Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 04/26/2012 - 15:23

প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister of India)

ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি দেশের সাংবিধানিক প্রধান হলেও রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বময় কর্তৃত্ব প্রধানমন্ত্রীর হাতেই ন্যস্ত থাকে । লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা গোষ্ঠীর নেতাকে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন । সাধারণত পার্লামেন্টের যে কোনো কক্ষের সদস্য না হলে প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায় না । পার্লামেন্টের সদস্য না হয়েও কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, সেক্ষেত্রে ছ-মাসের মধ্যেই তাঁকে পার্লামেন্টের সদস্য হতেই হবে । অন্যথায় তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অবিলম্বে অপসারিত করার নিয়ম রয়েছে । প্রধানমন্ত্রীর কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর ওই সময় তিনি লোকসভার নেতা বা নেতৃরূপে কাজ করে থাকেন ।

প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর যোগ্যতাবলী :

(ক) প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীকে অবশ্যই ভারতের নাগরিক হতে হবে ।

(খ) প্রধানমন্ত্রীকে সংসদের রাজ্যসভা অথবা লোকসভা যে কোনো একটি কক্ষের সদস্য হতে হবে । সংসদের সদস্য না হয়েও কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, সেক্ষেত্রে ছ-মাসের মধ্যেই তাঁকে সংসদের যে কোনো কক্ষের সদস্য হয়ে আসতে হবে ।

(গ) লোকসভার সদস্য হলে প্রধানমন্ত্রীর বয়স অন্তত ২৫ বছর বা তার বেশি হতে হবে এবং রাজ্যসভার সদস্য হলে তাঁর বয়স ৩০ বছর বা তার বেশি হতে হবে ।

(ঘ) প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার সময় অর্থ প্রাপ্তি হয় এমন কোনও সরকারি বা বেসরকারি অথবা সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন কোনও সংস্থায় তিনি কোনও পদে নিযুক্ত থাকতে পারবেন না ।

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ও ক্ষমতা :

(১) ভারতের প্রকৃত শাসন ক্ষমতার অধিকারী হলেন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীপরিষদ যদিও ভারত সরকারের সব ক্ষমতাই রাষ্ট্রপতির নামে পরিচালিত হয় । মন্ত্রিসভা গঠন, ক্যাবিনেটের নেতৃত্বদান, রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শদান, মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বন্টন, মন্ত্রীপরিষদের কর্মসূচি প্রণয়ন এবং বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য । কোন মন্ত্রী কোন দপ্তর পরিচালনা করবেন তা প্রধানমন্ত্রীই স্থির করেন ।

(২) প্রধানমন্ত্রী তাঁর ইচ্ছা অনুসারে যে-কোনো মন্ত্রীকে তাঁর মন্ত্রীসভা থেকে বাদ দিতে পারেন । প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো মন্ত্রীর মতের মিল না হলে সেই মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয় । যদি তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করেন, সেই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং পদত্যাগ করে বর্তমান মন্ত্রীসভা ভেঙে দিয়ে নতুন মন্ত্রীসভা গঠন করতে পারেন এবং নতুন মন্ত্রীসভা থেকে এই মন্ত্রীকে সহজেই বাদ দিতে পারেন । অবশ্য কোনো জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে রাজনৈতিক দিক থেকে অনেক ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তবে এই ঘটনা সাধারণত ঘটে না ।

(৩) প্রধানমন্ত্রী হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা এবং রাষ্ট্রপতির মধ্যে যোগসূত্র । ভারতীয় সংবিধান অনুসারে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে জানান এবং রাষ্ট্রপতি কোনো বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানাতে বাধ্য থাকেন ।

*****

Related Items

শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কিভাবে একটি অগ্রনী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল ?

প্রশ্ন : শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কিভাবে একটি অগ্রনী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল ?

উঃ- ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৩৮ বছর বাংলা মুদ্রণ ও প্রকাশনায় শ্রীরামপুর মিশনের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।

বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল ?

প্রশ্ন : বাংলায় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল ?

১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

প্রশ্ন : ১৮৫৭ -এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত-শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায় ?

উঃ- ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময় থেকেই এই বিদ্রোহের চরিত্র বা প্রকৃতি নিয়ে বিভিন্ন ধারার ইতিহাসচর্চার নানা ধরনের গবেষণালব্দ মতামত পাওয়া যায় ।

কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

প্রশ্ন : কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন ?

এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?

প্রশ্ন : এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলিকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল ?