মানব দেহে কার্বোহাইড্রেটের কাজ ও গুরুত্ব

Submitted by arpita pramanik on Fri, 05/03/2013 - 08:26

মানব দেহে কার্বোহাইড্রেটের কাজ ও গুরুত্ব (Function and importance of Carbohydrate in human body)

 

কার্বোহাইড্রেট (Carbohydrate)

সংজ্ঞা :- কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত যে জৈব যৌগে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন 2:1 অনুপাতে থাকে তাকে কার্বোহাইড্রেট বলে।

 

কার্বোহাইড্রেটের বৈশিষ্ট্য (Feature of Carbohydrate)

১৷ এই খাদ্য কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত।

২৷ এই খাদ্যে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের অনুপাত 2:1 ।

৩৷ এদের একক হল শর্করা [tex]\left[ {{C_n}{{\left( {{H_2}O} \right)}_n}} \right][/tex]

৪৷ এই খাদ্য অ্যামাইলোলাইটিক  উৎসেচক দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়।

 

কার্বোহাইড্রেটের শ্রেণীবিভাগ (Classifition of Carbohydrate)

শর্করা অনুর উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে কার্বোহাইড্রেটকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

শর্করার শ্রেণীবিভাগ

শর্করা অনুর সংখ্যা

উদাহরণ

১৷ মনোস্যাকারাইড

১ টি

গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ ও গ্যালাকটোজ

২৷ ডাই স্যাকারাইড

 

২ টি

ল্যাকটোজ, মলটোজ ও

সুক্রোজ

৩৷ পলিস্যাকারাইড

 

একাধিক

শ্বেতসার, সেলুলোজ ও গ্লাইকোজেন (প্রাণীজ)

 

কার্বোহাইড্রেটের উদ্ভিদজ্য উৎস (Sources of Carbohydrate)

১৷ চাল, গম, ভুট্টা, আলু, ওল, কচু ইত্যাদি থেকে শ্বেতসার পাওয়া যায়।

২৷ খেঁজুর, আঙুর, আপেল ইত্যাদি থেকে গ্লুকোজ পাওয়া যায়।

৩৷ পাকা আম, কলা, কমলালেবু ইত্যাদি থেকে ফ্রুকটোজ পাওয়া যায়।

৪৷ মিছরি, চিনি,গুড় ইত্যাদি থেকে সুক্রোজ পাওয়া যায়।

৫৷ শাকসবজি, বেল, তরমুজ, থোড় ইত্যাদি থেকে সেলুলোজ।

 

কার্বোহাইড্রেটের প্রাণীজ উৎস (Sources of Carbohydrate)

১৷ দুধে দুগ্ধ শর্করা বা ল্যাকটোজ পাওয়া যায়।

২৷ পাঁঠার যকৃৎ ও পেশীতে থাকে গ্লাইকোজেন।

 

শর্করা খাদ্যের গুরুত্ব  (Importance of Carbohydrate)

১৷ শক্তি উৎপাদনে - কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ হল শক্তি উৎপাদন করা। 1 গ্রাম কার্বোহাইড্রেটের সম্পূর্ণ দহনে 4.0 cal তাপশক্তি উৎপন্ন হয়।

২৷ কোষ্টবদ্ধতা দূরীকরণে - শাকসবজিতে সঞ্চিত সেলুলোজ জাতীয় খাদ্য কোষ্টবদ্ধতা দূর করে।

৩৷ রক্ত শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে - প্রাণীদেহের যকৃৎ ও পেশীতে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন প্রয়োজনে গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।

৪৷ বিশেষ গুরুত্ব - শর্করা খাদ্য প্রোটিন ও ফ্যাট সংশ্লেষে অংশ গ্রহন করে। এই জাতীয় খাদ্য প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারে। সেই কারণে শর্করা খাদ্য কে “ প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য “ বলে।

তাপন মূল্য (Calorific value)  কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যবস্তুর সম্পূর্ণ জারণ হলে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, তাকে ঔ খাদ্যের তাপন মূল্য(Calorific value) বলে ।

*****

Related Items

অধ্যায় ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর : সালোকসংশ্লেষ

সালোকসংশ্লেষ বিষয়ের অধ্যায় ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হলো । আরও নতুন প্রশ্ন সংযোজিত হতে থাকবে । বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষা ও কম্পেটেটিভে এক্সাম এ এসেছে এমন প্রশ্ন গুলি তুলে ধরা হল ...

পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র ও সংরক্ষণ

কোনো জীবের পারিপার্শ্বিক ভৌত ও রাসায়নিক অবস্থা এবং সজীব উপাদানকে সামগ্রিক ভাবে পরিবেশ বলে। বায়ুর উপাদান, জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র, পরিবেশে মৌল উপাদানের ঘাটতি ঘটে, জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্রের প্রকারভেদ, অক্সিজেন চক্রের তাৎপর্য, নাইট্রোজেনের তাৎপর্য

চলন ও গমন

বাহ্যিক উদ্দীপকের উপস্থিতিতে বা অনুপুস্থিতিতে জৈবিক প্রয়োজনের অভ্যন্তরীণ তাগিদে কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় স্থির থেকে জীবের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সঞ্চালনকে চলন বলে। বাহ্যিক উদ্দীপকের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে জৈবিক প্রয়োজনের অভ্যন্তরীণ তাগিদে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের ...

পুষ্টি, বিপাক ও পরিপাক

বিষয়ের আলোচনা - পুষ্টি, উদ্ভিদ ও প্রাণীর পুষ্টির পর্যায়ক্রম, উদ্ভিদ পুষ্টির পর্যায়, প্রাণীর পুষ্টির পর্যায়, পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা, খাদ্যের পরিপাক পদ্ধতি,পাঁচটি অধাতব মৌল উপাদানের নাম ও তাদের উৎস -কার্বন (C), হাইড্রোজেন(H), অক্সিজেন(O), সালফার(S), ফসফরাস(P) ...

সালোকসংশ্লেষ ও শ্বসন

যে শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিলযুক্ত কোষে আলোর উপস্থিতিতে পরিবেশ থেকে শোষিত জল ও গৃহিত কার্বন ডাই-অক্সাইডের আলোক রাসায়নিক ও জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সরল শর্করা (গ্লুকোজ) সংশ্লেষিত হয় ও উৎপন্ন খাদ্যে সৌরশক্তি স্থিতিশক্তি রূপে আবদ্ধ হয় ...