লম্ব প্রিজম (Right Prism)

Submitted by arpita pramanik on Wed, 02/16/2011 - 15:37

লম্ব প্রিজম (Right Prism)

সূচনা (Introduction) :- আয়তঘন ও ঘনকের তল আয়তন (ঘনফল) পরিমাপ সম্মন্ধে এর আগে আমরা জেনেছি । এই অধ্যায়ে প্রিজম ঘন বস্তুটি সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব । 

প্রিজম সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আমাদের বহুতল সম্পর্কে আলোচনা করা দরকার । কয়েকটি সমতল দ্বারা সীমাবদ্ধ বস্তুকে বহুতলক (Polyhedron) বলে । সমতলগুলিকে বহুতলটির তল (Surface or face) বলা হয় । দুটি তল যে সরলরেখায় ছেদ করে তাকে প্রান্তিকী বা প্রান্তরেখা (Edge) বলা হয় । প্রান্তিকী গুলি যে বিন্দুতে মিলিত হয় শীর্ষ (Vertex) বলা হয় । ভিন্ন তলে অবস্থিত এমন দুটি শীর্ষের সংযোগ রেখাকে বলা হয় কর্ণ (Diagonal) বলে । 

প্রিজমের সংজ্ঞা (Defination of Prism) :- কোনো বহুতলকের র্শ্বতল (Side face) গুলি সামান্তরিক এবং প্রান্ততল (End face) দুটি সমান্তরাল ও সর্বসম হলে তাকে প্রিজম (Prism) বলে । দুটি পার্শ্বতলের ছেদ রেখাকে পার্শ্বপ্রান্তিকী (Side edge) বলা হয় । যে প্রিজমের পার্শ্বতল গুলি আয়তক্ষেত্র তাকে লম্ব প্রিজম (Right Prism) বলে । অন্যথায় তির্যক প্রিজম বলে । এর পরে আমরা লম্ব প্রিজম সম্মন্ধে আলোচনা করব । লম্ব প্রিজমের পার্শ্বপ্রান্তিকীকে প্রিজমের উচ্চতা (Height) বলে । ওই পার্শ্বপ্রান্তিকী প্রান্ততলদ্বয়ের সংলগ্ন বহু দুটির উপরে লম্ব হয় । প্রান্ততল দুটির মধ্যে যে প্রান্ততলের উপরে প্রিজমটি দন্ডায়মান থাকে তাকে প্রিজমের ভূমি (Base) বলে । যেকোনো প্রান্ততলকে ভূমি ধরা হয় । প্রিজমের ভূমি ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ ইত্যাদি হলে প্রিজমটিকে যথাক্রমে ত্রিভুজাকার প্রিজম, চতুর্ভুজাকার প্রিজম বলে । আয়তঘন হল আয়তকার ভূমি বিশিষ্ট প্রিজম । বর্গাকার ভূমি বিশিষ্ট কোনো প্রিজমের উচ্চতা ভূমির বাহুর সমান হলে প্রিজমটি ঘনক হয় । প্রিজমের বাহুর সংখ্যা n হলে প্রিজমের পার্শ্বতলের সংখ্যা n পার্শ্বপ্রান্তিকীর সংখ্যা n , সমগ্র তলের সংখ্যা n + 2 , সমগ্র প্রান্তিকীর সংখ্যা 3n এবং শীর্ষের সংখ্যা 2n হয় । 

Prism

প্রিজমের তল ও আয়তন পরিমাপ সংক্রান্ত সূত্রাবলি :

1. পার্শ্বতলসমূহের ক্ষেত্রফল =(ভূমির পরিসীমা [tex] \times [/tex] উচ্চতা) বর্গ একক 

2. সমগ্রতলের ক্ষেত্রফল = (পার্শ্বতলগুলির ক্ষেত্রফল + 2 [tex] \times [/tex] ভূমির ক্ষেত্রফল) বর্গ একক 

