জাতীয় শিক্ষা পরিষদ (National Council of Education):-
ব্রিটিশ আমলে লর্ড কার্জনের সময় ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাকে দ্বিখন্ডিত করার পর স্বদেশী আন্দোলন শুরু হলে ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থার বিকল্প রূপে দেশীয় প্রগতিশীল স্বদেশী ধাঁচে বাংলায় বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে একটি শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয় । এই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করার জন্য ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই নভেম্বর কলকাতায় আয়োজিত এক শিক্ষা সম্মেলনে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব গৃহীত হয় । রাজা সুবোধ মল্লিক ও ব্রজেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠনের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দান করার প্রতিশ্রুতি দেন । ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১লা জুন জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয় । রাসবিহারী ঘোষ এই পরিষদের সভাপতি হন এবং আশুতোষ চৌধুরী ও হীরেন্দ্রনাথ দত্ত যুগ্ম সভাপতি হন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখ এই পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । জাতীয় শিক্ষা পরিষদের প্রতিষ্ঠাকে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় স্বদেশি আন্দোলনের প্রথম বৃহৎ গঠনমূলক প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেন । জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রথম দিকে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করে— (i) সাধারণ বিজ্ঞান ও কলাবিদ্যার জন্য বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ, (ii) কারিগরি শিক্ষার জন্য বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট । কারিগরি শিক্ষাকে সর্বজনীন ও বাধ্যতামূলক করার জন্য জাতীয় শিক্ষা পরিষদ উদ্যোগ নেয় । জাতীয় শিক্ষা পরিষদ বাংলা ভাষার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করে ।
****