মানবদেহে উৎসেচকের প্রয়োজনীয়তা

Submitted by arpita pramanik on Sat, 05/04/2013 - 21:42

মানবদেহে উৎসেচকের প্রয়োজনীয়তা (Importance of Enzymes in Human body)

উৎসেচক (Enzymes)

সংজ্ঞা ( Definition ) : সাধারণত প্রোটিন ধর্মী যে দ্রবণীয় জৈব অনুঘটক সজীব কোষে উৎপন্ন হয় কিন্তু ওই কোষের নিয়ন্ত্রণাধীনে না থেকে না না ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে এবং বিক্রিয়ার শেষে নিজে অপরিবর্তিত থাকে, তাদের উৎসেচক বলে ।

 

উৎসেচকর বৈশিষ্ট্য (Characteristics of enzymes)

  • একটি উৎসেচক কেবল একটি নির্দিষ্ট সাবসট্রেটের ওপর কাজ করতে পারে। উৎসেচকের যে বস্তুর ওপর ক্রিয়া করে তাকে সাবসট্রেট বলে ।
  • উৎসেচকের অনুঘটক হিসাবে কাজ করে এবং বিক্রিয়ার শেষে নিজে অপরিবর্তিত থাকে, বিক্রিয়ার শেষে উৎসেচকের কোনরকম রাসায়নিক গঠনের পরিবর্তন হয় না ।
  • উৎসেচক কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়াকে শুরু করতে পারে না, কেবল রাসায়নিক বিক্রিয়ার হারকে বাড়ায় বা কমায় ।
  • উৎসেচকের সক্রিয়তা একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে। সাধারণত   তাপমাত্রায় উৎসেচকের ক্রিয়া ভালো হয়। বেশী তাপে উৎসেচকের ক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায় ।
  • প্রতিটি উৎসেচক একটি নির্দিষ্ট

 

উৎসেচকের শ্রেণীবিন্যাস (Classification of enzymes)

যে সব উৎসেচক খাদ্য পরিপাকে অংশ গ্রহণ করে তাদের পাচক উৎসেচক বলে। পাচক উৎসেচক তিন প্রকারের

১৷জারক উৎসেচক (Oxidising enzymes) - যে সব উৎসেচক জারন ক্রিয়ায় সহায়তা করে, তাদের জারক উৎসেচক বলে। যেমন – গ্লুকোজ-অক্সিনেজ, ডিহাইড্রোজিনেজ ইত্যাদি ।

২৷ বিজারক উৎসেচক (Reducing enzymes) - যে সব উৎসেচক বিজারন ক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে, তাদের বিজারক উৎসেচক বলে। যেমন – NADP , ADP  ইত্যাদি ।

৩৷  পাচক উৎসেচক (Digestive enzymes) -  যে সব উৎসেচক পাচন ক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে, তাদের পাচক উৎসেচক বলে। পাচক উৎসেচক তিন প্রকারের

(i) অ্যামাইলোলাইটিক (Amylolytic) - যে সব উৎসেচক শর্করা জাতীয় খাদ্য পরিপাক করে, তাদের অ্যামাইলোলাইটিক বলে ।

(ii) প্রোটিওলাইটিক (Proteolytic) - যে সব উৎসেচক প্রোটিন জাতীয় খাদ্য পরিপাক করে তাদের তাদের প্রোটিওলাইটিক বলে ।

(iii) লাইপোলাইটিক (Lipolytic) - যে সব উৎসেচক স্নেহ বা ফ্যাট জাতীয় খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে, তাদের লাইপোলাইটিক বলে ।

 

কী জাতীয় উৎসেচক

উৎসেচকের নাম

উৎস

সাবসট্রেটের নাম

ক্রিয়ায় ফল

অ্যামাইলোলাইটিক (কার্বোহাইড্রেট – বিশ্লিষ্টকারী উৎসেচক)

টায়ালিন

লালাগ্রন্থি

সেদ্ধ শ্বেতসার

মলটোজ

অ্যামাইলেজ

অগ্ন্যাশয় ও আন্ত্রিক গ্রন্থি

শ্বেতসার

মলটোজ

 

