অ্যাড্রিনালিন (Adrenaline)

Submitted by arpita pramanik on Sun, 05/22/2011 - 12:34

অ্যাড্রিনালিন (Adrenaline)

অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির মেডালা অঞ্চল থেকে অ্যাড্রিনালিন হরমোন নিঃসৃত হয় ।  অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিদ্বয় বৃক্ক দুটির ওপর অবস্থিত । অ্যাড্রিনালিনকে এপিনেফ্রিন [epinephrine] -ও বলা হয় ।

অ্যাড্রিনালিনের কাজ [Functions of Adrenaline]:- অ্যাড্রিনালিন প্রাণীদের সংকটকালীন বা জরুরিকালীন হরমোন [emergency hormone] নামে পরিচিত, কারণ বিপদকালে এই হরমোন দেহকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বনের উপযোগী করে তোলে । অ্যাড্রিনালিন হরমোনের প্রধান কাজগুলি হল :

[১]  সংবহনতন্ত্রের উপর ক্রিয়া [Action on circulatory system]:- অ্যাড্রিনালিন হরমোন :

[ক] হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি করে,

[খ] রক্তবাহকে সংকুচিত করে রক্তচাপ বাড়ায়,

[গ] কার্ডিয়াক আউট পুট [cardiac output] বাড়িয়ে দেয় ।

[  হৃৎপিণ্ডের প্রতি সংকোচনে যে নির্দিষ্ট পরিমাণ রক্ত হৃৎপিণ্ডের নিলয় থেকে রক্তস্রোতে নিক্ষিপ্ত হয় তাকে কার্ডিয়াক আউট পুট বা হৃদ উত্পাদ বলে । হৃৎপিণ্ডের প্রতি সংকোচনে এই রক্তের পরিমাণ প্রায় 70 ml এবং প্রতি মিনিটে প্রায় 5 লিটার । ]

[২]  শ্বসনতন্ত্রের উপর ক্রিয়া [Action on respiratory system]:- ব্রঙ্কিওলের (ক্রোমশাখার) পেশিকে শিথিল করে তাদের গহ্বর প্রসারিত করে । এই কারণে হাঁপানির শ্বাসকষ্ট দূর করার জন্য অ্যাড্রিনালিন প্রয়োগ করা হয় ।

[৩]  পেশির ওপর ক্রিয়া [Action on muscles] :- এই হরমোনের প্রভাবে পেশির উত্তেজিতা এবং সংকোচনশীলতা ধর্ম বৃদ্ধি পায় ।

[৪]  রেচনতন্ত্রের ওপর ক্রিয়া [Action on excretory system]:- এই হরমোনের প্রভাবে মূত্রের পরিমাণ বেড়ে যায়, মূত্রের সঙ্গে শর্করা নির্গত হয় এবং মূত্রাশয়ের স্ফিংটার পেশি সংকুচিত হয় ।

[৫]  বিপাকের ওপর ক্রিয়া [Action on Metabilism]:- এই হরমোন B.M.R. কে বাড়িয়ে দেয় এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায় ।

অ্যাড্রিনাল মেডালা থেকে অ্যাড্রিনালিন ছাড়াও নর-অ্যাড্রিনালিন নামে একধরণের হরমোন নিঃসৃত হয় । এর ক্রিয়া অ্যাড্রিনালিনের বিপরীত ।

*****

Related Items

ছত্রাক (Fungi)

ক্লোরোফিলবিহীন পরভোজী পুষ্টিসম্পন্ন ও ইউক্যারিওটিক প্রকৃতির সমাঙ্গদেহী উদ্ভিদদের ছত্রাক বলা হয় । ছত্রাকের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম । মানবজীবনে ছত্রাকের উপকারিতা ও অপকারিতা । পেনিসিলিয়াম, ঈস্ট প্রভৃতি উপকারী ছত্রাক । পেনিসিলিয়াম এক রকমের বহুকোশী মৃতজীবী ...

জীবাণু বা মাইক্রোবস (Microbes)

যে সমস্ত অতি ক্ষুদ্র এবং এককোশী বা বহুকোশী জীবদের খালি চোখে দেখা যায় না অথচ কেবলমাত্র অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায়, তাদেরই সাধারণভাবে জীবাণু বলে । অতিক্ষুদ্র ও আণুবীক্ষণিক জীবদের এককথায় জীবাণু বা অণুজীব বা মাইক্রোবস বলা হয় ।

রোগসৃষ্টিকারী ভাইরাসের রোগ সংক্রমণ প্রক্রিয়া

ভাইরাস বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে, যেমন - ইনফ্লুয়েঞ্জা, AIDS, পোলিও, জল বসন্ত, মাম্পস, হাম, এনকেফালাইটিস, জলাতঙ্ক, পা ও মুখের ঘা, জন্ডিস, ডেঙ্গু জ্বর প্রভৃতি । ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস প্রধানত মানুষের শ্বসনতন্ত্রকে আক্রমণ করে, ফলে রোগীর হাঁচি, কাশি ও নির্গত মিউকাসের মাধ্যমে ...

ব্যাকটিরিয়া আক্রমণকারী ভাইরাস বা ব্যাকটিরিওফাজ

1917 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী দ্য হেরেলী ব্যাকটিরিয়া আক্রমণকারী ভাইরাসদের ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাস বা ব্যাকটিরিওফাজ বা ফাজ নামে অভিহিত করেন । এখন পর্যন্ত যেসব ব্যাকটিরিওফাজের অস্তিত্ব সম্পর্কে ভালো করে জানা গিয়েছে, তাদের মধ্যে 'T' শ্রেণির অন্তর্গত ব্যাকটিরিওফাজই প্রধান । ...

ভাইরাসে জড়ের ও প্রাণের লক্ষণ

ভাইরাসের দেহে সাইটোপ্লাজম থাকে না । ভাইরাস কোনো বহিঃস্থ উদ্দীপকে সাড়া দেয় না । ভাইরাসের চলন ক্ষমতা নেই । ভাইরাসের দেহে কোনোরকম বিপাক ক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না । পোষকের দেহ-কোশে ভাইরাস বংশবিস্তারে সক্ষম । ভাইরাসের দেহে প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিডের ...