হিমশৈল এবং হিমপ্রাচীর কী ?

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 01/04/2022 - 22:10

প্রশ্ন : হিমশৈল এবং হিমপ্রাচীর কী ?

হিমশৈল (Iceberg) : মহাদেশীয় হিমবাহের হিমরেখা সমুদ্রপৃষ্ঠ হওয়ায় কখনো কখনো হিমাবাহের বিশালাকার বরফের অংশ ভেঙে সমুদ্রের জলে এসে পড়ে ও জলে ভাসতে থাকে । এইরূপ সমুদ্রের জলে ভাসমান ও গতিশীল বিশালাকার বরফের স্তুপকে হিমশৈল বলে । হিমশৈল মিষ্টি জল দিয়ে তৈরি হয় । হিমশৈলের মাত্র [tex] {1 \over 9}[/tex] অংশ জলের উপরে ভেসে থাকে এবং [tex] {8 \over 9}[/tex] অংশ জলে ডুবে থাকে । হিমশৈলে প্রচুর পরিমাণে পলি, বালি, কাদা ও আবর্জনা থাকে এবং পরে তা গলে গিয়ে অগভীর সমুদ্রবক্ষে সঞ্চিত হয়ে মগ্নচড়া গড়ে তোলে, যা বাণিজ্যিক মৎস্য ক্ষেত্র গড়ে উঠতে সহায়ক হয় । হিমশৈল অনেক ক্ষেত্রেই জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে । আন্টার্কটিকা ও গ্রিনল্যান্ড হল হিমশৈলের প্রধান উৎস ।

এই রকম একটি হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে টাইটানিক জাহাজ তার প্রথম যাত্রাতেই সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্ক যাওয়ার পথে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই এপ্রিল উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে গভীর সমুদ্রে ডুবে যায় ।

হিমপ্রাচীর :

উত্তর আটল্যান্টিক মহাসাগরে সুমেরু অঞ্চল থেকে আগত লাব্রাডর স্রোতের শীতল ও গাঢ় সবুজ রঙের জল এবং উপসাগরীয় স্রোতের উষ্ণ ও গাঢ় নীল জল বেশ কিছু দূর পর্যন্ত পাশাপাশি কিন্তু বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়েছে । এই দুই বিপরীতমুখী স্রোতের মাঝে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা স্পষ্ট দেখা যায়, এই সীমারেখাকে হিমপ্রাচীর বলে । কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত আটলান্টিক মহাসাগরে হিমপ্রাচীরের সীমারেখা বহুদূর পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যায় । বিপরীতমুখী দুই সমুদ্রস্রোতের উষ্ণতার পার্থক্যের জন্য এই অঞ্চলে প্রায়ই ঘন কুয়াশা ও প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয় ।

*****

Comments

Related Items

নর্মদা নদী (The Narmada)

নর্মদা নদী (The Narmada) : মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকন্টক থেকে উৎপন্ন হয়ে নর্মদা নদী উত্তর-পশ্চিমে বেঁকে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র হয়ে গুজরাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিন্ধ্য ও সাতপুরার সংকীর্ণ গিরিখাত অতিক্রম করে

ব্রহ্মপুত্র নদ (The Brahmaputra)

ব্রহ্মপুত্র নদ : তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং-দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে নামচাবারওয়া শৃঙ্গের কাছে চুলের কাটার মত বেঁকে অরুণাচল প্রদেশের মধ্য দিয়ে ডিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে । এর মোট দৈর্ঘ্য ২,৯০০ কিমি, এর মধ্

সিন্ধু নদ (The Indus)

সিন্ধু নদ : সিন্ধু নদ তিব্বতের মানস সরোবরের উত্তরে অবস্থিত সিন-কা-বাব জলধারা থেকে উৎপন্ন হয়ে উত্তর-পশ্চিমে প্রথমে তিব্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পরে লাদাখ অঞ্চল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে । সিন্ধু নদের মোট দৈর্ঘ্য ৩,১৮০ কিমি এবং এর মধ

গঙ্গা নদী (The Ganges)

গঙ্গা নদী : গঙ্গা ভারতের শ্রেষ্ঠ নদী এবং ভারতের দীর্ঘতম নদী । গঙ্গানদীর মোট দৈর্ঘ্য ২৫১০ কিমি এবং এর মধ্যে ২০১৭ কিমি ভারতে প্রবাহিত । কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের

ভারতের নদনদী (Rivers of India)

ভারতের নদনদী : ভারতে অসংখ্য নদনদী বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত হয়েছে । উৎস, প্রবাহের অঞ্চল, এবং মোহানা অনুসারে ভারতের নদনদীকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় । যেমন— (১) উত্তর ভারতের নদী এবং (২) দক্ষিণ ভারতের নদী ।