আব্দুল গফফর খান (Abdul Ghaffar Khan) :
মহাত্মা গান্ধির অনুসৃত আদর্শ ও কর্মপন্থার একনিষ্ঠ অনুরাগী খান আব্দুল গফফর খানের নেতৃত্বে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে আইন অমান্য আন্দোল ব্যাপক আকার ধারণ করে । এজন্য তাঁকে সীমান্ত গান্ধি নামে (Frontier Gandhi) অভিহিত করা হয় । ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি রাওলাট বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন এবং ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে সীমান্ত প্রদেশে খিলাফৎ আন্দোলন সংগঠিত করেন । কংগ্রেসের নীতি অনুসরণ করে তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে 'খোদা-ই-খিদমদগার' নামে একটি দল গঠন করেন । 'খোদা-ই-খিদমদগার' -এর অর্থ হল ঈশ্বরের সেবক । এই দলের অনুগামীদের পোশাক লাল ছিল বলে একে লালকুর্তাও বলা হত । খান আব্দুল গফফর খানের নেতৃত্বে খোদা-ই-খিদমদগার অসহযোগ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল । ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে এই দল কংগ্রেসে যোগদান করে । উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ সহ দেশের অন্যান্য অংশে আইন অমান্য আন্দোলনের ক্রমবিস্তার এবং গতিবেগ ইংরেজ সরকারের গভীর চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে । নিষ্ঠুর অত্যাচার ও নির্যাতন সত্ত্বেও ব্রিটিশ সরকার জাতীয়তাবাদীদের কন্ঠরোধ করতে পারেনি । কোনো কোনো স্থানে জনসাধারণ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করলেও এই অহিংস আন্দোলন মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিল । মহাত্মা গান্ধি, জওহরলাল নেহরু সমেত শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে ব্রিটিশ সরকার আন্দোলনকারীদের মনোবল ভেঙ্গে দেয় । আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারীদের ওপর নানা প্রকার অর্থনৈতিক নির্যাতন, তাঁদের বিষয়সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা এবং স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের ওপর ক্রমাগত পুলিশি অত্যাচারের ফলে আন্দোলনের গতি ক্রমশ স্তিমিত হয়ে আসে । অবশেষে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৫ই মার্চ গান্ধি-আরউইন চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে এই আইন অমান্য আন্দোলনের অবসান হয় ।
*****
- 2285 views