পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র ও সংরক্ষণ

Submitted by arpita pramanik on Mon, 04/25/2011 - 15:05

পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র ও সংরক্ষণ (Environment, Ecosystem and Conservation) :

পরিবেশ (Environment)

সংজ্ঞা - কোনো জীবের পারিপার্শ্বিক ভৌত ও রাসায়নিক অবস্থা এবং সজীব উপাদানকে সামগ্রিক ভাবে পরিবেশ বলে । 

বায়ুর উপাদান (Components of Air)

প্রতিটি 100% বায়ুতে আয়তন অনুপাতে  নিম্নলিখিত উপাদান গুলি থাকে ।

নাইট্রোজেন [tex]\left( {{N_2}} \right) \to [/tex]77.17%

অক্সিজেন [tex]\left( {{O_2}} \right) \to [/tex]20.60%

কার্বন ডাই অক্সাইড [tex]\left( {C{O_2}} \right) \to [/tex]0.03%

জলীয় বাষ্প [tex]\left( {{H_2}O} \right) \to [/tex]1.40%

আন্যান্য গ্যাস [tex] \to [/tex]0.80%

 

জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র (Bio-geo-chemical cycle)

সংজ্ঞা – যে চক্রাকার পথে জীবদেহ গঠনোপযোগী রাসায়নিক মৌল গুলি ( C, H, O, N, P, S, Ca ইত্যাদি ) পরিবেশ থেকে জীবদেহে এবং জীবদেহ থেকে পরিবেশে আবর্তিত হয় তাকে জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র বলে ।

পরিবেশে মৌল উপাদানের ঘাটতি ঘটে না কেন ?

পরিবেশে মৌল উপাদানের ঘাটতি না হওয়ার প্রধান কারণ হল জীব থেকে পরিবেশে এবং পরিবেশ থেকে জীব দেহে উপাদান সমূহের প্রবাহ অব্যাহত থাকে ।

১৷ নির্গম পথ – জীব দেহ থেকে মৌল উপাদানের সমূহের পরিবেশে নির্গত হওয়াকে নির্গম পথ বলে । জীবের শ্বসন রেচন এবং মৃত্যুতে মৌল উপাদান সমূহ জীব জগৎ থেকে পরিবেশে ফিরে আসে । এ ছাড়া ভৌত রাসায়নিক ও জৈবিক ক্রিয়ায় নির্গম পথ সংগঠিত হয় ।

২৷ আগম পথ – পরিবেশ থেকে মৌল উপাদান সমূহের জীব জগতে প্রবেশকে আগম পথ বলে । জীবের সালোকসংশ্লেষ, শ্বসন নাইট্রোজেন সংবদ্ধ প্রভৃতি ক্রিয়ায় মৌলিক উপাদান সমূহ পরিবেশ থেকে জীবদেহে প্রবেশ করে । এছাড়া আগম পথও ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক ক্রিয়ায় সংগঠিত হয়।

জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্রের প্রকারভেদ

জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র প্রধানত দুই প্রকার । যথা – গ্যাসীয় প্রকৃতির (Gaseous type) এবং পলল প্রকৃতির (Sedimentary type) ।

 

কার্বন , অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন চক্রের প্রয়োজনীয়তা

কার্বন চক্রের তাৎপর্য

কার্বন চক্রের মাধ্যমে প্রকৃতিতে কার্বনের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং প্রকৃতির কার্বনের ভাণ্ডার কখনও শূন্য হয় না । ফলে বিশ্বে জীব কুলের অস্তিত্ব বজায় থাকে ।

 

অক্সিজেন চক্রের তাৎপর্য

১৷ জীবদেহে বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রনের জন্য যে অফুরন্ত শক্তির প্রয়োজন তা প্রধানত শ্বসন ক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয় । শ্বসন ক্রিয়ার জন্য প্রতিটি জীব কোষে অনবরত অক্সিজেন সরবরাহ প্রয়োজন । জীব কর্তিক অনবরত অক্সিজেন গ্রহণের ফলে, অক্সিজেন গ্যাস নিঃশেষ হয়ে যেত । কিন্তু অক্সিজেন চক্রের মাধ্যমে পরিবেশে অক্সিজেনের ভাণ্ডার কখনও শূন্য হয় না । সুতরাং পরিবেশে অক্সিজেনের ভারসাম্য বজায় রাখা অক্সিজেন চক্রের প্রধান তাৎপর্য । 

