স্থানীয় ইতিহাস (Local History) : বিগত শতক পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের ইতিহাস রচনায় জাতীয় স্তরের ইতিহাসের আলোচনাই শুধু গুরুত্ব পেয়ে এসেছে । স্থানীয় ইতিহাসের চর্চার তেমন সেভাবে প্রসার ঘটেনি । আধুনিককালে বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় ইতিহাসের চর্চা শুরু করেছেন । এর ফলে জাতীয় ইতিহাসের চর্চা আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে । স্থানীয় ইতিহাসচর্চার মূল বৈশিষ্ট্য আঞ্চলিক স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠিা নয়, বরং জাতীয় ইতিহাসের পরিপূরক হয়ে ওঠে । স্থানীয় ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব হল যে, তা থেকে আমরা আঞ্চলিক অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের একটি রূপরেখা পাই । এই ধরনের ইতিহাসচর্চা স্থানীয় মানুষের জীবন-যাপনের সঙ্গে বৃহত্তর জীবনযাত্রার সঙ্গতি-সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে । সতীশচন্দ্র মিত্রের 'যশোর-খুলনার ইতিহাস', নিখিলনাথ রায়ের 'মুরশিদাবাদের ইতিহাস', দীনেশচন্দ্র সেনের 'বৃহৎ বঙ্গ', নীহাররঞ্জন রায়ের 'বাঙালীর ইতিহাস-আদিপর্ব', আনন্দনাথ রায়ের 'ফরিদপুরের ইতিহাস', রমেশচন্দ্র মজুমদারের 'বাংলাদেশের ইতিহাস', গৌরিশংকর হিরাচাঁদ ওঝার 'উদয়পুরের ইতিহাস', মুন্সি মোহনলালের 'তারিখ-ই-বিকানির', খুশওয়ান্ত সিং -এর 'শিখদের ইতিহাস' প্রভৃতি স্থানীয় ইতিহাসচর্চার গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ।
****