ভারত ছাড়ো আন্দোলনের গুরুত্ব

Submitted by avimanyu pramanik on Tue, 08/06/2013 - 11:00

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের গুরুত্ব (Importance of Quit India Movement) :

১৯৪২ সালের ৯ই আগষ্টের ভোর থেকেই ‘ভারত-ছাড়ো’ আন্দোলন শুরু হয়,

(১) প্রথম পর্যায়ে এই আন্দোলন কলকাতা, বোম্বাই, দিল্লী, নাগপুর, আমেদাবাদ, বরোদা, ঢাকা প্রভৃতি শহরে ছড়িয়ে পড়ে ।

(২) মিছিল, মিটিং, পিকেটিং ও হরতাল পালনের মধ্য দিয়ে ছাত্র, যুবক, মধ্যবিত্ত ও শ্রমিক শ্রেণি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে ।

(৩) অল্প সময়ের মধ্যেই ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে বিস্তার করলে জনতা সরকারি টেলিগ্রাফ, রেলপথ প্রভৃতি যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর প্রবল আক্রমণ শুরু করে । থানা, অফিস, আদালতের ওপর ক্রুদ্ধ জনতা চড়াও হয় ।

(৪) গ্রামাঞ্চলে এই আন্দোলন বেশি গভীরে প্রবেশ করেছিল । উত্তর প্রদেশ, বিহারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, মহারাষ্ট্রের সাতারা ও বাংলার মেদিনীপুর জেলায় আন্দোলন সর্বাত্মক আকার ধারণ করে । উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় একটি জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় । বিহারের কৃষক-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশ কনস্টেবলরাও চাকরি ছেড়ে আন্দোলনে যোগ দেয় ।

(৫) ভারত ছাড়ো আন্দোলন ব্যর্থ হলেও ভারতবাসী এই আন্দোলনের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জনের দৃঢ় সংকল্পের কথা বিশ্ববাসীকে জানাতে সক্ষম হয় ।

(৬) ব্রিটিশ সরকার নেতৃত্ব বিহীন ভারতবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সংগ্রামে স্তম্ভিত হয়েছিল এবং উপলদ্ধি করেছিল ভারতবর্ষে তাদের সাম্রাজ্য শাসনের অবসানের আর বেশি দেরি নেই ।

(৭) প্রকৃতপক্ষে ১৯৪২ -এর ভারত ছাড়ো আন্দোলন ছিল ভারতবাসীর স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ পর্যায় । স্বাধীনতা সংগ্রাম যে জয়যুক্ত হবে সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ ছিল না ।

*****

Related Items

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar)

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar):-

বিশ শতকে ব্রিটিশ-বিরোধী বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে ওঠে । সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে বাংলার নারীসমাজ প্রথমদিকে পরোক্ষভাবে অংশ নি

দীপালি সংঘ (Dipali Sangha)

দীপালি সংঘ (Dipali Sangha):-

বিংশ শতকে জাতীয় কংগ্রেসের উদ্যোগে জাতীয় আন্দোলগুলি ভারতবাসীর স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণ করতে ব্যর্থ হলে বাংলায় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বৈপ্লবিক আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে । এই সময় নারীদের সংগঠিত করে বিপ্লবী কার্যকলাপে শামি

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীর অংশগ্রহণ (Nature of Women's Role in the Armed Revolution Struggles):-

বিশ শতকে ব্রিটিশ-বিরোধী বিভিন্ন গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতার ফলে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে ওঠে । সশস্ত্র বিপ্

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন

ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন (Women's Participation in the Quit India Movement):-

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৯ই আগস্ট মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দেয় । এই

আইন অমান্য আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন

আইন অমান্য আন্দোলন পর্বে নারী আন্দোলন (Women's Participation in the Civil Disobedience Movement):-

১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে সারা বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয় । এই অর্থনৈতিক মন্দা ঔপনিবেশিক ভারতের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করে । ভারতের কৃষিজাত পণ্