3. আয়তন বা ঘনফল = (ভূমির ক্ষেত্রফল [tex] \times [/tex] উচ্চতা) ঘন একক 

উদাহরণ 1. একটি প্রিজমের ভূমি 6 সেমি , 8 সেমি ও 10 সেমি বাহুবিশিষ্ট ত্রিভুজ এবং উচ্চতা 5 সেমি । প্রিজমটির সমগ্র তলের ক্ষেত্রফল ও আয়তন নির্ণয় করো । 

সমাধান : ভূমির পরিসীমা = ( 6 + 8 + 10 ) সেমি = 24 সেমি 

অর্ধ পরিসীমা = ( [tex]24 \div 2[/tex] ) সেমি = 12 সেমি 

ভূমির ক্ষেত্রফল

= [tex]\sqrt {12\left( {12 - 6} \right)\left( {12 - 8} \right)\left( {12 - 10} \right)} [/tex] বর্গসেমি 

= [tex]\sqrt {12 \times 6 \times 4 \times 2} [/tex] বর্গসেমি

= [tex]4 \times 2 \times 3[/tex] বর্গসেমি

= 24 বর্গসেমি

পার্শ্বতলসমূহের ক্ষেত্রফল

= (ভূমির পরিসীমা [tex] \times [/tex] উচ্চতা) বর্গ একক 

= (24 [tex] \times [/tex] 5) বর্গসেমি

= 120 বর্গসেমি। 

সমগ্রতলের ক্ষেত্রফল

= (পার্শ্বতলগুলির ক্ষেত্রফল + 2 [tex] \times [/tex] ভূমির ক্ষেত্রফল) বর্গ একক 

= (120 + 2 [tex] \times [/tex] 24) বর্গসেমি 

= (120 + 48) বর্গসেমি 

= 168 বর্গসেমি 

আয়তন 

= (ভূমির ক্ষেত্রফল [tex] \times [/tex] উচ্চতা) ঘন একক 

= (24 [tex] \times [/tex] 5) ঘনসেমি 

= 120 ঘনসেমি

Related Items

পূরক কোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাত

জ্যামিতিতে আমরা দেখেছে যখন দুটি কোণের মানের সমষ্টি 90 deg হয় তখন কোণ দুটির একটিকে অপরটির পূরক কোণ ( Complementary Angles ) বলে।যেমন , 60 deg + 30 deg = 90 deg, সুতরাং 60 deg কোণের পূরক কোণ 30 deg এবং 30 deg কোণের পূরক কোণ হবে 60 deg .

ত্রিকোণমিতিক অনুপাত

ত্রিকোণমিতিক অনুপাত নির্ণয় | ত্রিকোণমিতিক অনুপাত ও তাদের নাম | ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের ধর্ম | কয়েকটি কোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের মান | কয়েকটি আদর্শ কোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের মান নির্ণয়

বিবিধ ঘনবস্তুসমূহ (Various 3D Figures)

এই অধ্যায়ে আমরা একাধিক ঘনবস্তুর পারস্পরিক সম্পর্কে বিচার করে মিলিতভাবে যে সমস্যাগুলির সম্মুখীন হব, তার সমাধান করা শিখবো । সুবিধার জন্য ওই ঘনবস্তু সম্পর্কিত সূত্রাবলির তালিকা এখানে একসাথে দেওয়া হল ।

গোলক (Sphere)

আমরা প্রত্যেকেই ফুটবল, ভূগোলক, ক্রিকেট বল বা খেলার মার্বেল দেখেছি । এগুলোই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে দেখা গোলকের উদাহরণ । গোলক এমন একটি ঘনবস্তু যা একটি মাত্র বক্রতল দিয়ে তৈরী ।

লম্ব-বৃত্তাকার শঙ্কু (Right-circular Cone)

কোনো সমকোণী ত্রিভুজের সমকোণ ধারক যেকোনো একটি বাহুকে স্থির রেখে বা অক্ষ ধরে ত্রিভুজটিকে একবার পূর্ণ আবর্তন করালে যে ঘনবস্তু উৎপন্ন হয়, তাকে শঙ্কু বলে ।