(ক) পোল্যান্ড-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি, (খ) মিউনিখ চুক্তি, (গ) রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি— এই চুক্তিগুলি হিটলার কেন স্বাক্ষর করেছিলেন ?

Submitted by administrator on Wed, 01/12/2022 - 15:43

প্রশ্ন:- (ক) পোল্যান্ড-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি, (খ) মিউনিখ চুক্তি,  (গ) রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি— এই  চুক্তিগুলি হিটলার কেন স্বাক্ষর করেছিলেন ?

(ক) পোল্যান্ড-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি : ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে জার্মান ও পোল্যান্ডের মধ্যে ১০ অনাক্রমণ চুক্তির স্বাক্ষরিত হয় । এই চুক্তির পিছনে হিটলারের উদ্দেশ্য ছিল পোল্যান্ড ও বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে প্রতিপন্ন করা যে, অদুর ভবিষ্যতে তাঁর নেতৃত্বাধীন জার্মানির দ্বারা পোল্যান্ডের আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই । এছাড়া বন্ধুভাবাপন্ন ফ্রান্সের সঙ্গে পোল্যান্ডের মিত্রতার অবসান ঘটিয়ে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেওয়াই ছিল পোল্যান্ড-জার্মানি অনাক্রমণ চুক্তির উদ্দেশ্য ।

(খ) মিউনিখ চুক্তি : ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে সেপ্টেম্বর ইতালির ফ্যাসিস্ত ডিক্টেটর মুসোলিনির মধ্যস্থতায় জার্মানির মিউনিখ শহরে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী চেম্বারলেন, ফরাসি প্রধান দালাদিয়ার ও হিটলারের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা ‘মিউনিখ চুক্তি’ নামে পরিচিত । এই চুক্তি অনুসারে চেকোশ্লোভাকিয়ার সুদেতান অঞ্চল জার্মানিকে হস্তান্তর করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং তার বিনিময়ে হিটলার চেকোশ্লোভাকিয়ার বাকি অংশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন । এইভাবে ইঙ্গ-ফরাসি পক্ষের ফ্যাসিস্ট তোষণ নীতিকে হাতিয়ার করে চেকোশ্লোভাকিয়ার বিরাট অংশকে বিনাযুদ্ধে দখল করাই ছিল হিটলারের মিউনিখ চুক্তি স্বাক্ষরের মুল উদ্দেশ্য ।

(গ) রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি : জার্মানির আসন্ন পোল্যান্ড আক্রমণের সময় সম্ভাব্য ইঙ্গ-ফরাসি বিরোধীতার সময় সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রকে নিরপেক্ষ রাখার উদ্দেশ্যে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে আগস্টের মধ্যরাত্রে হিটলার রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষর করেন । ভবিষ্যতে জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণের সময় সম্ভাব্য ইঙ্গ-ফরাসি বিরোধিতার মুখে সোভিয়েট যুক্তরাষ্ট্রকে নিরপেক্ষ রেখে যুদ্ধের পরিধিকে জার্মানির পশ্চিম সীমান্তে সীমাবদ্ধ করে সীমিত রাখাই ছিল হিটলারের রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরের প্রধান উদ্দেশ্য ।

*****

Comments

Related Items

বিশ শতকের ভারতে দলিত রাজনীতি ও আন্দোলনের বিকাশ

বিশ শতকের ভারতে দলিত রাজনীতি ও আন্দোলনের বিকাশ(Development of Dalit Politics and Movements in Twentieth Century India):-

বিশ শতকের প্রথমার্ধে ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী যে জাতীয় আন্দোলনগুলি সংঘটিত হয় তার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ চারটি জাতীয় আন্দ

বীণা দাস (Bina Das)

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে যাঁদের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে আছে তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন বাংলার বিপ্লবী বীণা দাস । তিনি ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে আগস্ট নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁদের আদি বাসস্থান ছিল চট্টগ্রামে । তাঁর পিতার নাম বেণী মাধব দাস ও মাতার নাম সরলা দাস ...

মাস্টারদা সূর্যসেন (Surya Sen)

ভারতবর্ষের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত সূর্য সেন বা সূর্যকুমার সেন যিনি মাস্টারদা নামে সমধিক পরিচিত । তাঁর ডাকনাম ছিল কালু । সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২শে মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর বাবার নাম রাজমনি সেন এবং মায়ের নাম শশীবালা সেন ...

বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স (Bengal Volunteers)

বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স (Bengal Volunteers):-

গান্ধিজির নেতৃত্বে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ডাকা অহিংস অসহযোগ আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পরে ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে 'বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স' সংগঠনটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে । ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জাতীয়

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণ

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণ (Students' Role in Armed Revolutionary Struggles) :-

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরাধীন জাতির মুক্তি সংগ্রামে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে । ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসেও জাতীয