যান্ত্রিক আবহবিকার কোন ধরনের জলবায়ুতে বেশি ঘটে, কারণসহ উল্লেখ কর ।

Submitted by avimanyu pramanik on Mon, 12/27/2021 - 10:28

প্রশ্ন:- যান্ত্রিক আবহবিকার কোন ধরনের জলবায়ুতে বেশি ঘটে, কারণসহ উল্লেখ কর ।

উত্তর :- উষ্ণ মরু অঞ্চল ও শীতল পার্বত্য অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাধান্য দেখা যায়, কারণ:-

(১) শিলা তাপের সুপরিবাহী না হওয়ায় উষ্ণ মরু জলবায়ু অঞ্চলে দিন বা রাত্রে শিলার ভিতরের ও বাইরের অংশের উষ্ণতার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য ঘটে । আর এই উষ্ণতার তারতম্যের ফলে উষ্ণ মরু অঞ্চলে শিলা পর্যায়ক্রমে উত্তাপে প্রসারিত ও ঠান্ডায় সংকুচিত হয় । ক্রমে শিলার সন্ধিস্তল গুলি আলগা হয়ে পড়ে এবং ফাটলের সৃষ্টি হয় । ধীরে ধীরে এই ফাটলগুলি বড়ো হয়ে গেলে শিলাস্তর ছোটো ছোটো চৌকো বা গোলাকার অংশে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । এইসব যান্ত্রিক আবহবিকার (ক) পিন্ড বিশরণ (Block disintegration), (খ) গোলাকার বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন (Exfoliation) এবং (গ) ক্ষুদ্রকণা বিশরণ (Granular disintegration) নামে পরিচিত ।

(২) শীতল পার্বত্য জলবায়ু অঞ্চলে দিনের বেলায় বা গ্রীষ্মকালে বরফ গলে গিয়ে অথবা বর্ষাকালে শিলাস্তরের ফাটলের মধ্যে জল সঞ্চিত হলে তা পরে শীতকাল বা রাত্রি বেলায় অত্যধিক শৈত্যে জমে বরফে পরিণত হয় । জল বরফে পরিণত হলে আয়তনে শতকরা প্রায় ১০ ভাগ বৃদ্ধি পায় । এই বর্ধিত আয়তনের বরফ ফাটলের দুপাশের দেওয়ালে প্রচন্ড চাপের সৃষ্টি করে । এই চাপের ফলে ফাটলগুলির আয়তন ক্রমশ বৃদ্ধি পায় এবং শিলাস্তর ছোটো ছোটো খন্ডে পরিণত হয় । যান্ত্রিক আবহবিকারের এই প্রক্রিয়াকে তুহিন খন্ডীকরণ বলে ।

উষ্ণ মরু জলবায়ু অঞ্চল অথবা শীতল পার্বত্য অঞ্চল ছাড়া অন্যান্য সমভাবাপন্ন জলবায়ু অঞ্চলে দিন রাত্রি অথবা বছরের বিভিন্ন সময়ে তাপমাত্রার বিশেষ একটা তারতম্য হয় না বলে ওই সব স্থানে যান্ত্রিক আবহবিকার বেশি ঘটে না ।

*****

Comments

Related Items

জোয়ার ভাটার সময়ের ব্যবধান

জোয়ার ভাটার সময়ের ব্যবধান : পৃথিবীর আবর্তন গতি ও পৃথিবীকে কেন্দ্র করে চাঁদের পরিক্রমণ গতির ওপর জোয়ার ভাটার উৎপত্তি নির্ভর করে । ভূপৃষ্ঠের যে স্থানে যখন মুখ্য জোয়ার হয়, তার প্রতিপাদস্থানে তখন গৌণ জোয়ার হয় । আবর্তন গতির ফলে পৃথিবীর যে স্থানে যখন মু

মুখ্য জোয়ার, গৌণ জোয়ার ও ভাটা (Primary Tide, Secondary Tide and Low Tide)

মুখ্য জোয়ার (Primary or Direct Tide) : পৃথিবী যেমন তার অক্ষ বা মেরুদণ্ডের ওপর আবর্তন করে তেমনিই চাঁদও পৃথিবীর চারদিকে সর্বদা পরিক্রমণ করছে । পৃথিবীর আবর্তনের ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের যে স্থান ঠিক চন্দ্রের সামনে এসে উপস্থিত হয়, সেখানে চন্দ্রে

জোয়ার ভাটা ও জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কারণ (Tides and Causes of Tides)

জোয়ার ভাটা (Tides) : পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরে সমুদ্রস্রোত ও সমুদ্রতরঙ্গ ছাড়া আরও একটি গতি রয়েছে । এই গতির ফলে সমুদ্রের জল প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য কোনো এক জায়গায় ফুলে ওঠে এবং অন্য কোনো জায়গায় নেমে যায় । মূলত চাঁদের আকর্ষণী শক্তির

সমুদ্রস্রোতের প্রভাব (Effects of Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোতের প্রভাব (Effects of Ocean Currents) : ভৌগলিক পরিবেশ ও মানুষের কাজকর্মের ওপর পৃথিবীর বিভিন্ন সমুদ্রে প্রবাহিত সমুদ্রস্রোতের নানা রকম প্রভাব দেখা যায় । যেমন —

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents)

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ (Causes of Ocean Currents) : সমুদ্রস্রোত বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে । এই কারণগুলি হল— (১) পৃথিবীর আবর্তন, (২) নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, (৩) সমুদ্রজলের উষ্ণতা, (৪) সমুদ্রজলের ও লবণত্ব ও ঘনত্বের তারতম্য, (৫) বরফের গলন , (৬) উপকূলের আ