ভারতের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর যোগ্যতা উল্লেখ কর । ভারতের সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা আলোচনা কর ।

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 01/23/2022 - 14:35

প্রশ্ন : ভারতের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর যোগ্যতা উল্লেখ কর । ভারতের সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা আলোচনা কর ।

ভারতের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর যোগ্যতাবলী—

(ক) রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে অবশ্যই ভারতের নাগরিক হতে হবে ।

(খ) তাঁর বয়স অন্তত ৩৫ বছর বা তার বেশি হতে হবে ।

(গ) রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হওয়ার সময় তিনি সংসদ বা রাজ্যবিধান সভার সদস্য অথবা কোনও সরকারি বা বেসরকারি পদে অথবা অর্থ প্রাপ্তি হয় এমন কোনোও পদে নিযুক্ত থাকতে পারবেন না ।

(ঘ) তাঁকে লোকসভায় নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে ।

ভারতের সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে ছয় ধরনের ক্ষমতার অধিকার প্রদান করেছে । এগুলি হল—

(১) শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতা : কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদ রাষ্ট্র শাসন পরিচালনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতিকে জানাতে বাধ্য থাকেন । ভারতের এটর্নি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের নিয়োগ ও পদচ্যুত করার অধিকার রাষ্ট্রপতির রয়েছে । এছাড়া তিনি সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতি, অডিটর জেনারেল, নির্বাচন কমিশনার, সশস্ত্র বাহিনীত্রয়ের তিনি প্রধান এবং ইউনিয়ন পাব্‌লিক সার্ভিস কমিশনের সদস্যদের নিয়োগ করেন । ভারতের রাষ্ট্রপতি তার পদাধিকার বলে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীত্রয়ের সর্বাধিনায়ক ।

(২) আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা : সংসদীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের রীতি অনুসারে রাষ্ট্রপতি হলেন কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা বিভাগ বা সংসদের একটি অংশ । রাষ্ট্রপতির সম্মতি ছাড়া কোনো বিল আইনে পরিণত হতে পারে না । অর্থবিল (money bill) ছাড়া অন্য যে কোনো বিলকে পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদের উভয় পরিষদে ফেরত পাঠাতে পারেন ।

(৩) অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা : রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ছাড়া ব্যয়-মঞ্জুরি সংক্রান্ত কোনও বিল সংসদে উত্থাপন করা যায় না । রাষ্ট্রপতির আয়ব্যয় সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে একটি বিবৃত সাধারণত অর্থমন্ত্রীর মারফত, সংসদের উভয় সভায় পেশ করান, এই বিবৃতিকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট বলা হয় । এছাড়া রাষ্ট্রপতির হাতে রাষ্ট্রের আকস্মিক ব্যয় সংকুলানের জন্য একটি বিশেষ তহবিল থাকে ।

(৪) বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা : বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া দন্ডিত ব্যক্তিকে ক্ষমা করার বা তার দন্ডাদেশ হ্রাস করার অথবা দন্ডাদেশ স্থগিত রাখার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির আছে ।

(৫) জরুরি ক্ষমতা : ভারতের সংবিধান অনুসারে তিনটি বিশেষ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন, একে রাষ্ট্রপতির জরুরি ক্ষমতা বলে, যেমন—

(ক) জাতীয় জরুরি অবস্থা (যুদ্ধ, বৈদেশিক আক্রমণ ও নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে),

(খ) রাজ্যগুলিতে শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থাজনিত জরুরি অবস্থা (রাষ্ট্রপতি শাসন) এবং আর্থিক জরুরি অবস্থা (সমগ্র দেশ বা দেশের কোনো অংশের আর্থিক স্থায়িত্ব ও সুনাম এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়) ।

(৬) রাজ্য সংক্রান্ত ক্ষমতা : রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপালদের নিয়োগ করে থাকেন । রাজ্যের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় বিধান সভায় পেশ করার আগে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রয়োজন হয় । 

*****

Comments

Related Items

বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট

বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট (The Bengal Technical Institute) :-

ব্রিটিশ আমলে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে স্বদেশি আন্দোলনের সময় ব্রিটিশ সরকারের শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প হিসাবে বাংলায় স্বদেশি উদ্যোগে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ (National Council of Education)

জাতীয় শিক্ষা পরিষদ (National Council of Education):-

ব্রিটিশ আমলে লর্ড কার্জনের সময় ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাকে দ্বিখন্ডিত করার পর স্বদেশী আন্দোলন শুরু হলে ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প রূপে দেশীয় প্রগতিশীল স্বদেশী ধাঁচে বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রস

বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ

বাংলায় কারিগরি শিক্ষার বিকাশ (Development of Technical Education in Bengal) :-

ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে বাংলায় পাশ্চাত্য ধাঁচের কারিগিরি শিক্ষার অস্তিত্ব ছিল না । ঊনিশ শতক থেকে বাংলায় আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার ও বিজ্ঞান শিক্ষার অগ্

বসু বিজ্ঞান মন্দির (Bose Institute)

বসু বিজ্ঞান মন্দির (Bose Institute):-

ঔপনিবেশিক ভারতে আধুনিক বিজ্ঞানচর্চা ও বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশের উদ্দেশ্যে যেসকল প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল 'বসুবিজ্ঞান মন্দির' বা বোস ইনস্টিটিউট । ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে নভেম্বর জগদীশচন্দ্র বসু ইংল্যান্ডের র

কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ

কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ (The Calcutta Science College) :-

১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে বাংলায় স্বদেশি ও বয়কট আন্দোলন অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে ওঠে । এই সময় স্বদেশি বিজ্ঞানচর্চার প্রসার ঘটানোর উদ্দেশ্যে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে মা