২৷ অক্সিজেন চক্র পরোক্ষভাবে কার্বন চক্রের ভারসাম্য বজায় রাখে । জৈব বস্তুর দহন ও জারনের জন্য অক্সিজেনের উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন । অক্সিজেন জৈব বস্তুকে জারিত করে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে । ফলে পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডের ভারসাম্য কখনও শূন্য হয় না ।

৩৷ বিভিন্ন ভৌত ও জীবজ ক্রিয়ায় উৎপন্ন অক্সিজেন কিছু ওজন গ্যাসে রূপান্তরিত হয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরিভাগে ওজনস্ফিয়ার নামে একরকম আবরন স্তর সৃষ্টি করে । যা ক্ষতিকারক বিভিন্ন রকম মহাজাগতিক রশ্মি এবং সূর্যালোকের অতি বেগুনী রশ্মিকে শোষণ করে জীব জগতৎকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে ।

 

নাইট্রোজেনের তাৎপর্য

১৷ নাইট্রোজেন চক্রের মাধ্যমে প্রকৃতিতে নাইট্রোজেনের ভারসাম্য বজায় থাকে ।

২৷ জীবদেহের কোষ গঠনের জন্য যে নাইট্রোজেনের প্রয়োজন হয় তা নাইট্রোজেন চক্রের মাধ্যমেই জীবদেহে পরিবাহিত হয় । ফলে যুগ যুগ ধরে জীবকুলের চিরস্থায়িত্ব বজায় থাকে ।

*****

Related Items

আরশোলার গমন

চলা ফেরা বা হাঁটার জন্য আরশোলার তিন জোরা সন্ধিল পদ বর্তমান। আরশোলার পৃষ্ঠ দেশে দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ডকে মোট দু জোরা ডানা আছে। আরশোলার দু জোরা ডানার মধ্যে প্রথম ডানা জোরা শক্ত ও পুরু। তারা উড্ডয়নে সাহায্য করে না। দ্বিতীয় ডানা জোরা স্বচ্ছ ও পাতলা ...

কেঁচোর গমন

প্রাণীর নাম – কেঁচো, গমন অঙ্গের নাম, গমনে সাহায্যকারী পেশীর নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - কেঁচোর দেহ খণ্ডতলের অঙ্গীয় তলে অবস্থিত আণুবীক্ষণিক এক আয়তন কণ্টক সদৃশ্য অঙ্গ হল সিটি । সিটির এক প্রান্ত দেহ অভ্যন্তরস্ত থলির মধ্যে থাকে। ...

অ্যামিবার গমন

প্রাণীর নাম - অ্যামিবা, গমন অঙ্গের নাম, গমন পদ্ধতির নাম, গমন পদ্ধতি - ক্ষনপদ হল অ্যামিবার কোষ পর্দা সমূহ দেহ প্রোটোপ্লাজমের অংশ বিশেষ যা নলাকারে প্রসারিত হয়। গমনের সময় ক্ষনপদ সামনের দিকে প্রসারিত হয় এবং কোনো কঠিন বস্তুর সঙ্গে ক্ষনপদটিকে দৃঢ় ভাবে আবদ্ধ করে।

উদ্ভিদ দেহে ন্যাস্টিক চলন

উদ্ভিদের স্থায়ী অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের তীব্রতা বা ব্যাপ্তি অনুসারে হয় , তখন তাকে ন্যাস্টিক চলন বা ব্যাপ্তি চলন বলে। ন্যাস্টিক চলনের প্রকারভেদ , ফটোন্যাস্টি, থার্মোন্যাস্টি, নিকটিন্যাস্টি, কেমোন্যাস্টি, সিসমোন্যাস্টি। ...

উদ্ভিদ দেহে ট্রপিক চলন

উদ্ভিদ অঙ্গের চলন যখন উদ্দীপকের গতিপথ অনুসরন করে হয় তখন তাকে ট্রপিক চলন বা দিকনির্ণীত চলন বা ট্রপিজম বলে। ট্রপিক চলনের প্রকারভেদ, ফটোট্রপিক চলন, ফটোট্রপিক চলনের পরীক্ষা, জিওট্রপিক চলন, জিওট্রপিক চলনের পরীক্ষা, হাইড্রোট্রপিক চলন ...