জৈব যৌগের কার্যকরী মূলক বা পরিচায়ক শ্রেণি

Submitted by arpita pramanik on Thu, 04/18/2013 - 19:11

জৈব যৌগের কার্যকরী মূলক বা পরিচায়ক শ্রেণি (Functional group of Organic Compound):

অসংখ্য জৈব যৌগকে, ওদের রাসায়নিক ধর্মের ওপর ভিত্তি করে কতকগুলি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে । দেখা যায় যে, এই রকম প্রতিটি শ্রেণিতে যৌগগুলির মধ্যে একটি বিশেষ মূলক বর্তমান থাকে । এই মুলকের উপস্থিতির জন্য ওই শ্রেণির সমস্ত যৌগের রাসায়নিক ধর্ম প্রায় একই রকম হয় । যেমন- OH মূলকবিশিষ্ট মিথাইল অ্যালকোহল (CH3OH), ইথাইল অ্যালকোহল (C2H2OH) প্রভৃতি একই রকম রাসায়নিক বিক্রিয়া করে ।

যেসব মূলক, জৈব যৌগের অণুতে উপস্থিত থেকে যৌগগুলির রাসায়নিক ধর্ম নির্ধারণ করে, সেসব সক্রিয় মূলককে কার্যকরী মূলক (Functional group) বলে ।

বিভিন্ন ধরণের কার্যকরী মূলক জৈব যৌগে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন শ্রেণির যৌগ উৎপন্ন করে । কতকগুলি কার্যকরী মূলকের সংকেত এবং ওদের দ্বারা সৃষ্ট যৌগের শ্রেণির নাম দেওয়া হল ।

 

কার্যকরী

মূলকের নাম

কার্যকরী

মূলকের সংকেত

যৌগের

শ্রেণির নাম

উদাহরণ

কার্বন-কার্বন 

দ্বি-বন্ধন

অ্যালকিন ইথিলিন, 

কার্বন-কার্বন

ত্রি-বন্ধন

—C ≡ C— অ্যালকাইন অ্যাসিটিলিন, (H - C ≡ C - H)  
হাইড্রক্সিল   —OH অ্যালকোহল, ফেনল 

C2H5OH (ইথাইল অ্যালকোহল),

C6H5OH (ফেনল বা কার্বলিক অ্যাসিড )

অ্যালডিহাইড   অ্যালডিহাইড

HCHO (ফরম্যালডিহাইড),

CH3CHO (অ্যাসিট্যালডিহাইড)

কার্বক্সিল কার্বক্সিলিক অ্যাসিড

HCOOH (ফরমিক অ্যাসিড),

CH3COOH (অ্যাসিটিক অ্যাসিড)

কিটোনিক > C = O কিটোন

CH3COCH3 (ডাই-মিথাইল

কিটোন বা অ্যাসিটোন

থ্যালাক্সি —O—R ইথার CH3OCH3 (ডাই-মিথাইল ইথার )
সায়ানো —C ≡ N সায়ানাইড   C2H5CN (ইথাইল সায়ানাইড)
অ্যালক্সি এস্টার CH3COOC2H5 (ইথাইল অ্যাসিটেট) 
অ্যামিনো অ্যামিন C2H5NH2 (ইথাইল অ্যামিন)
নাইট্রো নাইট্রো C6H5NO2 (নাইট্রোবেঞ্জিন)

 

এখানে মনে রাখা দরকার > C = O শ্রেণিকে সাধারণভাবে কার্বনিল শ্রেণি বলা হয় । যদি অবশিষ্ট দুটি যোজ্যতার মধ্যে অন্তত একটি হাইড্রোজেন দ্বারা তৃপ্ত হয়, তবে শ্রেণিটিকে অ্যালডিহাইড শ্রেণি (-CHO) বলা হয় । আর যদি অবশিষ্ট দুটি যোজ্যতাই কার্বন দ্বারা তৃপ্ত হয়, তবে শ্রেণিটিকে কিটো শ্রেণি বলা হয় ।

*****

Related Items

কয়েকটি জারক ও বিজারক পদার্থ

কয়েকটি জারক পদার্থ - ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড, নাইট্রিক অ্যাসিড, অক্সিজেন, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিড, ওজোন, পটাশিয়াম ডাই-ক্রোমেট, হাইড্রোজেন পারক্সাইড, ফ্লুওরিন, রেড লেড, তরল ব্রোমিন, ক্লোরিন, কয়েকটি বিজারকের বিজারণ ক্ষমতার উদাহরণ ...

জারণ বিজারণের ইলেক্ট্রনীয় মতবাদ

জারণ ও বিজারণ রসায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়া । সাধারণত কোনো মৌলে বা যৌগে অক্সিজেনের সংযুক্তি বা কোনো যৌগ থেকে হাইড্রোজেনের বিযুক্তিকে জারণ এবং কোনো মৌলে বা যৌগে হাইড্রোজেনের সংযুক্তি বা কোনো যৌগ থেকে অক্সিজেনের বিযুক্তিকে বিজারণ বলা হয় । ...

সমযোজী যৌগগুলির বৈশিষ্ট্য

সাধারণ তাপমাত্রায় বেশির ভাগ সমযোজী যৌগ সাধারণত তরল কিংবা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে কিন্তু বেশি আণবিক গুরুত্ববিশিষ্ট সমযোজী মৌল বা যৌগগুলি কঠিন বা তরল হয় । সমযোজী যৌগে সমযোজী বন্ধন দৃঢ় প্রকৃতির, তার ফলে অণুগুলি স্থায়ী হয় । ...

ইলেক্ট্রনীয় যোজ্যতা বা তড়িৎ-যোজ্যতা

সাধারণ অবস্থায় পরমাণুর মধ্যে ইলেকট্রন এবং প্রোটন সংখ্যা সমান হওয়ার জন্য পরমাণু নিস্তড়িৎ হয় । সাধারণ নিয়মে পরমাণুর সংযোগ হওয়ার সময় ধাতুর পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন এবং অধাতুর পরমাণু ইলেকট্রন গ্রহণ করে । ফলে কোনো পরমাণু ইলেকট্রন বর্জন করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয় ...

সমযোজ্যতা (Covalent)

সমযোজ্যতা: অনেকক্ষেত্রে দুটি পরমাণু সংযোগের সময় প্রত্যেক পরমাণুর সবচেয়ে বাইরের কক্ষ থেকে একটি করে ইলেকট্রন এসে ইলেকট্রন জোড় সৃষ্টি করে । এই রকম এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় উভয় পরমাণুর মধ্যে সাধারণভাবে থেকে যৌগ গঠন করে । এই ধরনের যৌগ তৈরি হওয়ার ...