বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল । ঔপনিবেশিক শাসনকালে অবিভক্ত বাংলায় ময়মনসিং জেলার শেরপুর পরগনার পাহাড়ি এলাকায় গারো ও

মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে)

মুন্ডা বিদ্রোহ (Munda Rebellion):- বর্তমান ঝাড়খন্ড রাজ্যের রাঁচিসহ ছোটোনাগপুর অঞ্চলে এবং তৎসংলগ্ন মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা ও বাংলার একাংশে মুন্ডা উপজাতিরা বসবাস করত । ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে রাঁচিতে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায় বিরসা মুন্ডার নেতৃ

সাঁওতাল হুল (১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দ)

সাঁওতাল বিদ্রোহ (Santhal rebellion) : ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে যে সমস্ত আদিবাসী বিদ্রোহগুলি ঘটেছিল সেগুলির মধ্যে 'সাঁওতাল বিদ্রোহ' বা 'সাঁওতাল হুল' সবথেকে ভয়াবহ ও জঙ্গি ছিল । সাঁওতালি ভাষায় বিদ্রোহকে হুল বলা হয় । সাঁওতালগণ