বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা (Need for Waste Management)

Submitted by avimanyu pramanik on Fri, 11/05/2021 - 22:16

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা (Need for waste management) : ভূপৃষ্ঠস্থ জলের কলুষিতকরণ, মৃত্তিকা সংক্রমণ, দূষণ, লিশেট ইত্যাদির মাধ্যমে বর্জ্য পরিবেশকে প্রভাবিত করে থাকে । বর্জ্যপদার্থ কঠিন বা তরলরূপে জলাশয়ে এসে পড়লে তা জলের রাসায়নিক গঠনের পরিবর্তন ঘটিয়ে জলকে কলুষিত করে । একে জলদূষণ বলে । এর ফলে সেই জল পানের অযোগ্য হয়ে ওঠে এবং তা মানুষ ও পশুপাখিদের জীবনের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে । ক্ষতিকর রাসায়নিক তরল বর্জ্যপদার্থ মাটির ভিতর প্রবেশ করে মাটির সঙ্গে মিশে তা মাটিকে কলুষিত করে মৃত্তিকাদূষণ ঘটায় । শিকড়ের মাধ্যমে এই সকল ক্ষতিকর পদার্থ উদ্ভিদদেহে সংক্রমিত হয় । মানুষ এবং প্রাণীরা যখন এই সংক্রামিত উদ্ভিদের ফলমূল খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে, তখন তাদের শরীর স্বাস্থ্যের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে । দূষিত বর্জ্যপদার্থ ভূমি ও বায়ুদূষণ ঘটায় । এই প্রকার দূষিত বায়ু মানুষ ও প্রাণীর শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি করে ও নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যার সৃষ্টি করে । ফলে নানা রকমের মারাত্মক দীর্ঘস্থায়ী রোগব্যাধির সৃষ্টি হয় । এছাড়া ক্ষতিকর বর্জ্যপদার্থ থেকে নিঃসৃত দূষিত জল যখন চুঁইয়ে পড়ে কোনো অঞ্চলকে সংক্রামিত করে, তাকে লিশেট বলে । এই প্রকার দূষিত রাসায়নিক তরল মিশ্রণ যখন ভূপৃষ্ঠস্থ জল ও ভৌমজলে প্রবেশ করে, তখন তার ঋণাত্মক প্রভাব জীবকুলের ওপর বিপর্যয় সৃষ্টি করে ।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল —

(১) বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্জ্যজনিত দূষণ রোধ করা যেতে পারে ।

(২) এর মাধ্যমে বর্জ্যজনিত দুর্গন্ধও নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।

(৩) বর্জ্যের পচনে মহামারি ছড়ায় । নিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা মহামারির আশঙ্কাকে দূর করে ।

(৪) স্তূপীকৃত বর্জ্য দৃশ্যদূষণ করে । বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় দৃশ্যদূষণ রোধ করা যায় ।

(৫) পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে ।

(৬) গৃহস্থালি ও পৌরসভার বর্জ্য রাস্তাঘাটকে নোংরা করে । বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব ।

(৭) বর্জ্যের মাধ্যমে জলদূষণ ঘটে ও জলবাহিত রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে । তাই, এর প্রতিকারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একান্ত প্রয়োজন ।

*****

Comments

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত