"বাংলা শুধু হিন্দুর নয়, বাংলা শুধু মুসলমানের নয়, মিলিত হিন্দু-মুসলমানের মাতৃভূমি গুলবাগ এই বাংলা ।" — কাদের উদ্দেশ্য করে একথা বলা হয়েছে ? এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বক্তার কী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে ?

Submitted by avimanyu pramanik on Sun, 08/22/2021 - 13:37

"বাংলা শুধু হিন্দুর নয়, বাংলা শুধু মুসলমানের নয়, মিলিত হিন্দু-মুসলমানের মাতৃভূমি গুলবাগ এই বাংলা ।" — কাদের উদ্দেশ্য করে একথা বলা হয়েছে ?  এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বক্তার কী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে ?

উঃ- নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত 'সিরাজদ্দৌলা' নাটকে নবাব সিরাজদ্দৌলা তাঁর সভায় উপস্থিত রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, মীরজাফর, জগৎশেঠ, উমিচাঁদ প্রমুখ বিশিষ্ট সদস্যবর্গের প্রতি উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন ।

উদ্ধৃত উক্তিটির মধ্য দিয়ে বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলার যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে তা হল তিনি একজন ধর্মনিরপেক্ষ উদার মনের একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক । বিচক্ষণ নবাব বুঝতে পেরেছিলেন যে বাংলা শুধু মুসলমানের নয় বা হিন্দুর নয়, বাংলা হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত শান্তিপূর্ণ অবস্থানেই বাংলার ঐক্যের সূত্রটি গাঁথা । তাই তিনি ঘনিয়ে আসার দুর্দিনকে ঠেকানোর জন্য হিন্দু-মুসলমান উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াসের উপর আস্থা রেখেছিলেন । তিনি সকাতরে এবং বিনয়ের সঙ্গে মাতৃভূমি বাংলাকে বাঁচানোর জন্য তাঁকে সাহায্য করার জন্য প্রার্থনা করেছেন । তিনি বুঝেছিলেন বহিরাগত ইংরেজ শত্রুকে দূর করতে হলে সমস্ত ধর্মীয় সংকীর্ণতার উপরে উঠে বাংলার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে । ধর্মীয় সংকীর্ণতা মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে, বহিরাগত আক্রমণকে ঠেকাতে পারে না । হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত চেষ্টায় এবং লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে বিদেশি শত্রু ইংরেজকে প্রতিহত করা যেতে পারে । নবাব সিরাজদ্দৌলা একথা বুঝেছিলেন বলে তিনি এই রকমভাবে কাতর অনুরোধ জানিয়েছিলেন ।

উপরিউক্ত উক্তির মধ্যে দিয়ে নবাব সিরাজদ্দৌলাকে একজন ধর্মনিরপেক্ষ উদার মনের মানুষ ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে জানা যায় । 

****

Comments

Related Items

বহুরূপী

হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম, শুনেছেন, হরিদা কী কাণ্ড হয়েছে ? উনানের মুখে ফুঁ দিয়ে আর অনেক ধোঁয়া উড়িয়ে নিয়ে হরিদা এইবার আমাদের কথার জবাব দিলেন — না, কিছুই শুনিনি । — জগদীশবাবু যে কী কাণ্ড করেছেন, শোনেননি হরিদা ? হরিদা — না রে ভাই, বড়ো মানুষের কাণ্ডের খবর আমি কেমন করে শুনব ? আমাকে বলবেই বা কে ?

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম

কথায় বলে— কালি কলম মন, লেখে তিন জন । কিন্তু কলম কোথায় ? আমি যেখানে কাজ করি সেটা লেখালেখির আপিস । সবাই এখানে লেখক । কিন্তু আমি ছাড়া আর কারও হাতে কলম নেই । সকলের সামনেই চৌকো আয়নার মতো একটা কাচের স্ক্রিন বা পর্দা । আর তার নীচে টাইপরাইটারদের মতো একটা কি-বোর্ড ।

অভিষেক

কনক-আসন ত্যজি, বীরেন্দ্রকেশরী ইন্দ্রজিৎ, প্রণমিয়া ধাত্রীর চরণে, কহিলা, — "কি হেতু, মাতঃ, গতি তব আজি এ ভবনে ? কহ দাসে লঙ্কার কুশল ।"

আফ্রিকা

উদভ্রান্ত সেই আদিম যুগে স্রষ্ঠা যখন নিজের প্রতি অসন্তোষে নতুন সৃষ্টিকে বারবার করছিলেন বিধ্বস্ত, তাঁর সেই অধৈর্যে ঘন-ঘন মাথা নাড়ার দিনে

আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি

আমাদের ডান পাশে ধ্বস / আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ / আমাদের মাথায় বোমারু /পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