পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র ও সংরক্ষণ (Environment, Ecosystem and Conservation) :
পরিবেশ (Environment)
সংজ্ঞা - কোনো জীবের পারিপার্শ্বিক ভৌত ও রাসায়নিক অবস্থা এবং সজীব উপাদানকে সামগ্রিক ভাবে পরিবেশ বলে ।
বায়ুর উপাদান (Components of Air)
প্রতিটি 100% বায়ুতে আয়তন অনুপাতে নিম্নলিখিত উপাদান গুলি থাকে ।
নাইট্রোজেন [tex]\left( {{N_2}} \right) \to [/tex]77.17%
অক্সিজেন [tex]\left( {{O_2}} \right) \to [/tex]20.60%
কার্বন ডাই অক্সাইড [tex]\left( {C{O_2}} \right) \to [/tex]0.03%
জলীয় বাষ্প [tex]\left( {{H_2}O} \right) \to [/tex]1.40%
আন্যান্য গ্যাস [tex] \to [/tex]0.80%
জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র (Bio-geo-chemical cycle)
সংজ্ঞা – যে চক্রাকার পথে জীবদেহ গঠনোপযোগী রাসায়নিক মৌল গুলি ( C, H, O, N, P, S, Ca ইত্যাদি ) পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হয় তাকে জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র বলে ।
পরিবেশে মৌল উপাদানের ঘাটতি ঘটে না কেন ?
পরিবেশে মৌল উপাদানের ঘাটতি না হওয়ার প্রধান কারণ হল জীব থেকে পরিবেশে এবং পরিবেশ থেকে জীব দেহে উপাদান সমূহের প্রবাহ অব্যাহত থাকে ।
১৷ নির্গম পথ – জীব দেহ থেকে মৌল উপাদানের সমূহের পরিবেশে নির্গত হওয়াকে নির্গম পথ বলে । জীবের শ্বসন রেচন এবং মৃত্যুতে মৌল উপাদান সমূহ জীব জগৎ থেকে পরিবেশে ফিরে আসে । এ ছাড়া ভৌত রাসায়নিক ও জৈবিক ক্রিয়ায় নির্গম পথ সংগঠিত হয় ।
২৷ আগম পথ – পরিবেশ থেকে মৌল উপাদান সমূহের জীব জগতে প্রবেশকে আগম পথ বলে । জীবের সালোকসংশ্লেষ, শ্বসন নাইট্রোজেন সংবদ্ধ প্রভৃতি ক্রিয়ায় মৌলিক উপাদান সমূহ পরিবেশ থেকে জীবদেহে প্রবেশ করে । এছাড়া আগম পথও ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক ক্রিয়ায় সংগঠিত হয়।
জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্রের প্রকারভেদ
জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র প্রধানত দুই প্রকার । যথা – গ্যাসীয় প্রকৃতির (Gaseous type) এবং পলল প্রকৃতির (Sedimentary type) ।
কার্বন , অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন চক্রের প্রয়োজনীয়তা
কার্বন চক্রের তাৎপর্য
কার্বন চক্রের মাধ্যমে প্রকৃতিতে কার্বনের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং প্রকৃতির কার্বনের ভাণ্ডার কখনও শূন্য হয় না । ফলে বিশ্বে জীব কুলের অস্তিত্ব বজায় থাকে ।
অক্সিজেন চক্রের তাৎপর্য
১৷ জীবদেহে বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রনের জন্য যে অফুরন্ত শক্তির প্রয়োজন তা প্রধানত শ্বসন ক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয় । শ্বসন ক্রিয়ার জন্য প্রতিটি জীব কোষে অনবরত অক্সিজেন সরবরাহ প্রয়োজন । জীব কর্তিক অনবরত অক্সিজেন গ্রহণের ফলে, অক্সিজেন গ্যাস নিঃশেষ হয়ে যেত । কিন্তু অক্সিজেন চক্রের মাধ্যমে পরিবেশে অক্সিজেনের ভাণ্ডার কখনও শূন্য হয় না । সুতরাং পরিবেশে অক্সিজেনের ভারসাম্য বজায় রাখা অক্সিজেন চক্রের প্রধান তাৎপর্য ।
২৷ অক্সিজেন চক্র পরোক্ষভাবে কার্বন চক্রের ভারসাম্য বজায় রাখে । জৈব বস্তুর দহন ও জারনের জন্য অক্সিজেনের উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন । অক্সিজেন জৈব বস্তুকে জারিত করে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে । ফলে পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডের ভারসাম্য কখনও শূন্য হয় না ।
৩৷ বিভিন্ন ভৌত ও জীবজ ক্রিয়ায় উৎপন্ন অক্সিজেন কিছু ওজন গ্যাসে রূপান্তরিত হয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে ওজনস্ফিয়ার নামে একরকম আবরন স্তর সৃষ্টি করে । যা ক্ষতিকারক বিভিন্ন রকম মহাজাগতিক রশ্মি এবং সূর্যালোকের অতি বেগুনী রশ্মিকে শোষণ করে জীব জগতৎকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে ।
নাইট্রোজেনের তাৎপর্য
১৷ নাইট্রোজেন চক্রের মাধ্যমে প্রকৃতিতে নাইট্রোজেনের ভারসাম্য বজায় থাকে ।
২৷ জীবদেহের কোষ গঠনের জন্য যে নাইট্রোজেনের প্রয়োজন হয় তা নাইট্রোজেন চক্রের মাধ্যমেই জীবদেহে পরিবাহিত হয় । ফলে যুগ যুগ ধরে জীবকুলের চিরস্থায়িত্ব বজায় থাকে ।
*****
- 7534 views