ব্লিচিং পাউডার বা বিরঞ্জক চূর্ণ

Submitted by arpita pramanik on Thu, 04/04/2013 - 10:22

ব্লিচিং পাউডার বা বিরঞ্জক চূর্ণ (Bleaching Powder,  Ca(OCl)Cl) :

ব্লিচিং পাউডারের রাসায়নিক নাম ক্যালসিয়াম ক্লোরো-হাইপোক্লোরাইট এবং এর রাসায়নিক সংকেত Ca(OCl)Cl ।   

প্রকৃতি :-

[i] ব্লিচিং পাউডার সাদা, অনিয়তাকার এবং একটি অজৈব পদার্থ ।

[ii] ব্লিচিং পাউডার থেকে ক্লোরিনের ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায় ।

[iii] ব্লিচিং পাউডার জলীয় বাষ্প শোষণ করে, জলের সঙ্গে আংশিক বিক্রিয়া করে ক্যালশিয়াম ক্লোরাইড ও ক্যালশিয়াম হাইপো-ক্লোরাইট উৎপন্ন করে ।

[iv] ব্লিচিং পাউডার অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় ক্লোরিন উৎপন্ন করে । এক গ্রাম-আণবিক ভরের শুষ্ক ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে পাতলা অ্যাসিডের ক্রিয়ায় যে পরিমাণ Cl2 পাওয়া যায় তাকে প্রাপ্য ক্লোরিন বলে । Ca(OCl)Cl + 2HCl = CaCl2 + Cl2 + H2O । ব্লিচিং পাউডারের জারণ ও বিরঞ্জন ধর্ম এই প্রাপ্য ক্লোরিনের ওপর নির্ভর করে । খোলা বায়ুতে ব্লিচিং পাউডার রাখলে, Cl2 এর গন্ধ নির্গত হয়, কারণ বায়ুর জলীয় বাষ্প এবং CO2 দ্বারা ব্লিচিং পাউডার বিয়োজিত হয়ে Cl2 মুক্ত করে ।

     Ca(OCl)Cl + CO2 = CaCO3 + Cl2 ↑ ।

ব্যবহার :-

[i] জীবাণুনাশক হিসাবে, জলকে বিশুদ্ধ করতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয় ,

[ii] ক্লোরোফর্ম প্রস্তুতিতে ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয়,  

[iii] কাগজ শিল্পে এবং বস্ত্র বিরঞ্জন করতে ব্যবহৃত হয় ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা হয় । কাপড়কে বিরঞ্জন করতে হলে প্রথমে NaOH দ্রবণে ফুটিয়ে পরে ব্লিচিং পাউডারের পাতলা দ্রবণে ডুবিয়ে রাখার পর শুকানো হয় । উৎপন্ন Cl2 কাপড়কে বিরঞ্জন করে । Cl2 মুক্ত করার জন্য কাপড়কে সোডিয়াম কার্বনেট দ্রবণে ও সোডিয়াম সালফাইট দ্রবণে ডুবিয়ে জল দিয়ে ধুয়ে রাখা হয় ।

*****

Related Items

কপার সালফেটের জলীয় দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণ

কপার সালফেট জলে আয়নিত হয়ে কপার (+) এবং সালফেট (-) আয়ন উত্পন্ন করে । সুতরাং, জলীয় দ্রবণে চার প্রকার আয়ন থাকে, দুধরনের ক্যাটায়ান H (+) ও Cu (+) এবং দু ধরনের অ্যানায়ন OH (-) ও সালফেট (-) ।

জলের তড়িৎ-বিশ্লেষণ

বিশুদ্ধ জল তড়িতের কুপরিবাহী, কিন্তু সামান্য অ্যাসিড কিংবা ক্ষার জলে মেশালে ওই জল তড়িতের সুপরিবাহী হয় । এর কারণ হল বিশুদ্ধ জলে খুব কম সংখ্যক অণু H+ এবং OH- আয়নে বিশ্লেষিত অবস্থায় থাকে । ওই জলে সামান্য অ্যাসিড কিংবা ক্ষার যোগ করলে এদের আয়ন ...

তড়িৎ-বিশ্লেষ্য ও তড়িৎ-অবিশ্লেষ্য পদার্থ

যেসব পদার্থ জলে দ্রবীভূত বা গলিত অবস্থায় আয়নে বিশ্লিষ্ট হয়ে তড়িৎ পরিবহন করে এবং তড়িৎ পরিবহনের ফলে নিজেরা রাসায়নিকভাবে বিশ্লিষ্ট হয়ে নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ উত্পন্ন হয়, সেই সব পদার্থকে তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ বলে ।

তড়িৎ-পরিবাহী এবং তড়িৎ-অপরিবাহী

যে সব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ-প্রবাহিত করলে তা তড়িৎ-পরিবহনে সক্ষম হয়, তাদের তড়িৎ-পরিবাহী পদার্থ বলে । যেমন; সোনা, রুপো, তামা, প্রভৃতি ধাতু, গ্রাফাইট, সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণ ইত্যাদি । তড়িৎ-পরিবহনে সক্ষম এমন পদার্থগুলিকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় --

জারণ ও বিজারণ একসঙ্গে ঘটে

রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ প্রক্রিয়া একই সঙ্গে ঘটে । অর্থাৎ, জারণ ও বিজারণ ক্রিয়া পরস্পরের পরিপূরক । কোনো বিক্রিয়ায় জারণ-ক্রিয়া ঘটলেই বিজারণ ক্রিয়াও ঘটবে । এই রকম রাসায়নিক বিক্রিয়াকে রেডক্স বিক্রিয়া বলা হয় । ...