প্রশ্ন : তেজী বা ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলা হয় কেন ?
অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থান করে । অমাবস্যা এবং পূর্ণিমায় সূর্য ও চন্দ্রের মিলিত আকর্ষণী বলের প্রবল টানে যে তীব্র জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তাকেই ভরা কোটাল বা তেজী কোটাল বলে ।
অমাবস্যা তিথিতে পৃথিবীর একই পাশে একই সরলরেখায় চন্দ্র ও সূর্য অবস্থান করে এবং পূর্ণিমা তিথিতে সূর্য ও চন্দ্রের মাঝে একই সরল রেখায় পৃথিবী অবস্থান করে । এই ভাবে চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত বলের প্রবল আকর্ষণে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে যে তীব্র জোয়ার সৃষ্টি হয়, তাকে তেজী কোটাল বা ভরা জোয়ার বলে ।
অমাবস্যা ও পূর্ণিমার তেজী কোটালের সময় জোয়ারের স্থানে অত্যধিক জলস্ফীতি ঘটে এবং ভাটার স্থানে জলস্তর খুব বেশি মাত্রায় নেমে যায় । এই সময়ে সূর্য ও চন্দ্র একে অপরের পরিপূরক হিসেবে ভরা জোয়ার উৎপন্ন করে বলে জোয়ার ও ভাটার মধ্যে জলতলের পার্থক্য খুব বেশি মাত্রায় হয় । ভূপৃষ্ঠের জলভাগের একই স্থানে প্রতিমাসে দু’বার করে তেজী কোটাল (অর্থাৎ ভরা কোটাল) সংঘটিত হয় ।
অন্যান্য যে-কোনো দিনের জোয়ারের তুলনায় অমাবস্যা ও পূর্ণিমার দু’দিনে চন্দ্র ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণে জোয়ারের জলস্ফীতি সর্বাধিক হয়, তাই তেজী বা ভরা কোটালকে সর্বোচ্চ জোয়ার বলা হয় ।
জোয়ারের জল অনেক সময় নদী মোহনার পলি তুলে নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে নদীগর্ভে জমা করে নদীর নাব্যতাকে (গভীরতা) কমিয়ে ফেলে । অন্যদিকে, ভাটার টানে নদীগর্ভ আবর্জনা ও পলিমুক্ত হওয়ায় নদীখাতের গভীরতা ও বিস্তার বৃদ্ধি পায় এবং নদীর নাব্যতা রক্ষা পায় ।
*****