সুক্রেজ

আন্ত্রিক গ্রন্থি

সুক্রোজ

গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ

 

ল্যাকটোজ

আন্ত্রিক গ্রন্থি

ল্যাকটোজ

গ্লুকোজ ও  গ্যালাকটোজ

 

মলটেজ

লালাগ্রন্থি, অগ্ন্যাশয় ও আন্ত্রিক গ্রন্থি

মলটোজ

গ্লুকোজ

 

প্রোটিওলাইটিক(প্রোটিন বিশ্লিষ্টকারী উৎসেচক)

পেপসিন

পাকগ্রন্থি

প্রোটিন

পেপটোন

রেনিন

পাকগ্রন্থি

দুগ্ধ প্রোটিন

কেসিন

 

ট্রিপসিন

অগ্ন্যাশয়

পেপটোন

পেপটাইড

 

ইরিপসিন

আন্ত্রিক গ্রন্থি

পেপটাইড

অ্যামাইনো অ্যাসিড

 

লাইপোলাইটিক (ফ্যাট বিশ্লিষ্টকারী উৎসেচক)

লাইপেজ

পাকগ্রন্থি, অগ্ন্যাশয় ও আন্ত্রিক গ্রন্থি

ফ্যাট

ফ্যাটি অ্যাসিড ও গ্লিসারল

*****

Related Items

আরশোলার গমন

চলা ফেরা বা হাঁটার জন্য আরশোলার তিন জোরা সন্ধিল পদ বর্তমান। আরশোলার পৃষ্ঠ দেশে দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ডকে মোট দু জোরা ডানা আছে। আরশোলার দু জোরা ডানার মধ্যে প্রথম ডানা জোরা শক্ত ও পুরু। তারা উড্ডয়নে সাহায্য করে না। দ্বিতীয় ডানা জোরা স্বচ্ছ ও পাতলা ...

কেঁচোর গমন

প্রাণীর নাম – কেঁচো, গমন অঙ্গের নাম, গমনে সাহায্যকারী পেশীর নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - কেঁচোর দেহ খণ্ডতলের অঙ্গীয় তলে অবস্থিত আণুবীক্ষণিক এক আয়তন কণ্টক সদৃশ্য অঙ্গ হল সিটি । সিটির এক প্রান্ত দেহ অভ্যন্তরস্ত থলির মধ্যে থাকে। ...

অ্যামিবার গমন

প্রাণীর নাম - অ্যামিবা, গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - ক্ষনপদ হল অ্যামিবার কোষ পর্দা সমূহ দেহ প্রোটোপ্লাজমের অংশ বিশেষ যা নলাকারে প্রসারিত হয়। গমনের সময় ক্ষনপদ সামনের দিকে প্রসারিত হয় এবং কোনো কঠিন বস্তুর সঙ্গে ক্ষনপদটিকে দৃঢ় ভাবে আবদ্ধ করে।

উদ্ভিদ দেহে ন্যাস্টিক চলন

উদ্ভিদের স্থায়ী অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের তীব্রতা বা ব্যাপ্তি অনুসারে হয় , তখন তাকে ন্যাস্টিক চলন বা ব্যাপ্তি চলন বলে। ন্যাস্টিক চলনের প্রকারভেদ , ফটোন্যাস্টি, থার্মোন্যাস্টি, নিকটিন্যাস্টি, কেমোন্যাস্টি, সিসমোন্যাস্টি। ...

উদ্ভিদ দেহে ট্রপিক চলন

উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের গতিপথ অনুসরন করে হয় তখন তাকে ট্রপিক চলন বা দিকনির্ণীত চলন বা ট্রপিজম বলে। ট্রপিক চলনের প্রকারভেদ, ফটোট্রপিক চলন, ফটোট্রপিক চলনের পরীক্ষা, জিওট্রপিক চলন, জিওট্রপিক চলনের পরীক্ষা, হাইড্রোট্রপিক চলন ...