সাইমন কমিশন সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 01/11/2022 - 20:52

প্রশ্ন:- সাইমন কমিশন সম্পর্কে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

(i) সাইমন কমিশনের গঠন ছিল ত্রুটি পূর্ণ কারণ এই কমিশনে কোনো ভারতীয় সদশ্য ছিল না । এই কমিশনের সাত জনই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ । ভারতের শাসনতন্ত্র সংস্কারের উদ্দেশ্যে গঠিত সাইমন কমিশনের গঠন ও কাজের ধরন ছিল ভারতীয়দের কাছে জাতীয় অপমান স্বরূপ- এটাই ছিল এই কমিশনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের ক্ষোভের প্রধান কারণ, তাই সাইমন কমিশন ভারতীয়দের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয় ।

(ii) সাইমন কমিশনে কোনো ভারতীয় সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত না কারায় ভারতের জাতীয় কংগ্রেস এই কমিশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় ।

(iii) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ফেব্রুয়ারি মাসে সাইমন কমিশনের সদস্য বৃন্দ ভারতে এসে পৌঁছলে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয় । লাহোরে সাইমন কমিশন বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় পুলিশের আক্রমণে জননায়ক লালা লাজপত রায় গুরুতরভাবে আহত হন এবং পরে দেহত্যাগ করেন ।

সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলনের ফলাফল—

(i) সাইমন কমিশন বিরোধী আন্দোলন সারা ভারতে উত্তাল আকার ধারণ করলেও ব্রিটিশ সরকার এই সব প্রতিবাদে কোনো কর্ণপাত করেনি । সাইমন কমিশন যথারীতি দেশব্যাপী সমীক্ষা চালায় এবং দু’বছরের মধ্যে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে ব্রিটিশ সংসদে তাদের প্রতিবেদন পেশ করে ।

(ii) সাইমন কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন প্রবর্তিত হয় ।

(iii) সাইমন কমিশন বিরোধী গণ আন্দোলন ক্রমে আইন অমান্য আন্দোলনে পরিণত হয় ।

*****

Comments

Related Items

সতীদাহ প্রথা বিরোধী আন্দোলন

প্রাচীনকাল থেকেই ভারতীয় হিন্দুসমাজে নারীরা বিভিন্ন ধরণের সামাজিক নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতার শিকর হতেন । এই সব নির্যাতনের মধ্যে অন্যতম ছিল সতীদাহপ্রথা বা সহমরণ । এই প্রথা অনুযায়ী ঊনিশ শতকের সূচনালগ্নেও বাংলা তথা ভারতীয় হিন্দুসমাজে মৃত স্বামীর জ্বলন্ত চিতায় তার বিধবা...

উনিশ শতকের বাংলায় ব্রাহ্মসমাজ সমূহের উদ্যোগ

উনিশ শতকের প্রথমদিকে বাংলার সমাজজীবনে বিভিন্ন ধরণের কুপ্রথা প্রচলিত ছিল । সতীদাহপ্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, দেবদাসীপ্রথা, জাতিভেদ প্রথা, অস্পৃশ্যতা, কৌলিন্য প্রথা, গঙ্গাজলে সন্তান বিসর্জন প্রভৃতি নানান অমানবিক কুপ্রথা ও মানুষের মনে অন্ধবিশ্বাস বাংলার সমাজজীবনকে জর্জরিত

উনিশ শতকের বাংলা — সমাজ সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

উনিশ শতকের শুরুর দিকে বাংলায় ব্রিটিশ শাসন সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় । সেই সময় বাংলার সমাজজীবনে চরম দুর্দিন চলছিল । হিন্দুসমাজে তখন ব্রাহ্মণদের প্রতিপত্তি সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল এবং তারাই সমাজের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন । হিন্দুসমাজে প্রকট জাতিভেদ প্রথা চালু ছিল । হিন্দুসমাজ ছিল

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষার বিকাশ

১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি স্যার চার্লস উড শিক্ষানীতির ওপর একটি পরিকল্পনা পেশ করেন যা 'উডের ডেসপ্যাচ' নামে পরিচিত । এই শিক্ষা পরিকল্পনায় যে সমস্ত সুপারিশগুলি করা হয় সেগুলির মধ্যে অন্যতম

মধুসূদন গুপ্ত

ভারতে আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যা প্রসারের সঙ্গে মধুসূদন গুপ্তের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত । তিনি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে হুগলি জেলার বৈদ্যবাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । ডেভিড হেয়ারের 'পটলডাঙ্গা স্কুলে' প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি কলকাতার সংস্কৃত কলেজে আয়ুর্বেদ চিকিৎসা নিয়ে পড়াশুনা ...