ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তির পাতসঞ্চালন তত্ত্ব ব্যাখ্যা কর

Submitted by avimanyu pramanik on Sat, 12/25/2021 - 20:51

প্রশ্ন:- ভঙ্গিল পর্বতের (Fold Mountain) উৎপত্তির পাতসঞ্চালন তত্ত্ব ব্যাখ্যা করো ।

উত্তর:  ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তির কারণ সম্পর্কে নানান মতবাদ প্রচলিত আছে, এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বগুলির মধ্যে একটি হল পাতসংস্থান বা পাতসঞ্চালন তত্ত্ব বা প্লেট টেকটনিক থিয়োরি :—

পাতসংস্থান বা পাতসঞ্চালন তত্ত্ব (Plate Tectonic Theory) : বর্তমানে ভূ-বিজ্ঞানীরা পাতসঞ্চালন (Plate tectonic) মতবাদের ভিত্তিতে ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির প্রধান কারণ ব্যাখ্যা করেছেন । পাতসঞ্চালন তত্ত্ব অনুসারে, ভূ-ত্বক [Lithosphere] কয়েকটি গতিশীল পাতের সমন্বয়ে গঠিত, যারা গুরুমন্ডলের নীচের দিকে অতি উত্তপ্ত ও তরল ম্যাগমা স্তরের ওপর ভেসে থাকে। একেকটি পাত কেবল মহাদেশ (বা দেশ) কিংবা মহাসাগর অথবা দুইই মিলিয়ে গঠিত হতে পারে, যেমন–  ইউরেশিয়ান প্লেট, আফ্রিকান প্লেট, ভারতীয় প্লেট, প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্লেট প্রভৃতি । ভয়ংকর উষ্ণতার ফলে ভূগর্ভের ম্যাগমা স্তরে যে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়, তার ফলে এই পাতগুলো গতি শক্তি লাভ করে এবং অতি ধীরগতিতে বছরে প্রায় ১০ মিলিমিটার চলতে থাকে। এইসব গতিশীল পাতগুলোর মধ্যে যে-কোনো দুটি পাত যখন পরস্পরের মুখো মুখি  হয়, তখন ওই দুটি পাতের সংযোগ রেখা বরাবর উপসাগর, সাগর কিংবা মহাসাগরের তলদেশে সঞ্চিত পাললিক শিলাস্তরের দুদিক থেকে প্রবল পার্শ্ববর্তী চাপে শিলাস্তরে ভাঁজ পড়ার ফলে শিলাচ্যুতি ঘটে এবং ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় ।

পাতসঞ্চালন তত্ত্বের ভিত্তিতে, ভূমিকম্পের ফলে ভঙ্গিল পর্বত [Fold Mountain] দু’ভাবে সৃষ্টি হতে পারে, যেমন—

ক) প্রচন্ড ভূমিকম্পের ফলে পৃথিবীর ওপরকার কোনো জায়গা বসে গিয়ে বা উঁচু হয়ে ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরে ছোটো ছোটো ভাঁজের সৃষ্টি হয় । ভূমিকম্প যতই বাড়তে থাকে, ভাঁজগুলো ততই বড়ো ও উঁচু হয়ে পরস্পরের কাছে চলে এসে ভঙ্গিল পর্বতের [Fold Mountain] সৃষ্টি করে । আবার,

খ) প্রচন্ড পার্শ্ব চাপের ফলেও ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরে ভাঁজ সৃষ্টি হয় । চাপ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঁজগুলো বড়ো ও উঁচু হয়ে পরস্পরের কাছে এসে ভঙ্গিল পর্বত [Fold Mountain] সৃষ্টি করতে পারে। ‘ভঙ্গিল’ বা ‘ভাঁজ’ শব্দটি পর্বতের একটি বিশেষ গঠন প্রক্রিয়ার ।

*****

Comments

Related Items

কাবেরী নদী (The Kaveri)

কাবেরী নদী (The Kaveri) : কর্ণাটক রাজ্যের তালাকাভেরি উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে কাবেরী নদী কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর মধ্য দিয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । কাবেরী নদীর দৈর্ঘ্য ৭৬৫ কিমি.

কৃষ্ণা নদী (The Krishna)

কৃষ্ণা নদী (The Krishna) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মহাবালেশ্বরের শৃঙ্গের কিছুটা উত্তরে প্রায় ১৪০০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষ্ণা নদী দক্ষিণ-পূর্বে তেলেঙ্গানা ও অন্ধপ্রদেশ রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিশাল বদ্বীপ সৃষ্টি করে

গোদাবরী নদী (The Godavari)

গোদাবরী নদী (The Godavari) : গোদাবরী নদী 'দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা' নামে পরিচিত । মহারাষ্ট্রের ব্রম্ভগিরি পাহাড়ের ত্র্যম্বক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং পরে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ

মহানদী (The Mahanadi)

মহানদী (The Mahanadi) : ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর জেলার দক্ষিণাংশের সিয়াওয়া মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্য অতিক্রম করার পর বদ্বীপ সৃষ্টি করে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে । মহানদী

তাপী নদী (The Tapti)

তাপী বা তাপ্তি নদী (The Tapti) : মধ্যপ্রদেশের মহাদেব পর্বতের মুলতাই উচ্চভূমির প্রায় ৭৭০ মিটার উচ্চতা থেকে উৎপন্ন হয়ে তাপী নদী মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের ওপর দিয়ে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে সাতপুরা ও অজন্তার মধ্যবর্তী সংকীর্ণ উপত