অনুপাত ও সমানুপাত

Submitted by arpita pramanik on Wed, 06/01/2011 - 18:25

অনুপাত ও সমানুপাত (Ratio and Proportion)

অনুপাত (Ratio) :- পাটিগণিতে দুটি বাস্তব সংখ্যার অনুপাতকে একটি ভগ্নাংশের আকারে প্রকাশ করা যায় । ভগ্নাংশের লব ও হরকে যথাক্রমে অনুপাতের পূর্বপদ (Antecedent) ও উত্তরপদ (Consequent) বলে । a ও b রাশির দুটির অনুপাতকে a : b  আকারে লেখা হয়, এবং পড়া হয় " a অনুপাত b " ( a is to b ) ।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, a:b=ab [b ≠ 0]

[অনুপাতের দুটি পদের মধ্যে গ.সা.গু যেন 1হয়  অর্থাৎ অনুপাতকে সবসময় সর্বনিম্ন আকারে প্রকাশ করা হয় । ]

অনুপাতের দুটি পদ সমান হতে পারে আবার নাও হতে পারে । যদি সমান হয়, যেমন a : a তাহলে তাকে বলে সাম্যানুপাত (Ratio of equality) । আর যদি অসমান হয়, যেমন b : c তাহলে তাকে বলে বৈষম্যানুপাত (Ratio of inequality) । 

গুরু অনুপাত (Ratio of greater inequality) ও লঘু অনুপাত (Ratio of less inequality):-

যেখানে পূর্বপদের মান উত্তরপদের মানের চেয়ে বড়ো  (a : b, a > b অর্থাৎ ab>1) হয়, সেখানে অনুপাতকে গুরু অনুপাত (Ratio of greater inequality) বলে । আর পূর্বপদের মান উত্তরপদের চেয়ে ছোট (c : d, c < d অর্থাৎ ab<1 ) হলে তাকে লঘু অনুপাত (Ratio of less inequality) বলে ।

[ কোনো  অনুপাতের পদ দুটিকে শূন্য ব্যতীত একই সংখ্যা দ্বারা গুণ বা ভাগ করলে অনুপাতের কোন পরিবর্তন  হয় না ]

ব্যস্ত-অনুপাত (Inverse ratio):-

দুটি অনুপাতের মধ্যে যদি প্রথমটির পূর্বপদ দ্বিতীয়টির উত্তরপদের সমান হয় এবং দ্বিতীয়টির পূর্বপদ প্রথমটির উত্তরপদের সমান হয়, তাহলে একটিকে অপরটির ব্যস্ত-অনুপাত (Inverse ratio) বলে । 

যেমন a : b এর ব্যস্ত-অনুপাত হবে b : a ।

[ব্যস্ত-অনুপাতে দুটি অনুপাতকে ভগ্নাংশের আকারে প্রকাশ করলে ওরা পরস্পরের অন্যোন্যক  হবে ]

যৌগিক বা মিশ্র-অনুপাত (Composition of ratio) :

দুই বা  ততোধিক অনুপাতের পূর্বপদগুলির এবং উত্তরপদগুলির গুণফলকে অনুপাতের আকারে প্রকাশ করলে যে অনুপাত পাওয়া যায় তাকে যৌগিক বা মিশ্র-অনুপাত (Composition of ratio) বলে । 

যেমন, a : b, c : d এবং  e : f অনুপাতের যৌগিক বা মিশ্র-অনুপাত হবে a x c x e : b x d x f ।

সমানুপাত (Proportion): - দুটি অনুপাত পরস্পর সমান হলে তাদের সমানুপাত বলে । যেমন 4 টাকা : 6 টাকা = 2 : 3; আবার 8 গ্রাম : 12 গ্রাম = 2 : 3; সুতরাং 4 টাকা : 6 টাকা ও 8 গ্রাম : 12 গ্রাম হলো সমান অনুপাত এদেরকে সমানুপাত বলে । সমানুপাতের পদগুলিকে সমানুপাতী বলে । a : b = c : d এখানে a, b, c এবং d কে সমানুপাতী বলে । সমানুপাতকে a : b : : c : d আকারে প্রকাশ করা হয়.সমানুপাতের প্রথম ও চতুর্থ পদকে বলা হয় প্রান্তীয় পদ (extremes or end-terms) এবং মাঝের পদগুলিকে বলে মধ্যপদ (means or middle terms) । এখানে a এবং d কে বলে প্রান্তীয় পদ ও  b এবং c কে  বলে মধ্যপদ । আবার d কে a, b, c এর চতুর্থ সমানুপাতী বলে । 

ক্রমিক সমানুপাতী (Continued Proportion) :

যদি a : b :: b : c হয় অর্থাৎ ab=bc হয় তবে a, b, c কে ক্রমিক সমানুপাতী (Continued Proportion) বলে । b কে a ও c এর মধ্য সমানুপাতী (Mean Proportional) বলে । 

