সিন্ধুতীরে

Submitted by avimanyu pramanik on Wed, 05/13/2020 - 23:42

সিন্ধুতীরে  — সৈয়দ আলাওল

 

কন্যারে ফেলিল যথা        জলের মাঝারে তথা

      দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার ।

অতি মনোহর দেশ       নাহি তথা দুঃখ ক্লেশ

      সত্য ধর্ম সদা সদাচার ।।

সমুদ্রনৃপতি সুতা     পদ্মা নামে গুণযুতা

      সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান ।

উপরে পর্বত এক       ফল ফুলে অতিরেক

      তার পাশে রচিল উদ্যান ।।

নানা পুষ্প মনোহর      সুগন্ধি সৌরভতর 

       নানা ফল বৃক্ষ সুলক্ষণ ।

তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি     হেমরত্নে নানা রঙ্গি

      তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ ।।

পিতৃপুরে ছিল নিশি      নানাসুখে খেলি হাসি

     যদি হৈল সময় প্রত্যুষ ।

সখীগণ করি সঙ্গে      আসিতে উদ্যানে রঙ্গে

     সিন্ধুতীরে রহিছে মাঞ্জস ।।

মনেতে কৌতুক বাসি     তুরিত গমনে আসি

     দেখে চারি সখী চারভিত ।

মধ্যেতে যে কন্যাখানি     রূপে অতি রম্ভা জিনি

      নিপতিতা চেতন রহিত ।।

দেখিয়া রূপের কলা     বিস্মিত হইল বালা 

      অনুমান করে নিজ চিতে ।

ইন্দ্র শাপে বিদ্যাধরি      কিবা স্বর্গভ্রষ্ট করি

      অচৈতন্য পড়িছে ভূমিতে । ।

বেকত দেখিয়া আঁখি     তেন স-বসন সাক্ষী

      বেথানিত হৈছে কেশ বেশ ।

বুঝি সমুদ্রের নাও      ভাঙ্গিল প্রবল বাও

       মোহিত পাইয়া সিন্ধু-ক্লেশ  । ।

চিত্রের পোতলি সমা     নিপতিত মনোরমা

       কিঞ্চিৎ আছয় মাত্র শ্বাস ।

অতি স্নেহ ভাবি মনে      বলে পদ্মা ততক্ষণে

      বিধি মোরে না কর নৈরাশ  । ।

পিতার পুণ্যের ফলে     মোহর ভাগ্যের বলে

    বাহুরক কন্যার জীবন ।

চিকিৎসিমু প্রাণপণ     কৃপা কর নিরঞ্জন

     দুখিনীরে করিয়া স্মরণ । ।

সখী সবে আজ্ঞা দিল     উদ্যানের মাঝে নিল

      পঞ্চজনে বসনে ঢাকিয়া ।

অগ্নি জ্বালি ছেকে গাও     কেহ শিরে কেহ পাও

      তন্ত্রে মন্ত্রে মহৌষধি দিয়া । ।

দণ্ড চারি এই মতে      বহু যত্নে চিকিৎসিতে

      পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন ।

শ্রীযুত মাগন গুণী      মোহন্ত আরতি শুনি

      হীন আলাওল  সুরচন । । 

******

Comments

Related Items

সমাসের শ্রেণিবিভাগ

সমাসের শ্রেণিবিভাগ :- বাংলা ভাষায় সমাস মূলত ছয় প্রকার— (১) তৎপুরুষ, (২) কর্মধারয়, (৩) দ্বন্দ্ব,  (৪) দ্বিগু, (৫) বহুব্রীহি, (৬) অব্যয়ীভাব । এছাড়াও (৭) নিত্য সমাস, (৮) বাক্যাশ্রয়ী সমাস ও (৯) অলোপ সমাস আছে ।

সন্ধি ও সমাসের পার্থক্য

সন্ধি ও সমাসের পার্থক্য :-

(ক) সন্ধি হল বর্ণের সঙ্গে বর্ণের মিলন আর পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত দুই বা তার বেশি পদের একপদে পরিণত হওয়াই হল সমাস । যেমন দেব + আলয় = দেবালয় → সন্ধি, দেবের আলয় = দেবালয় → সমাস ।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - প্রলয়োল্লাস

"ওই ভাঙ্গা গড়া খেলা যে তার কিসের তবে ডর ?" — কবির মন্তব্যটি কোন ইঙ্গিতবাহী ?, উদ্ধৃতাংশটি কবি নজরুল ইসলামের "প্রলয়োল্লাস" কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে । 'প্রলয়োল্লাস' আসলে কবির জীবন উল্লাসের কবিতা । এই কবিতায় কবি চির বিদ্রোহী নবযৌবনের বন্দনা করেছেন ।

ব্যাখ্যামূলক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন - আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি

১. "আমাদের ইতিহাস নেই" — কে, কেন এ কথা বলেছেন ? [মাধ্যমিক-২০১৮]

প্রশ্নোত্তর - কারক ও অকারক সম্পর্ক

১.১ তির্যক বিভক্তি হল — (ক) শূন্য বিভক্তির অপর নাম (খ) একাধিক কারকে ব্যবহৃত বিভক্তি (গ) একসঙ্গে সব রকমের বিভক্তি (ঘ) একসঙ্গে বিভক্তি ও অনুসর্গ