মুখ্য ও গৌণ জোয়ার (Primary and Secondary Tide)

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 11/09/2013 - 09:44

মুখ্য জোয়ার (Primary or Direct Tide) : পৃথিবী যেমন তার অক্ষ বা মেরুদণ্ডের ওপর আবর্তন করে তেমনিই চাঁদও পৃথিবীর চারদিকে সর্বদা পরিক্রমণ করছে । পৃথিবীর আবর্তনের ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের যে স্থান ঠিক চন্দ্রের সামনে এসে উপস্থিত হয়, সেখানে চন্দ্রের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হওয়ার জন্য সেখানে প্রবল টান অনুভূত হয় । স্থলভাগের চেয়ে তরল জলভাগের ওপর আকর্ষণশক্তির কার্যকারিতা অনেক বেশি । তাই সেখানকার জলরাশি চন্দ্রের আকর্ষণে স্ফীত হয়ে ওঠে এবং পৃথিবীর অন্যান্য স্থানের জলভাগ থেকেও কিছু জল ওই স্থানে চলে আসে । ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের ওই অংশে জোয়ারের সৃষ্টি হয় । এভাবে চন্দ্রের আকর্ষণে যেখানে যে জোয়ার হয় তাকে মুখ্য জোয়ার বা প্রত্যক্ষ জোয়ার বলে । চাঁদের আকর্ষণে এই জোয়ারের সৃষ্টি হয় বলে, একে চান্দ্র জোয়ার নামেও অভিহিত করা হয় । পূর্ণিমা তিথিতে চন্দ্রের আকর্ষণ স্থলের বিপরীত দিকে সূর্যের আকর্ষণেও এইরকম মুখ্য জোয়ার হয় ।

গৌণ জোয়ার (Secondary or Indirect Tide) : চন্দ্র যেখানে আকর্ষণ করে মুখ্য জোয়ার সৃষ্টি করেছে, ঠিক সেই সময়ে চন্দ্রের বিপরীত দিকে প্রতিপাদ স্থানে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব কম হয় বলে বিপরীত দিকে অবস্থিত জলরাশি প্রধানত পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রবল কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে স্ফীত হয়ে জোয়ার সৃষ্টি করে । তখন তাকে গৌণ জোয়ার বা পরোক্ষ জোয়ার বলে । এছাড়া পৃথিবীর যে অংশে মুখ্য জোয়ার হয় ঠিক তার বিপরীত দিকের স্থলভাগ জলভাগের চেয়ে চন্দ্রের বেশি কাছে থাকে । চাঁদ থেকে ওই স্থানের জলভাগের দূরত্ব বেশি হওয়ায় জলের ওপর চাঁদের আকর্ষণ কমে যায় ফলে পৃথিবীর আবর্তনের দ্বারা সৃষ্ট প্রবল কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে সেখানকার জলও ফুলে উঠে গৌণ জোয়ারের সৃষ্টি করে । সুতরাং একই সময়ে পৃথিবীর দুটি বিপরীত প্রান্তে একই সঙ্গে জোয়ারের সৃষ্টি হয় ।

ভাটা (Low Tide) : মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের স্থানে অধিক জলরাশি চলে যাওয়ায় তাদের মধ্যবর্তী সমকোণে অবস্থিত স্থানে জলরাশি কমে গিয়ে জলতল নেমে যায় । ফলে ওই দুই স্থানে ভাটার সৃষ্টি হয় ।

*****

Related Items

জিউগেন (Zeugen)

জিউগেন (Zeugen) : বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, জুগেন [Zeugen] হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । মরু অঞ্চলে বায়ু অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় ভূমির সমান্তরালে যে শৈলশিরা ও খাতের মতো ভূমিরূপের সৃষ্টি করে তাকে জিউগেন ব

গৌর (Gour)

গৌর (Gour) : বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কাজের ফলে নানা রকমের ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, গৌর হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । মরু অঞ্চলে বায়ুর গতিপথে কোনও কঠিন ও নরম শিলায় গড়া শিলাস্তূপ অবস্থান করলে এবং ওই শিলাস্তুপের নিচে নরম শিলা ও উপরে কঠিন শিলা থাকলে, নিচের কোমল অ

অপসারণ সৃষ্ট গর্ত (Blow-Outs)

অপসারণ সৃষ্ট গর্ত (Blow-Outs) : বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কাজের ফলে যে সমস্ত ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়, অপসারণ সৃষ্ট গর্ত হল তার মধ্যে অন্যতম একটি ভূমিরূপ । প্রবল বায়ুপ্রবাহের ফলে মরু অঞ্চলের কোনো স্থানের বিশাল পরিমাণ বালুকারাশি এক জায়গা থেকে আরেক জা

বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ

বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ (Landforms produced by Wind Abrasion) : বায়ুপ্রবাহ (i) অবনমন (Deflation), (ii) অবঘর্ষ (Abrasion) ও (iii) ঘর্ষণ (Attrition) পদ্ধতির দ্বারা ক্ষয়কার্য (Erosion) সাধন করে থাকে । বায়ুপ্রবাহ আলগা বালুরাশিকে উড়িয়

বায়ুর বিভিন্ন প্রকারের কাজ (Work of Wind)

বায়ুর বিভিন্ন প্রকারের কাজ (Work of Wind) : বায়ু প্রধানত (ক) ক্ষয়সাধন (Erosion), (খ) অপসারণ বা বহন (Transportation) ও (গ) সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ (Deposition) — এই তিন প্রকারে কাজ করে থাকে ।