নারী ইতিহাস (Women History) : সমগ্র মানবজাতিকে কেন্দ্র করে ইতিহাসের বিষয়বস্তু আবর্তিত হয় । আর এই মানবজাতির অর্ধেক অংশ হল নারী । ঊনিশ শতকের আগে ইতিহাসচর্চায় নারীজাতিকে পুরুষের সমান গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হত না । ইতিহাসে নারী উপেক্ষিতা । শুধু ইতিহাস নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনেও নারীর ভূমিকা সবসময়ই প্রান্তিক । সেই প্রান্তিকতা থেকে সরে এসে ইতিহাসে নারীর ভূমিকা আলোচ্য বিষয়ের মর্যাদা লাভ করেছে । বিভিন্ন সময়কালে সমাজে নারীর পরিবর্তিত অবস্থানের আলোচনা নারী ইতিহাসচর্চার মুখ্য বৈশিষ্ট্য । সমাজ ও সভ্যতার উন্নতি ও প্রগতি পুরুষ ও নারী উভয়ের ওপরই সমানভাবে নির্ভরশীল । এই ধারণাকে স্পষ্ট করা নারী ইতিহাসচর্চার উদ্দেশ্য । উনিশ শতক থেকে মূলত বিশ্বব্যাপী নারীর অধিকার, নারীর ভালো-মন্দ, নারীশিক্ষা এসব নিয়ে জোরদার আলোচনা শুরু হয় । ইউরোপে ফরাসি বিপ্লবের পর থেকে নারী সম্পর্কিত সচেতনতার বিকাশ ঘটতে শুরু করে । উনিশ শতকের সমাজসংস্কারের সময় ভারতে প্রথম নারী উন্নয়নের প্রচেষ্টা শুরু হয় । ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ক্ষিতিমোহন সেন 'প্রাচীন ভারতে নারী' নামে একটি ক্ষুদ্র পুস্তক রচনা করেন । নারী ইতিহাসর ওপর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল জেরাল্ডাইন ফর্বস -এর 'উওম্যান ইন মডার্ন ইন্ডিয়া', দয়ারাম গিডুমাল সম্পাদিত 'দ্য স্টেটাস অব উওম্যান ইন ইন্ডিয়া', নীরা দেশাই -এর 'উওম্যান ইন মডার্ন ইন্ডিয়া' প্রভৃতি । এ ছাড়া ভারতী রায়, যশোধরা বাগচি, রত্নাবলী চট্টোপাধ্যায়, শমিতা সেনের গবেষণা নারী ইতিহাসচর্চায় বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে ।
****