প্রশ্ন:- হিটলার কীভাবে পররাজ্য গ্রাস শুরু করেছিলেন ? হিটলারের আক্রমণ প্রতিহত না করে পশ্চিমী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি কোন নীতি গ্রহণ করেছিল এবং কেন ? এর ফল কী হয়েছিল ?
ইউরোপ তথা সারা বিশ্বে জার্মানিকে প্রধান শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য হিটলার পররাজ্য গ্রাস বা বিস্তার নীতি অবলম্বন করে । বিস্তারধর্মী পররাষ্ট্রনীতির অঙ্গ হিসাবে ভার্সাই সন্ধির শর্ত উপেক্ষা করে তিনি জার্মানির সামরিক শক্তিকে শক্তিশালী করেন এবং ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনের সঙ্গে নৌ-চুক্তি স্বাক্ষর করেন । ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে হিটলার ইতালির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং পরের বছর লোকার্নো চুক্তির শর্ত উপেক্ষা করে রাইন অঞ্চলে সৈন্য পাঠান । এইভাবে হিটলার পররাজ্য গ্রাস শুরু করেন ।
হিটলারের আক্রমণ প্রতিহত না করে পশ্চিমী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি তোষণ নীতি গ্রহণ করে ছিলেন কারণ —
(১) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স সামরিক শক্তিতে প্রস্তুত ছিল না,
(২) ব্রিটেনের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা কারণ নাৎসি জার্মানি ছিল ব্রিটিশ বাণিজ্য পণ্যের অন্যতম ক্রেতা,
(৩) ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের রুশ সাম্রাজ্যবাদ ভীতি ।
প্রভৃতি কারণে হিটলারের আক্রমণ প্রতিহত না করে নাৎসি জার্মানির প্রতি ব্রিটেন ও ফ্রান্স তোষণ নীতি গ্রহণ করেছিল ।
ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স তোষণ নীতি গ্রহণ করায় নাৎসি জার্মানি শক্তিশালী হয়ে ওঠে । হিটলার আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন । তিনি রাইন ভূখন্ড, অস্ট্রিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া প্রভৃতি দেশগুলিকে একের পর এক আক্রমণ করে দখল করে নেন । অবশেষে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করলে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স তাদের তোষণ নীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় । এই কারণেই ঐতিহাসিকরা হিটলারের প্রতি ইঙ্গ-ফরাসি পক্ষের তোষণ নীতিকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য দায়ী করেছেন ।
*****