শ্রীরামকৃষ্ণ (Shri Ramakrishna Paramhansadeva)

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 04/22/2012 - 23:06

শ্রীরামকৃষ্ণ (Shri Ramakrishna Paramhansadeva) :

উনবিংশ শতাব্দীর ধর্ম ও সংস্কৃতির আকাশে এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হলেন শ্রীরামকৃষ্ণ । পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমায় অবস্থিত কামার পুকুর গ্রামে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ই ফেব্রুয়ারী এক দরিদ্র ধর্মনিষ্ঠ রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ পরিবারে রামকৃষ্ণ পরমহংসের জন্ম হয় । তিনি পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় এবং মা চন্দ্রমণি দেবীর চতুর্থ ও শেষ সন্তান । পাশ্চাত্য ভাব সংঘাতে হিন্দুধর্ম যখন কোণঠাসা, বিভিন্ন ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষ যখন নিজ নিজ ধর্মের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় তৎপর, তখনই সর্ব-ধর্ম সমন্বয়ের বাণী নিয়ে বাংলায় আবির্ভুত হলেন ভারত আত্মার বাণীমূর্তি শ্রীরামকৃষ্ণ । ব্যক্তিগত জীবনে হিন্দু, ইসলাম, খ্রিস্টান প্রভৃতি নানা ধর্মের সাধনা করে তিনি এই সত্যে উপনীত হয়েছিলেন যে, সব ধর্মই এক । তাঁর সর্ব-ধর্ম সমন্বয়ের বাণী 'যত মত তত পথ' সব সম্প্রদায়ের মানুষকে একত্র করে সে যুগে তো বটেই আজও ভারত তথা বিশ্ববাসীকে নতুন পথের সন্ধান দিয়ে চলেছে । তাই শ্রীরামকৃষ্ণের আবির্ভাবকাল উনবিংশ শতাব্দী সমন্বয়ের যুগ (Age of synthesis) রূপে চিহ্নিত । ভারতীয় সংকৃতির যে মর্মবাণী—  বিভেদ নয়, ঐক্য, প্রতিযোগিতা নয়—  শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, অসহিষ্ণুতা নয়— গ্রহণ-ক্ষমতা, শ্রীরামকৃষ্ণ হলেন সেই শাশ্বত বাণীর বার্তাবহ । সাধনার গভীরে মগ্ন থেকে তিনি জীবের মধ্যে শিবের প্রত্যক্ষ রূপটিকে উপলব্ধি করেছিলেন । তাই তাঁর কথা, জীবে দয়া নয়, শিবজ্ঞানে জীবসেবা । শ্রীরামকৃষ্ণের যোগ্য শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর গুরুর সেই 'শিব জ্ঞানে জীবসেবা' র আদর্শকে রূপ দিতে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে ১ মে 'রামকৃষ্ণ মিশন' এবং ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে ৯ই ডিসেম্বর বেলুড়ে 'শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ' প্রতিষ্ঠা করেন । আজ ভারত ও ভারতের বাইরে শতাধিক কেন্দ্রে রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ নির্দেশিত পথে সন্ন্যাসী ও গৃহী ভক্তগণ সমাজসেবা, শিক্ষাবিস্তার ও নানা জনকল্যাণমূলক কাজ করে চলেছেন ।  ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে ১৬ ই অগস্ট  শ্রীরামকৃষ্ণ পরলোক গমন করেন ।

*****

Related Items

বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (Indian universities Act, 1904)

লর্ড কার্জন প্রতিক্রিয়াশীল শাসক হলেও শিক্ষার ব্যাপারে তিনি খুবই উৎসাহী ছিলেন । লর্ড কার্জন স্যার টমাস র‍্যালের সভাপতিত্বে ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে 'র‍্যালে কমিশন' গঠন করেছিলেন । এটি 'ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন' নামেও পরিচিত । স্যার টমাস র‍্যালে ছিলেন বড়লাটের কার্যনির্বাহক সমিতির আইন সদস্য । এই কমিশন ...

হান্টার কমিশন (Hunter Education Commission)

১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে লর্ড রিপণের সময় উইলিয়াম হান্টারের নেতৃত্বে হান্টার কমিশন গঠিত হয় । এই কমিশনের কাজ ছিল দেশে ইংরেজি শিক্ষার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা । শিক্ষার প্রসারে হান্টার কমিশনের ভূমিকা এক অভিনব অধ্যায়ের সূচনা করেছিল । হান্টার কমিশনের সুপারিশগুলি ছিল ....

উডের ডেসপ্যাচ (Wood's Despatch of 1854)

শিক্ষা সংক্রান্ত নানা সমস্যার সমাধান করার জন্য ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির পরিচালক সমিতির সভাপতি স্যার চার্লস উড 'শিক্ষা বিষয়ক প্রস্তাব' (Wood's Education Despatch) নামে একটি শিক্ষা নীতি রচনা করে ভারতে পাঠান । ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে চার্লস উডের সুপারিশ ...

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ:-

মাধ্যমিকের নমুনা প্রশ্ন:-

১. ভারতে 'হাফটোন' প্রিন্টিং পদ্ধতি প্রবর্তন করেন—     [মাধ্যমিক-২০১৭]

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা

বহু বিকল্পীয় প্রশ্নোত্তর (M.C.Q) - সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা:-

মাধ্যমিকের নমুনা প্রশ্ন:-

১. ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হল—       [মাধ্যমিক -২০১৭]