এখন দেখা যাচ্ছে a , b ও c ক্রমিক সমানুপাতে থাকবে যদি তাদেরকে ac=b2 আকারে থাকে । অর্থাৎ তিনটি পদ ক্রমিক সমানুপাতী হলে প্রথম ও তৃতীয় পদের গুণফল মধ্য পদের বর্গের সমান হয় । 

[তিনটির অধিক পদও ক্রমিক সমানুপাতী হতে পারে । যদি ab=bc=cd হয় তবে a, b, c, d ক্রমিক সমানুপাতী । ]

সমানুপাতের কয়েকটি প্রয়োজনীয় ধর্ম (Some Important Properties of Proportion) :

(১) একান্তর প্রক্রিয়া (Alter nendo):

a : b = c : d হলে, a : c = b : d হবে 

প্রমাণ  : 

a:b=c:dab=cdab×bc=cd×bcac=bd 

[ প্রমাণিত ]

(২) বিপরীত বা ব্যস্ত-প্রক্রিয়া ( Invertendo )

a : b = c : d হলে, b : a = d : c হবে 

প্রমাণ  :

ab=cd

1. উভয়পক্ষে ab এবং cd দিয়ে ভাগ করে পাই,

1÷ab=1÷cdba=dc

অতএব 

ab=cdba=dca:b=c:db:a=d:c

[ প্রমাণিত ]

(৩) যোগ প্রক্রিয়া ( Componendo )

 a : b = c : d হলে , ( a + b ) : b = ( c + d ) : d হবে। 

প্রমাণ : 

a:b=c:dab=cdab+1=cd+1a+bb=c+dd(a+b):b=(c+d):d

[ প্রমাণিত ]

(৪) ভাগ প্রক্রিয়া ( Dividendo )

a : b = c : d হলে, ( a - b ) : b = ( c - d ) : d হবে। 

প্রমাণ :

a:b=c:dab=cdab1=cd1abb=cdd(ab):b=(cd):d

[প্রমাণিত ]

(৫) যোগ-ভাগ প্রক্রিয়া ( Componendo  and Dividendo )

a : b = c : d হলে, ( a + b ) : ( a - b ) = ( c + d ) : ( c - d ) হবে 

প্রমাণ :  

a:b=c:d

ab=cd [যোগ ও ভাগ প্রক্রিয়া করে পাই ]

a+bab=c+dcd

(a+b):(ac)=(c+d):(cd)

 

[প্রমাণিত ]

বিকল্প প্রমাণ :

মনে করি 

ab=cd=k

অতএব a = bk এবং c = dk

এবার 

a+bab=bk+bbkb=k+1k1

আবার 

c+dcd=dk+ddkd=k+1k1

a+bab=c+dcd

(৬) সংযোজন প্রক্রিয়া ( Addendo )

a : b = c : d = e : f হলে, প্রতিটি অনুপাতের মান ( a + c + e ) : ( b+ d + f ) হবে, অর্থাৎ 

ab=cd=ef=a+c+eb+d+f

সাধারণভাবে 

ab=cd=ef=.........=a+c+e+........b+d+f+.......

প্রমাণ :

মনে করি 

ab=cd=ef=k

অতএব  a = bk , c = dk , e = fk

এবার 

a+c+eb+d+f=bk+dk+fkb+d+f=k(b+d+f)(b+d+f)=kab=cd=ef=k=a+c+eb+d+f

( প্রমাণিত )

মন্তব্য : 

ab=cd=ef=..........=a+c+e+.........b+d+f+........,[b,d,f,.......0]

*****

Comments

Related Items

পাটিগনিত (Arithmetic)

প্রথম অধ্যায়ঃ মিশ্রণ, দ্বিতীয় অধ্যায় : লাভ-ক্ষতি , তৃতীয় অধ্যায় : সুদকষা , চতুর্থ অধ্যায় : সমাহার বৃদ্ধি

Syllabus for Class X Standard Mathematics

পাটি গণিত (Arithmetic), বীজগণিত (Algebra), জ্যামিতি (Geometry), পরিমিতি(Mensuration), ত্রিকোণমিতি(Trigonometry)

Class X Mathematics Study material

গণিত, দশম শ্রেণির জন্য, বিষয়- মিশ্রণ, লাভ-ক্ষতি, সুদকষা, সমাহার বৃদ্ধি, গ.সা.গু. ও ল.সা.গু., সহ-সমীকরণ, দ্বিঘাত সমীকরণ, অনুপাত ও সমানুপাত, অসমীকরণ, দ্বিঘাত করণী, বৃত্ত সংক্রান্ত উপপাদ্য, বৃত্তের স্পর্শক সংক্রান্ত উপপাদ্য, সদৃশতা সংক্রান্ত উপপাদ্য ...