Submitted by arpita pramanik on Thu, 04/04/2013 - 22:43

অ্যামোনিয়াম সালফেট, ( (NH4)2SO4 )

Ammonium Sulphate :

অ্যামোনিয়াম সালফেট হল একটি নাইট্রোজেন ঘটিত অজৈব রাসায়নিক সার । এর রাসায়নিক সংকেত (NH4)2SO4 । জলে ভাসমান বিচূর্ণ জিপসামের মধ্য দিয়ে NH3 এবং CO2 গ্যাস চালনা করলে কিংবা অ্যামোনিয়ার সঙ্গে H2SO4 -এর বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়াম সালফেট উৎপন্ন হয় ।

    CaSO4 + CO2 + 2NH3 + H2O = (NH4)2SO4 + CaCO3

প্রকৃতি :-

[i] অ্যামোনিয়াম সালফেট সাদা রঙের, গন্ধহীন, অনুদ্বায়ী একটি অজৈব কেলাসিত লবণ ।

[ii] অ্যামোনিয়াম সালফেট জলে দ্রাব্য ও এর জলীয় দ্রবণ অম্লধর্মী ।

[iii] অ্যামোনিয়াম সালফেট তাপে ঊর্ধ্ব পাতিত হয় ।

[iv] অ্যামোনিয়াম সালফেটে তীব্র ক্ষার মেশালে অ্যামোনিয়া উৎপন্ন করে ।

[v] অ্যামোনিয়াম সালফেটের জলীয় দ্রবণ তড়িৎ পরিবাহী । জলীয় দ্রবণে সালফেট বিয়োজিত হয়ে অ্যামোনিয়াম আয়নে (NH+4) এবং সালফেট আয়ন (SO=4) উৎপন্ন করে ।

যথা : (NH4)2SO4 = 2NH+4 + SO=4   ।

অ্যামোনিয়াম সালফেটকে সার হিসাবে বারবার ব্যবহারের সমস্যা (Hazard of using Ammonium Sulphate repeatedly as a fertilizer) :-

জমিতে বারে বারে অ্যামোনিয়াম সালফেটকে সার হিসাবে ব্যবহার করলে মাটির অ্যাসিডের মাত্র বাড়ে, কারণ জলীয় দ্রবণে আর্দ্র বিশ্লেষিত হয়ে অ্যাসিড উৎপন্ন করে ।

    (NH4)2SO4 + 2H2O = 2NH4OH + H2SO4 , তাই এই সার গাছে বেশি দিলে মাটিতে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়তে থাকে, ফলে গাছ নষ্ট হয়ে যায় ও ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যায় । সেজন্য সারটিকে চুনের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা উচিত ।

ব্যবহার :-

[i] অ্যামোনিয়াম সালফেট একটি অজৈব নাইট্রোজেন ঘটিত সার । এই যৌগটি সার রূপে ব্যবহৃত হয় ।

[ii] অ্যামোনিয়াম সালফেট পরীক্ষাগারে বিকারক রূপে ব্যবহৃত হয় ।

[iii] ফটকিরি এবং অন্যান্য অ্যামোনিয়াম লবণ প্রস্তুতিতে অ্যামোনিয়াম সালফেট ব্যবহৃত হয় ।

আমাদের আশেপাশে কোথাও অ্যামোনিয়া গ্যাস নির্গত হলে সর্বাগ্রে আমাদের চোখে মুখে জলের ঝাপটা দেয়া দরকার, অ্যাসিডের ঝাপটা নয় কেন ?

কারণ :- অ্যামোনিয়া ক্ষার জাতীয় পদার্থ, তাই অ্যামোনিয়ার ক্রিয়াকে প্রশমিত করতে অ্যাসিড ব্যবহার করলে, অ্যাসিডের ক্রিয়ায় ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে । তাই অ্যামোনিয়াকে সাধারণ ক্ষেত্রে প্রশমিত করতে কখনোই অ্যাসিডের ঝাপটা দেওয়া উচিত নয় । অন্য দিকে অ্যামোনিয়া জলে অতিশয় দ্রাব্য । তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধযুক্ত অ্যামোনিয়া যাতে চোখ মুখের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য চোখে মুখে জলের ঝাপটা দেওয়া উচিত । জলে অ্যামোনিয়া দ্রবীভূত হয়ে যায় বলে ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব হয় ।

*****

Related Items

তাপ (Heat)

তাপ সম্বন্ধে আমাদের সকলেরই একটা ধারণা আছে । গরম জলে হাত দিলে গরম লাগে আবার বরফে হাত দিলে ঠান্ডা লাগে । যে বাহ্যিক কারণে আমাদের গরম বা ঠাণ্ডার অনুভূতি হয় তাকে তাপ বলে । 1 গ্রাম বিশুদ্ধ জলের উষ্ণতা 1°c বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন তাকে ...

রাসায়নিক বিক্রিয়া ও রাসায়নিক সমীকরণ

সাধারণ ওজন - রাসায়নিক সমীকরণের সাহায্যে ওজনের হিসাব, রাসায়নিক বিক্রিয়া ও রাসায়নিক সমীকরণ, রাসায়নিক বিক্রিয়া, রাসায়নিক সমীকরণ গ্রাম-আণবিক ভর এবং গ্রাম-আণবিক আয়তনের ব্যবহারিক প্রয়োগ, ওজন-ওজন সংক্রান্ত গণনা, ওজন-আয়তন সংক্রান্ত গণনা ...

অণু, পরমাণু ও অ্যাভোগাড্রোর প্রকল্প

ডালটনের পরমাণুবাদ, অণুর ধারণা, অণুর প্রকারভেদ, মৌলিক অণু, যৌগিক অণু, অ্যাভোগাড্রোর প্রকল্প, অ্যাভোগাড্রোর সূত্রের সাহায্যে গ্যাস, আয়তন সূত্র এবং পরমাণুবাদের মধ্যে সমন্বয়, বাষ্প-ঘনত্ব বা আপেক্ষিক ঘনত্ব, অ্যাভোগাড্রোর সূত্রের অনুসিদ্ধান্ত ...

গ্যাসের ধর্ম (Properties of gases)

কোন পদার্থ তিনটি অবস্থায় থাকতে পারে যথা - কঠিন তরল এবং গ্যাসীয় । এইটিন অবস্থার মধ্যে গ্যাসীয় অবস্থার কয়েকটি বিশেষ ধর্ম দেখা । এই সাধারণ ধর্ম গুলি হল প্রসারণশীলতা, সংকোচনশীলতা, অণুর গতি ও গ্যাসীয় চাপ, গ্যাসের ব্যাপন (Diffusion of gases), গ্যাসের উপর চাপের প্রভাব ...

ভিনিগার (Vinegar)

ভিনিগার হল কার্বক্সিলিক অ্যাসিড জাতীয় যৌগ - অ্যাসেটিক অ্যাসিডের লঘু জলীয় দ্রবণ । এতে প্রায় 4% - 8% অ্যাসেটিক অ্যাসিড ও সামান্য অ্যালকোহল থাকে । ভিনিগার জলে দ্রাব্য এবং এর জলীয় দ্রবণ অম্লধর্মী । এটি তীব্র গন্ধযুক্ত, বর্ণহীন, অনুদ্বায়ী, জৈব তরল পদার্থ । ...