সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ

Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 12/31/2020 - 22:26

সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা (Early Stages of Collective Action) : ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে জুন রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পলাশির যুদ্ধে পরাজিত করলে বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের সূচনা হয় । এই যুদ্ধের একশো বছর পর ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহাবিদ্রোহ বা সিপাহি বিদ্রোহ সংঘটিত হয় । ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে মার্চ ব্যারাকপুর সেনানিবাসের সিপাহি মঙ্গল পাণ্ডে প্রথম ব্রিটিশশক্তির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে এবং ক্রমে দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা ব্যক্তির নেতৃত্বে এই মহাবিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে । এই বিদ্রোহ ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২০শে জুন পর্যন্ত চলে । এই বিদ্রোহে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারতীয় সিপাহিরা ছাড়াও দেশের সাধারণ মানুষের অনেকেই অংশ গ্রহণ করে । ঔপনিবেশিক অর্থনীতি, শাসন ও শোষণ রাজা, প্রজা প্রভৃতি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সামগ্রিকভাবে ব্রিটিশ বিরোধী করে তোলে । পরিণতিতে ভারতের নানা অঞ্চলের মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন । আঞ্চলিক সীমার গণ্ডি অতিক্রম করে ক্ষোভের এই বহিঃপ্রকাশ অনেকাংশে সর্বভারতীয় রূপ নেয় । হিন্দু ও মুসলমানদের ঐক্য ছিল বিদ্রোহীদের শক্তির মূল উৎস । সিপাহি ও জনগণের মিলিত এই বিদ্রোহের দাপটে ব্রিটিশ প্রশাসন ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে । রাজশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই -এর চেয়ে গণশক্তির মিলিত প্রতিবাদ দমন করা যে অনেক কঠিন কাজ তা ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহে ইংরেজরা উপলব্ধি করে । মহাবিদ্রোহের অনেক আগে থেকেই ভারতবাসী উপলব্ধি করে ব্রিটিশ-বিরোধী জনমত গঠনের একমাত্র উপায় হল সংঘবদ্ধ আন্দোলন এবং এই উপলব্ধি থেকেই উনিশ শতকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশকিছু রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, সভা ও সমিতি গড়ে উঠতে শুরু করে । এজন্য ড. অনিল শীল উনিশ শতককে 'রাজনৈতিক সভাসমিতির যুগ' বলে অভিহিত করেছেন । এই সভা সমিতি গড়ে ওঠার পাশাপাশি ঊনিশ শতকে বিভিন্ন রচনা এবং বিভিন্ন আঁকা ছবি ভারতীয় জাতীয়তাবোধের বিকাশে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে ।

*****

Comments

Related Items

নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ? এই সময়ের দুটি ব্যঙ্গাত্মক বাংলা নাটকের নাম কর । নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

প্রশ্ন:- নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ? এই সময়ের দুটি ব্যঙ্গাত্মক বাংলা নাটকের নাম কর । নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

বাংলায় সমাজ সংস্কার ও শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কার্যাবলি উল্লেখ কর ।

প্রশ্ন:-  বাংলায় সমাজ সংস্কার ও শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কার্যাবলি উল্লেখ কর ।

প্রার্থনা সমাজের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন ? জ্যোতিবা ফুলে কেন স্মরণীয় ? উনিশ শতকের সমাজ সংস্কার আন্দোলনগুলি সমাজে কী প্রভাব বিস্তার করে ?

প্রশ্ন:- প্রার্থনা সমাজের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন ? জ্যোতিবা ফুলে কেন স্মরণীয় ? উনিশ শতকের সমাজ সংস্কার আন্দোলনগুলি সমাজে কী প্রভাব বিস্তার করে ?

প্রার্থনা সমাজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ডঃ আত্মারাম পান্ডুরঙ্গ ।

উনিশ শতকের সমাজ সংস্কার আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য কী ছিল ? ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা কে ? ব্রাহ্মসমাজের সমাজ সংস্কারের লক্ষ্য কী ছিল ?

প্রশ্ন:- উনিশ শতকের সমাজ সংস্কার আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য কী ছিল ? ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা কে ? ব্রাহ্মসমাজের সমাজ সংস্কারের লক্ষ্য কী ছিল ?

উনিশ শতকের সমাজ-সংস্কার আন্দোলনগুলির প্রধান লক্ষ্য ছিল—

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে চার্লস উডের প্রতিবেদনে কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল ?

প্রশ্ন:- ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে চার্লস উডের প্রতিবেদনে কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল ?

শিক্ষা সংক্রান্ত নানা সমস্যার সমাধান করার জন্য ১৮৫৪ সালে চার্লস উডের নেতৃত্বে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয় । এই কমিশনের সুপারিশগুলি ছিল—