Submitted by avimanyu pramanik on Thu, 02/11/2021 - 22:04

দীপালি সংঘ (Dipali Sangha):-

বিংশ শতকে জাতীয় কংগ্রেসের উদ্যোগে জাতীয় আন্দোলগুলি ভারতবাসীর স্বাধীনতার স্বপ্নপূরণ করতে ব্যর্থ হলে বাংলায় ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বৈপ্লবিক আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে । এই সময় নারীদের সংগঠিত করে বিপ্লবী কার্যকলাপে শামিল করার ক্ষেত্রে দীপালি সংঘের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ।

কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে বি.এ. এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. পাস করার পর সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ লীলা নাগ (রায়) ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা শহরে 'দীপালি সংঘ' প্রতিষ্ঠা করেন । নারীদের মধ্যে আত্ম সচেতনতা বৃদ্ধি করে ও নারীসমাজকে সংঘবদ্ধ করে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনে শামিল করার উদ্দেশ্যে এই সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয় । পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও যাতে সমানভাবে বৈপ্লবিক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে সে ব্যাপারে এই সংঘ কয়েকটি কর্মসূচি গ্রহণ করে । সংঘের মহিলা সদস্যদের সাহস ও শক্তি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নিয়মিত লাঠি খেলা, শরীরচর্চা ও অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় । শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে দীপালি সংঘের উদ্যোগে ঢাকায় ১২টি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ও 'দীপালি স্কুল', 'নারীশিক্ষা মন্দির', 'শিক্ষাভবন', প্রভৃতি ইংরেজি উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে দীপালি সংঘের সঙ্গে লীলা নাগের স্বামী বিপ্লবী অনিল রায়ের 'শ্রীসংঘ' মিলিত হয়ে 'দীপালি ছাত্রী সংঘ' প্রতিষ্ঠিত হয় । দীপালি ছাত্রী সংঘ ছিল ভারতের প্রথম ছাত্রী সংগঠন । রেনুকা সেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, শকুন্তলা রায়, বীণাপাণি রায়, ঊষারানি রায় প্রমুখ এই সংঘের অন্যতম কয়েকজন সদস্যা ছিলেন । দীপালি সংঘের তরফ থেকে লীলা নাগের সম্পাদনায় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেরণায় ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে জয়শ্রী নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয় । এই পত্রিকা বিপ্লববাদের প্রচারের পাশাপাশি নারীজাতির সার্বিক বিকাশ ও শিক্ষার প্রসারে প্রচার চালায় । পত্রিকাটি উচ্চশিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের রাজনৈতিক চেতনার বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল ।

****

Comments

Related Items

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

প্রশ্ন:-  আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ । কী কারণে শেষ পর্যন্ত আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়ে ছিল ?

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত অভিযান—

’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

প্রশ্ন:-  ’করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে’ -কোন আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল ? এই আন্দোলনে কৃষক ও শ্রমিকরা কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিল ?

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের রণধ্বনি ছিল 'করেঙ্গা ইয়া মরেঙ্গে' ।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের প্রসার আলোচনা কর ।

১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত-ছাড়ো প্রস্তাব’ গৃহীত হলে পরদিন অর্থাৎ ৯ই আগষ্ট, ১৯৪২ এর ভোর থেকেই আন্দোলন শুরু হয়, যেমন—

১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাস্ট্যাস্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

প্রশ্ন:-  ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে কোন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপ্‌স ভারতে এসেছিলেন ?

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

প্রশ্ন:- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান আলোচনা কর ।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাতঙ্গিনী হাজরার অবদান বিশেষভাবে স্মরনীয় ।